শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণ পর্ব: ৭
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণের সপ্তম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
অনেকটা সময় ধরে বাউল গান শোনার পর পার্কের সামনের অংশটিতে প্রবেশ করলাম। সেখানে বেশ কিছু শিল্পকলা রয়েছে বেশিরভাগ এখানে পাথরের উপর খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের মূর্তি। এখানেও কিন্তু একজন বাউল শিল্পী কে দেখতে পেলাম যিনি বাউল গান পরিবেশন করছেন। আমি ওনার কাছে যে ওনার সঙ্গ নিলাম। ওনার সঙ্গে গান আর বাদ্যযন্ত্র বাজালাম। গান-বাজনা করতে খুবই ভালো লাগছিল কিন্তু আবার আমাদের সময়ও হয়ে যাচ্ছে এরপর আরও একটি জায়গায় আমাদের যাওয়ার প্লান রয়েছে। তাই ওনাকে বিদায় জানিয়ে আবারো পার্কের ভেতরে ঘুরতে লাগলাম। আমি যখন গান করছিলাম তখন দাদা পার্কে ভিতরে আলাদাভাবে ঘুরছিল এরপর আমি আমার মত করে ঘুরছিলাম। পরবর্তীতে আমরা দুজনেই একত্রিত হই এরপর আমরা একসঙ্গেই পার্কের ভিতর ঘুরছিলাম। বিভিন্ন ধরনের শিল্প কাজ দেখতে পারছিলাম।
বিভিন্ন ধরনের মূর্তি তৈরি করা ছিল যেগুলো সব পাথরের ছিল। পার্কটিতে বিভিন্ন ধরনের ফুল গাছ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। আর শীতের সময় ফুল গাছের প্রত্যেকটি গাছ থেকে ফুল ফুটেছে। যার জন্য পরিবেশটা আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে। আর আগেই বলেছি এই পার্কটি গ্রামের পরিবেশ টাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এখানে কিন্তু বেশিরভাগ সাঁওতালিদের জীবনী বেশি তুলে ধরা হয়েছে। তারা কি করত কোন উৎসবগুলো তারা পালন করতো তারা কি খেতো কি পোশাক পরিধান করত। এইসব বিষয়গুলো এখানে কিন্তু ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পার্কটির একটি অংশে দেখানো হয়েছে সাঁওতালিদের যুদ্ধের কিছু অংশ। সাঁওতালিরা একটি সময় যুদ্ধ করেছিল তার কিছু নকশা এখানে তুলে ধরা হয়েছে। সাঁওতালিদের এই যুদ্ধের চিত্রগুলো দেখতে গেলে একটি আলাদা দ্বীপে যেতে হবে। যার চারিপাশে শাপলা ফুল রয়েছে।আর বেশিরভাগ শাপলা ফুলগুলো ফুটেছে যার জন্য এই জায়গাটি আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে।
পার্কের ভেতরে দেখতে পেলাম বড় একটি জায়গা জুড়ে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসেছে। আমরা এটি দেখে আমরা সেই স্থানে গেলাম দেখতে পেলাম এখানে হাট বসেছে। আমরা একটু অবাক হয়ে গেলাম কারণ পার্কের ভিতর এমন হাট বসবে এটা কখনো চিন্তাও করিনি। যাই হোক, সেই হাটের ভিতরে ঢুকতেই দেখতে পেলাম একটি নৌকার চিত্র। এই নৌকাটি দেখতে একটু আলাদা নৌকাটি দেখতে মনে হচ্ছে কোন এক বড় গাছের খোলস দিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু না সাঁওতালি আদিবাসীরা বৃষ্টির আসার আগে বড় গাছ কেটে এমন করে তৈরি করত নৌকা। এখানে আরেকটি চিত্র দেখতে পেলাম সেটি হল তারা কিভাবে কাপড় তৈরি করত সেই চিত্রটি এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এরপর আমরা হাটে প্রবেশ করলাম এখানেও কিন্তু সোনাঝুরি হাটের মতন সব ধরনের নকশা করা পোশাক-আশাক হাতে তৈরি বাচ্চাদের খেলনা ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে। এখানে যারা দোকান নিয়ে বসেছে তারা কিন্তু বেশিরভাগ সাঁওতালি আদিবাসী। হাটের বিভিন্ন ধরনের ছবি তুললাম আর এখান থেকে কিছু পোশাক কিনলাম।
যেগুলোর উপরে বিভিন্ন ধরনের নকশা করার ছিল।
পোশাকগুলোর দাম খুবই অল্প ছিল যার কারণে বেশি করে নিয়ে নিলাম। আগের পর্বেই বলেছি এখানের ভাষা আমাদের বুঝতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল। তাদের কথা আমাদের বুঝতে হলে তাদেরকে বারবার এক কথা আমাদের জিজ্ঞাসা করতে হচ্ছিল। তাদেরকে এতটাই বিরক্ত করছিলাম মনে হচ্ছিল তারা খুবই রাগ করছে কিন্তু তাদের ব্যবহার দেখে খুবই ভালো লাগলো তারা আমাদের সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহারই করেছিল। তারা যে শুধু আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে তা কিন্তু নয় এখানে আমাদের মতন যারা এসেছে সবার সঙ্গেই কিন্তু তারা খুব ভালো ব্যবহার করে থাকেন। সব থেকে বড় কারনটা হল তারা কিন্তু গ্রামের মানুষ আর গ্রামের মানুষের মনটা অনেক বড় হয়ে থাকে তারা খুব সাদামাটা হয়ে থাকে। যাই হোক, তাদের সঙ্গে কথা বলে আর এখান থেকে কেনাকাটা করতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। কারণ চিন্তা করতে পারেনি পার্কের ভেতর এমন একটি হাট দেখতে পাবো। যেগুলো সোনাঝুরি হাট থেকে সময়ের অভাবে কিনতে পারিনি।সেগুলো এই পার্কে এসে এই হাট থেকে কিনে নিলাম। তার জন্য খুবই ভালো লাগছিল।
ক্যামেরা পরিচিতি: oppo
ক্যামেরা মডেল: oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:২৫.১২.২০২৪
সময়:০১.৪৩মিনিট
স্থান:শান্তিনিকেতন
পৌষ মেলা ভ্রমণের বেশ কয়েকটা পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনি। আজকে আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর ভাবে পৌষ মেলা ভ্রমণের আরেকটি পর্ব নিয়ে উপস্থিত হয়ে দেখিয়েছেন। আপনার এই পোস্ট থেকে বেশ অনেক কিছু দেখতে পারলাম।
পৌষ মেলা ভ্রমণের সপ্তম পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যদি আগের পর্ব আমার দেখা হয়নি ।তবে সপ্তম পর্ব দেখে আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো ।বিভিন্ন ধরনের মূর্তি, গাছপালার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বেশ ভালো লাগছে। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।