তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের দ্বাদশ পর্ব।
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের দ্বাদশ পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের দ্বাদশ পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
সৃষ্টির খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে। মেঘা সৃষ্টিকে একটি লাল শাড়ি পরিয়ে বাইরে নিয়ে যায়। সৃষ্টি পছন্দের একটি জায়গায় নিয়ে যায় মেঘা। আর সেই জায়গাটিতে আগে থেকে উপস্থিত ছিল রাজু। রাজু এখানে আছে মেঘা সৃষ্টিকে কিছুই জানায় না। মেঘা সৃষ্টিকে বসতে বলে খাবার আনতে যায়। মেঘা একটু দূরে গেলে রাজু সৃষ্টির কাছে এসে বলে,লাল শাড়িতে তোমাকে খুব ভালো লাগছে। অচেনা মানুষের কন্ঠ শুনে সৃষ্টি ঘাবড়ে যায়। সৃষ্টি বলে, কে কে আপনি? রাজু তখন সৃষ্টিকে বলে, আমি তোমার কাছের একটি মানুষ। সৃষ্টি আরো ঘাবড়ে যে বলে, দেখুন আপনার কোন ভুল হচ্ছে আমি আপনাকে চিনি না। রাজু বলে, তুমি যদি আজ চোখে দেখতে পারতে তাহলে ঠিক আমাকে চিনতে পারতে। সৃষ্টি অবাক হয়ে যায় সে ভাবতে থাকে আমি যে চোখে দেখতে পারিনা উনি জানতে পারলো কি করে তাহলে উনি কি আমার পরিচিত। সৃষ্টি বলে, আমি যে চোখে দেখতে পারি না সেটা আপনি কিভাবে বুঝতে পারলেন? আমার কাছের মানুষ ছাড়া আমার এই ঘটনা কেউ জানে না আপনি কে বলুন তো? রাজু তখন হাসতে হাসতে বলে, আমি তোমার খুব পরিচিত যাকে তুমি খুব ভালবাসো। সৃষ্টি তখন কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে, আমি কাউকে ভালোবাসি না। রাজু তখন বলে, তোমার বুকে তুমি হাত দিয়ে বলতো তুমি কাউকে ভালবাসো না।
সৃষ্টি তখন চিৎকার করে মেঘাকে ডাকতে থাকে। ডাক শুনে মেঘা ছুটে চলে আসে সৃষ্টির কাছে। মেঘা এসে সৃষ্টিকে বলে,কি হয়েছে আমাকে ডাকছিস কেন? সৃষ্টি তখন মেঘাকে বলে, আমার সামনে একটি মানুষ দাঁড়িয়ে আছে তুই কি তাকে দেখতে পাচ্ছিস? মেঘা বলে, হ্যাঁ আমি তাকে দেখতে পাচ্ছি। সৃষ্টি বলে, এই মানুষটা অদ্ভুত কথা বলছে।এই মানুষটি তার পরিচয় দিচ্ছে না আমি কি উনাকে চিনি? মেঘা বলে, তুই এই মানুষটাকে চিনতে পারছিস না যাকে তুই তোর থেকে বেশি ভালোবাসিস। সৃষ্টি বলে, তুইও মেঘা উনার মতন অদ্ভুত কথা বলছিস আমি তো কাউকে ভালোবাসি না। মেঘা বলে, কেমন মানুষ তুই ভালোবাসার মানুষটি তোর সামনে দাঁড়িয়ে আছে তুই তাকে চিনতে পারছিস না। সৃষ্টি মেঘা কে বলে, আমি বাড়িতে যাব। এই বলে সৃষ্টি সেখান থেকে উঠে হাঁটতে শুরু করে তখন হঠাৎ একটি গর্তে পা পড়ে সৃষ্টি পড়ে যেতে লাগে তখন রাজু তার হাতটি ধরে বসে। সৃষ্টি রাজুর হাতটি সরিয়ে দিয়ে বলে, আমি চোখে দেখতে পারি না তাই বলে আমাকে কেউ করুণা করবে সেটা আমি সহ্য করব না। আমি বুঝতে পেরেছি তুমি এবং মেঘা প্লান করে আমাকে নিয়ে এসেছ। কি ভাবছো আমি তোমাকে চিনতে পারব না। তুমি যখন প্রথম আমার কাছে এসে কথা বলেছ আমি তখনই বুঝেছি তুমি রাজু। আজ আমি অন্ধ বলে তোমরা আমাকে করুণা করতে এসেছ। আমি মরে যেতে রাজি কিন্তু কারো করুণা পেতে রাজি না।
রাজু তখন সৃষ্টিকে বলে, তুমি আমাকে ভুল বুঝছো। আমি তোমাকে করুণা করছি না। আমি তোমাকে ভালবাসি তাই তোমার পাশে দাঁড়াতে চাই। সৃষ্টি বলে, কোথায় ছিল এই ভালোবাসা হাজারবার যখন তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছো। আজ যখন আমি অন্ধ আজ তুমি আমাকে ভালবাসতে এসেছো। এটা ভালোবাসা নয় রাজু তুমি আমাকে করুণা করছ। রাজু বলে, না সৃষ্টি না তুমি বিশ্বাস কর তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি নিজেকে পরিবর্তন করেছি। ভালো একটি ছেলে হয়ে তোমার কাছে আসতে চেয়েছি। কিন্তু এমনটি হবে আমি কোনদিন কল্পনাও করতে পারিনি। সৃষ্টি আমি তোমাকে আগেও ভালবাসতাম এখনো ভালবাসি পাগলের মত। প্লিজ তুমি আমাকে তোমার পাশে আসতে দাও? সৃষ্টি বলে, রাজু তুমি যাকে ভালবাসতে সে মানুষটা আমি না। রাজু সৃষ্টিকে বলে, তুমিই সেই আমার ভালোবাসার মানুষ। সৃষ্টি বলে, রাজু, আমি তোমাকে একটা কথা বলি। আজ যাকে তুমি ভালবেসে কাছে পেতে চাচ্ছো সেই মানুষটির পৃথিবীটা আজ অন্ধকার। অন্যের সাহায্যে তার চলতে হয়। তুমি তোমার জীবনটাকে এভাবে নষ্ট করো না। রাজু বলে, সৃষ্টি আমি তোমাকে একটা কথা বলি, আজ যেটি তোমার সঙ্গে হয়েছে সেটি যদি আমার সঙ্গে হতো তাহলে তুমি কি আমাকে ভালবাসতে না। তখন কি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যেতে। সৃষ্টি তখন হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে। রাজু তখন সৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরে বলে, আমি জানি তুমি পারতে না। তাহলে আজ কেন আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছ। সৃষ্টি বলে, আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও কতই না তোমাকে অপমান করেছি। রাজু বলে, তুমি কেন ক্ষমা চাচ্ছ ক্ষমা তো আমার চাওয়া উচিত। আমার জন্য আজ তোমার এই অবস্থা। সৃষ্টি বলে, তোমার দোষ না এটা আমার কপালে ছিল তাই হয়েছে। কিন্তু তাতে কি হয়েছে আমি তোমার চোখ দিয়ে এই পৃথিবীটা দেখব। রাজু বলে,আজ আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি তোমাকে ছেড়ে আমি আর কখনো দূরে যাব।