তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের একাদশ পর্ব।
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের একাদশ পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের একাদশ পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
মেঘা পরের দিন সৃষ্টিদের বাড়িতে যায়। মেঘা সোজা চলে যায় সৃষ্টির রুমে। সৃষ্টির রুমে প্রবেশ করতেই সৃষ্টি বলে ওঠে মা তোমাকে অনেকবার বললাম আমার খেতে ইচ্ছা করছে না তবুও কেন আবার এসেছো। মেঘা বলে, আমি মেঘা আন্টি নয়। সৃষ্টি বলে, মেঘা তুই আমি তো দেখতে পাই না তাই ভাবলাম মা এসেছে। মেঘা বলে, আমি কি শুনছি সৃষ্টি তুই নাকি সময় মতন খাওয়া দাওয়া করছিস না। তুই সময় মত খাওয়া-দাওয়া না করলে তুই তো অসুস্থ হয়ে পড়বি। সৃষ্টি মৃদু হেসে বলে, আমার আর ভালো থাকা আমার তো এখন বেঁচে থাকা আর না থাকা দুটোই এক। আমি এখন জড় পদার্থের পরিণত হয়েছি। কবে যে এ জীবন থেকে মুক্তি পাবো জানিনা। মেঘা বলে, একদম বাজে কথা বলবি না আমরা আছি তোর পাশে। তোর মত এই পৃথিবীতে আরো অনেকেই রয়েছে। তারা কখনো নিজেকে বোঝা মনে করে না। তারা নতুন করে জীবনটাকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়েছে। সৃষ্টি বলে, মেঘা ঈশ্বর আমার সাথে কেন এমনটি করল। আমি মা বাবার একমাত্র সন্তান। সারাটা জীবন তারা আমার পিছনে কষ্ট করে গিয়েছে। ভেবেছিলাম চাকরি করে মা বাবার পাশে দাঁড়াবো। কিন্তু সে আশা আমার পূরণ হলো না। মেঘা বলে,তুই একদম চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। সৃষ্টি বলে, মিথ্যা আশ্বাস আমাকে দিস না কোন কিছুই ঠিক হবে না।
মেঘা বলে, দেখ যেটা হয়েছে সেটা তোর ভাগ্যে লেখা ছিল। কিন্তু এটা নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না। তোর এখন অনেক দায়িত্ব। তোকে এখন আবার নতন করে শুরু করতে হবে।তোর সবাইকে দেখিয়ে দিতে হবে যারা অন্ধ তারা এই সমাজের জঞ্জাল নয়। সৃষ্টি বলে, বলাটা অনেক সহজ করাটা খুব কঠিন। যে অন্ধ সে ব্যক্তি তাই বুঝতে পারে তার জীবনটা কত কঠিন। সবাই তাকে করুনা করবে তার পাশে এসে দাঁড়াবে না। মেঘা বলে, কে কি বলে কে কি করে সেটা আমি জানি না কিন্তু আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে এমন ভাবে হেরে যেতে দিতে পারি না। তোর পাশে কেহ থাকুক বা না থাকুক আমি তোর পাশে সারাটা জীবন থাকবো। তোকে আমি একটা কথা বলি নিজের মনোবল ধরে রাখ তাকে নষ্ট হতে দিস না। সৃষ্টি আমি তোকে বলছি তুই পারবি তোকে যে পারতেই হবে। সৃষ্টি মেঘার কথা শুনে হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে। সৃষ্টি বলে, অনেক ভাগ্য করে তোর মতন একটা বন্ধু পেয়েছি। আমি তোকে কথা দিচ্ছি আমার যতই কষ্ট হোক আমি নিজেকে নতন করে গড়ে তুলবো। আমি তোর দ্বারা এই পৃথিবীকে নতুন করে দেখব। মেঘা বলে, তাহলে লক্ষী মেয়ের মতন খাবারগুলো খেয়ে নে। তোর খাওয়া শেষ হলে নিজের হাতে তোকে সাজিয়ে আজ থেকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাব। সৃষ্টি বলে, আমি বাইরে যাব অনেকদিন হয়েছে আমি কোথাও যাইনি।
একটা গভীর বন্ধুত্বের গল্প যা সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যায়।সৃষ্টির হতাশা, কষ্ট, আর জীবন নিয়ে দোটানার মাঝেও মেঘার অসীম ভালোবাসা ও সাহস তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখাচ্ছে। সত্যিকারের বন্ধুত্ব এমনই হওয়া উচিত ,যেখানে একজন আরেকজনকে আশার আলো দেখায়, কঠিন সময়েও পাশে দাঁড়ায়। মেঘার সাহসী কথাগুলো শুধু সৃষ্টির জন্য নয়, আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা। জীবনের যেকোনো প্রতিকূলতাকে জয় করার শক্তি আমাদের মধ্যেই আছে, শুধু দরকার একটা বিশ্বাসী হাত ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। চমৎকার একটি পর্ব, আগামীর গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।
এই গল্পের একাদশ তম পর্ব টা অনেক সুন্দর ছিল। অবশেষে সৃষ্টি রাজি হয়েছে নিজের জীবনকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে। মেঘা যেহেতু সৃষ্টির পাশে রয়েছে, সৃষ্টি অবশ্যই পারবে নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলবে। আর এখন সে ভালোভাবে খাওয়া দাওয়া করার জন্য রাজি হয়েছে দেখে ভালো লাগলো। আশা করি তাকে বাহিরে নিয়ে গেলেও তার কাছে অনেক ভালো লাগবে। আর মেঘের ভাই ও তার সাথে দেখা করতে পারবে।