'তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের প্রথম পর্ব।
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই গল্পের প্রথম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের প্রথম পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
রাজু একটি বখাটে ছেলে ছিল। যে সব সময় বাজে ছেলেদের সঙ্গে আড্ডায় মজে থাকতো। রাজু নামের এই ছেলেটি একটি সময় খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। রাজুর পরিবারের রাজুর মা বাবা এবং একটি ছোট বোন আছে। রাজু তার ছোট বোনকে খুবই ভালবাসত। রাজু বাইরে কোথাও গেলে তার বোনের জন্য খাবার নিয়ে আসতো। রাজুর বাবা বড় একটি কোম্পানির মালিক ছিলেন। কোম্পানির বিভিন্ন কাজের জন্য রাজুর বাবার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হত। তার বাবা পরিবারকে তেমন একটি সময় দিতে পারত না। আজ রাজু সব সময় চাইত তার বাবা তাদেরকে একটু সময় যেন দেয়। কিন্তু তার বাবা সে সময়টা দিতে পারতো না সেই অভাবটা রাজুকে অমানুষের পরিণত করে। একদিন রাজু তার এক বন্ধুর জন্মদিনে তাদের বাড়িতে যায়। তোর বন্ধুও ছিল একজন প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান। সেখানে রাজুর আরো অনেক বন্ধু উপস্থিত থাকে। জন্মদিনের কেক কাটা হয়ে যাওয়ার পর তার বন্ধুরা মদ খেতে শুরু করে। রাজু মদ সিগারেট এসব কোন কিছু খেত না। রাজুর এক বন্ধ রাজুকে বলে মদ খাওয়ার কথা। কিন্তু রাজু তার বন্ধুকে জানায় সে এসব পছন্দ করে না। কিন্তু তার বন্ধুরা তাকে বলে একটু খেলে কিছুই হবে না তোর ভালই লাগবে একবার খেয়ে দেখ। রাজু বলে আমার পরিবার এটি পছন্দ করে না আমি এটি খেলে মা জানতে পারলে খুবই রাগ করবে তোরা খা।
তখন রাজুর বন্ধুরা সবাই রাজুকে চেপে ধরে। রাজু কোন উপায় না পেয়ে এক চুমুক মদ খায়। এক চুমক মদ খাওয়ার পর তার মাথা ঘুরতে থাকে তার কিছুই ভালো লাগে না। তখন রাজু তার বন্ধুকে বলে আমি বাড়িতে যাব। তখন তার বন্ধু বলে আজ আমরা কেউ বাড়িতে যাব না আমরা সবাই আনন্দ করবো।আমি আন্টিকে ফোন করে জানিয়ে দিচ্ছি তুই আজ এখানেই থাকছিস। রাজু বলে আমার ভালো লাগছে না বমি পাচ্ছে। তখন রাজুর বন্ধু বলে এটা কোন বিষয় না প্রথম প্রথম এটা হয়ে থাকে তুই আরেকটু খেলে দেখবি তোর খুবই ভালো লাগবে। তখন রাজু বলে, এক চুমু খেয়ে আমার এই অবস্থা আর একটু খেলে তো মারাই যাব। তখন এক সুন্দরী মেয়ে রাজুর কাছে এসে রাজুর হাতে হাত রেখে রাজুকে বলে, আমি তোমাকে বলছি আর একটু খাও তোমার কিছুই হবে না। আর যদি কিছু হয় আমার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়বে। আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিব। রাজু সেই সুন্দরীর মোহ মায়ায় আবদ্ধ হয়ে পড়ে। সেই মেয়ে নিজের হাতে রাজুকে মদ খাইয়ে দেয়। রাজু অনেকটা মদ খাওয়ার পর কিছুটা সময় চুপ থাকে। অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর রাজু সেই মেয়েটিকে বলে, আমার খুব নাচতে ইচ্ছা করছে তুমি কি আমার সাথে একটু নাচ করবে। মেয়েটি হেসে দিয়ে বলে অফকোর্স।
সেদিনের পর থেকে রাজু আস্তে আস্তে অন্ধকার জগতে ঢুকে পড়ে। সে প্রতিনিয়ত নেশা করত নেশা করতে করতে তার চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়। পরিবারের সবাই তার এই নেশার জগত থেকে অনেক বার ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু যতবার ফিরে আনার চেষ্টা করে ততবারই তারা ব্যর্থ হয়। যত রকমের খারাপ কাজ আছে সব ধরনের খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে রাজু। রাজু নিজের গাড়িতে করে একদিন বাইরে যায়। গাড়ি চালাতে চালাতে তার হাত-পা কাঁপতে শুরু করে। সে বুঝতে পারে তার এখন শরীরে ড্রাগস প্রয়োগ করতে হবে। তাই সে গাড়িটি রাস্তার একটি পাশে পার্কিং করে শরীরে ড্রাগস প্রয়োগ করে। তখনই আচমকা একটি মেয়ে গাড়ির দরজায় থাবা দিতে শুরু করে। মেয়েটির জোরে জোরে চিৎকার করে রাজুকে গাড়ির দরজাটি খুলতে বলে। কিন্তু রাজু গাড়ির দরজাটি খোলে না। মেয়েটি রাজুকে বলে আমাকে ছিনতাইকারীর হাত থেকে রক্ষা করুন প্লিজ দরজাটি খুলুন। তবুও রাজু গাড়ির দরজাটি খোলে না। রাজু দেখতে পায় অনেকগুলো লোক এসে মেয়েটির ব্যাগ নিয়ে বাইকে করে চলে যায়। রাজুর সব কিছুই দেখতে পায় কিন্তু সে কিছুই করতে পারে না। এর কারণ হলো রাজুর শরীর নেশাতে জড় পদার্থে পরিণত হয়েছিল। মেয়েটি বাইরে চিৎকার করছিল সেটি রাজু দেখতে দেখতে গাড়ির ভিতর ঘুমিয়ে পড়ে।
আসলে মা বাবা যদি সন্তানের খোঁজ খবর না রাখে এবং সন্তানকে সময় না দেয়, তাহলে অনেক সময় সন্তান বাজে বন্ধু বান্ধবদের সাথে মিশে,খারাপ হয়ে যায়। রাজু’র অবস্থাও সেটাই হয়েছে। রাজুকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোটা খুবই মুশকিল হয়ে যাবে। তবে আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে,যে মেয়েকে ছিনতাইকারী ধরেছে,সেই মেয়ের সাথে রাজু’র প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে এবং সেই মেয়ে একদিন রাজুকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
0.00 SBD,
8.19 STEEM,
8.19 SP
👍
Your comment made us smile
Thanks for spreading light & engagement.
We wish you a colourful and lovely day
🍀♥️
Thank you so much for supporting me like this.
আপনার গল্পটা পড়ে রাজুর জন্য অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ভাইয়া কিছু বাজে মানুষের সাথে মিশলে যা হয় আরকি।রাজুর এখন নেশায় পরিণত হয়েছে তাই সে তখন মানুষ রূপে ছিল না। আর কোন মানুষ সামনে এমন দেখলে না এগিয়ে পারে না।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর লিখেছেন।
আসলে প্রতিটা বাবা মায়ের উচিত নিজের সন্তানকে যথাযথ সময় দেওয়া। রাজুর বাবা তাকে ভালোভাবে সময় দিত না। আর আস্তে আস্তে সে এতটা খারাপ হয়ে গিয়েছে এখন। তার বন্ধুরা এরকম করা উচিত হয়নি তার সাথে। জোর করে তাকে এসব কিছুতে আসক্ত করা উচিত হয়নি। এখন দেখছি মেয়েটার ব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার পরেও সে গাড়ি থেকে বের হয়নি। আর গাড়িতে ঘুমিয়ে গিয়েছে। দেখা যাক কি হয় পরবর্তীতে।
প্রতিদিনের মতো আজকেও খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। আপনার গল্প পড়তে খুব ভালো লাগে। প্রতিটা বাবা মায়ের উচিত হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও সন্তান কে সময় দেওয়া। সন্তানের ভালো মন্দ খেয়াল রাখা। টাকা পয়সা থাকলেই সন্তানদের মানুষ করা যায় না। ভালো সন্তান গড়ে তুলতে হলে সবকিছুর প্রয়োজন। তাইতো আজ রাজু এমন খারাপ পথে চলে গিয়েছে। পরবর্তীতে রাজুর জীবন কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় জানার অপেক্ষায় রইলাম।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
আসলে আমাদের সমাজের বেশিরভাগ ভালো ভালো ছেলেমেয়েরা এসব কারণেই খারাপ হয়ে যায়। এক হচ্ছে বাবা-মায়ের সময় না দেওয়ার কারণে, আরেকটা হচ্ছে খারাপ বন্ধুদের সাথে মেশার কারণে। রাজুও ঠিক তেমনভাবে খারাপ হয়ে গিয়েছে। আর এখন এসব কিছু তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হবে।