'সাজানো সংসার গল্পের দ্বাদশ পর্ব'

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে সাজানো সংসার গল্পের দ্বাদশ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের দ্বাদশ পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-fauxels-3184183 (2).jpg

সোর্স


প্রদীপ কাগজগুলো ব্যাগের ভিতর রেখে দেয়। প্রদীপের ফোনে আবারো ফোন আসে সে ফোনটি রিসিভ করে বলে, আমি রাস্তায় জ্যামে আটকে আছি খুব শীঘ্রই বাড়িতে পৌঁছে যাব। এখানে আমি আপনাদের একটা কথা বলি, প্রদীপকে যে ফোন করেছিল। যার ফোনের কারণে গ্রামের বাড়ি থেকে দ্রুত বেরিয়ে পড়ল সে আর কেউ নয় ফোনটি করেছিল প্রদীপের স্ত্রী মোনালি। মোনালি হল প্রদীপের ক্লাসমেট। প্রদীপ যখন কলেজে পড়াশোনা করত তখন তাদের পরিচয় আর পরবর্তীতে তাদের ভিতর ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। মোনালি ছিল শহরের নামকরা ব্যবসায়ীর মেয়ে। মোনালি প্রদীপ কে তার বাবার কোম্পানিতে চাকরি পাইয়ে দেয়। এখানে আপনাদের প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে প্রদীপ কেন বাড়িতে এতগুলো টাকার কথা বলেছিল। কারণ প্রদীপ মোনালিকে দেড় লাখ টাকার একটি সোনার নেকলেস উপহার দিয়েছিল। আর বাদবাকি যে টাকা ছিল সেই টাকা দিয়ে প্রদীপ পার্টি করেছিল। কিন্তু এসব ঘটনা তার বাড়ির মানুষ কেহ জানে না। এমনকি মোনালি ও এ ব্যাপারে কিছুই জানে না। কারণ প্রদীপ মোনালিকে তার জীবনের সত্যি ঘটনা গুলো কিছুই বলেনি। মোনালির ও প্রদীপের ভালোবাসার কথা মোনালির বাবাকে জানায়। যেহেতু একমাত্র মেয়ে ছিল মোনালি তার জন্য তার বাবা তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু এখানে তার বাবা সত্য দেয় যদি প্রদীপ ঘর জামাই থাকতে পারে তাহলে তোমাদের বিবাহ দিতে আমি রাজি। তখন মোনালি প্রদীপ কে সবকিছু বলে, প্রদীপ প্রথমে একটু না না করেছিল কিন্তু পরবর্তীতে সে ঘর জামাই থাকতে রাজি হয়। পরবর্তীতে প্রদীপ ও মোনালির বিবাহ সম্পন্ন হয়। আর বিবাহের পর প্রদীপ কোম্পানির এমডি হয়ে যায়। এসব ঘটনা প্রদীপের পরিবার কিছুই জানেনা। তার পরিবার জানে সে শহরে থেকে চাকরি করছে।


যাইহোক, বাড়িতে এসে প্রদীপ কলিং বেল দেয় দরজা খুলে দেয় মোনালি। দরজা খুলতেই মোনালি বলে, কোথায় গিয়েছিলে? প্রদীপ বলে, কোথাও না তো আমি তো অফিস থেকেই আসছি। তুমি মিথ্যা কথা বল না আমাকে কারণ আমি তোমাকে ফোন করেছি অনেকবার কিন্তু তোমার ফোন বন্ধ ছিল। তারপর আমি অফিসে ফোন করেছিলাম কিন্তু তারা আমাকে জানায় তুমি আজ অফিস থেকে দ্রুত বেরিয়ে গেছো। এখন আমাকে মিথ্যা কথা না বলে সত্যিটা বল কোথায় গিয়েছিলে ফোন কেন বন্ধ ছিল? প্রদীপ বলে, তুমি কি আমাকে সন্দেহ কর? মোনালি বলে, আমি তোমাকে সন্দেহ করছি না কিন্তু জানার চেষ্টা করছি তুমি কোথায় গিয়েছিলে। প্রদীপ বলে, আমার একটু কাজ ছিল জরুরী তার জন্য ফোন বন্ধ করে রেখেছিলাম। তুমি আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারো আমি কোন খারাপ কাজ করতে যায়নি। মোনালি বলে, তোমার উপর আমার আঘাত বিশ্বাস রয়েছে। আচ্ছা ঠিক আছে ফ্রেশ হয়ে খেতে এসো সারা দিন তো কিছুই খাওনি মনে হচ্ছে মুখটা শুকিয়ে গেছে। প্রদীপ তখন বলে, আবার ক্ষুদা নাই তুমি খেয়ে নাও। মোনালি বলে, কি বললে তুমি আর একটা বার বল শুনতে পাইনি? প্রদীপ বলে, তুমি খাবার তৈরি করতে লাগো আমি ফ্রেশ হয়ে খেতে আসছি। প্রদীপ মোনালির উপর কোন কথা বলেনা কারণ প্রদীপ জানে তার সঙ্গে রাগারাগি করলে হিতে বিপরীত হতে।


প্রদীপ রুমে যে ব্যাগ থেকে কাগজ গুলো বের করে জামা কাপড়ের ভাজে রেখে দেয়। কারণ তার স্ত্রী যদি এই কাগজগুলো হাতে পেয়ে যায় তাহলে তার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। এরপর প্রদীপ ফ্রেশ হয়ে খেতে যায়। খেতে বসে তার চোখ চরক গাছে ওঠে যায় কারণ অনেক প্রকারের খাবার সাজানো ছিল টেবিলের উপর। এত খাবার দেখে প্রদীপ তার স্ত্রী মোনালিকে বলে,আমি এত খাবার খেতে পারবো না। তখন মোনালি বলে, আমি জানি তুমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছো তাই তোমার সামনে এত খাবার হাজির করেছি। আর এই সবগুলো খাবার তোমার এখন খেতে হবে আজ তুমি বুঝবে আমাকে রেখে বাইরে খেয়ে আসার পরিনাম কতটা ভয়ংকর হয়। প্রদীপ হাত জোড় করে মোনালিকে বলে, এত খাবার খেলে সত্যি আমি মরে যাব। আমাকে এবারের মত ক্ষমা করে দাও আর এমন ভুল কখনো হবে না। মোনালি বলে, এবারের মত ক্ষমা আমি তোমাকে করছি কিন্তু শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে। তোমার শাস্তি হবে আজ তুমি রুমে ঘুমাতে পারবে না বাইরে থাকতে হবে এটাই হবে তোমার শাস্তি। প্রদীপ বলে, আমি তোমার স্বামী তোমার স্বামীকে তুমি বাইরে থাকতে বলছো। মোনালি রাগান্বিত কন্ঠে বলে, তোকে যা বলছি তুই ঠিক তাই করবি আর আমার থেকে বেশি বুঝলে বাড়ি থেকে বের করে দেব। প্রদীপ হেসে দিয়ে বলে, রাগ করো না সোনা রাগ করোনা আমি তো মজা করে বলেছি। তুমি আমাকে কিছু বললে সে কথা না শুনে কি আমি থাকতে পারি। তুমি যাও ঘুমিয়ে পড়ো আমি এখানে ঘুমিয়ে পড়বো একটা মাত্র রাত দেখতে দেখতে সময় কেটে যাবে।

আজ গল্পের পর্বটি কিন্তু শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।