ইকো পার্কে ঘুরাঘুরির মুহূর্ত

in আমার বাংলা ব্লগ6 hours ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে ইকো পার্কে ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



কার না ইকো পার্কে ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে আমার তো মনে হয় সবার ইচ্ছা করে। আমাকে তো ঘোরার কথা বললে খুবই ভালো লাগে। কারণ ঘুরলে মন শরীর সবকিছুই ভালো থাকে। কলকাতা সবচেয়ে বড় ইকো পার্কে সেদিন গিয়েছিলাম ঘুরতে। আগে পরেও যাওয়া হয়েছে অনেকটা বার। হঠাৎ করে দাদা বলল ইকো পার্কে ঘুরতে যাবে। দিদি আমাকে বলল রেডি হয়ে থাকতে আজ ইকো পার্কে ঘুরতে যাব। আমি তো শুনে খুবই খুশি কারণ অনেকদিন পর ঘুরতে যাচ্ছি। আমাদের যাওয়ার কথা ছিল বিকাল চারটার সময়। কিন্তু দাদার হাতে কাজ থাকার কারণে কাজ শেষ করতে করতে আমাদের সন্ধ্যা হয়ে গেল বের হতে। যাইহোক, যেহেতু মন করা হয়েছে সেহেতু অবশ্যই আমরা যাব। আমাদের ইকোপার্কে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় ছয়টা বেজে গিয়েছিল। আবার এদিকে পার্ক বন্ধ হয়ে যায় সাতটার সময় তার মানে হাতে আমাদের এক ঘন্টা রয়েছে। এই এক ঘন্টার ভিতর এত বড় পার্ক কোথায় বা ঘুরবো। যাইহোক,যেহেতু চলেই যখন এসেছি সেহেতু ঘুরতে তো হবেই। পরিবারের সবাই টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে ঢোকার আগে পার্কের পাশেই ছিল অসংখ্য খেলনার দোকান। খেলনার দোকান দেখতেই ভাগ্নে কিনার জন্য পাগল হয়ে গেল। বাবার হাতটা ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেল দোকানে। যেটা পছন্দ হয় সেটাই কিনতে শুরু করল আর বাবাও সেটা কিনে দিতে লাগলো। এখানে চলছিল দাদু আর নাতির খুনসুটি তাই কেউ বারন ও করল না। যেহেতু আমাদের লেট হয়ে যাচ্ছিল তাই তাড়াতাড়ি করেই আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম। বেশি দূরে আর যেতে পারলাম না কারণ ইচ্ছা ছিল ইকো পার্কের তাজমহল টা দেখার জন্য এবং মিশরের পিরামিড গুলো। আমি এখানে আগেও এসেছি আমার পরিবেশটা খুবই ভালো লেগেছে তাই আবার খুব ইচ্ছা করছিল যাওয়ার জন্য। কিন্তু কি করার হাতে খুব অল্প সময় ছিল আর জায়গাটা অনেক বড়। সময় করে না আসলে সবটা ঘুরে আসা সম্ভব নয় কারণ ৪০০ প্লাস বিঘা জায়গা জুড়ে এই পার্কটি অবস্থিত। বুঝতেই পারছেন কতটা বড় এরিয়া নিয়ে এই পার্টি অবস্থিত। তাই হাতে সময় করে না আসলে কোনভাবেই সবটি দেখা সম্ভব নয়।


যাইহোক, আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম এবং পাশেই ছিল ছোট বাচ্চাদের জন্য খেলার জায়গা। আমরা সেখানে ছোট বাচ্চাদের খেলাধুলা দেখছিলাম আর আমার ভাগ্নে যেহেতু ছোট মানুষ তাকেও কিছুটা সময় নিয়ে খেলাধুলা করলাম। পার্কে আসলে একটা জিনিস সব সময় বেশি দেখা যায় সেটা হল অনেক ধরনের মানুষ সেখানে আসা-যাওয়া করে থাকে। কেউবা পরিবার নিয়ে এসেছে আবার কেউবা বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড। আর ইকোপার্ক মানেই যে বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ডের আসা-যাওয়া তা কিন্তু নয় এখানে সব ধরনের বয়সের মানুষ এসে থাকে। কারণটা হলো এই ব্যস্ততার শহরে একটু ফাঁকা জায়গা কোথাও নেই। আর বর্তমান মানুষ কর্মজীবনে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে পরিবারকে নিয়ে ঘোরার সময়টুকু নাই। সপ্তাহের সব কয়টা দিনই মানুষের ব্যস্ততার মধ্যে কাটাতে হয়। আর শহরে কিঞ্চিত পরিমানে জায়গা নেই সেখানে বসে কিছুটা সময় পার করা যায়। সপ্তাহের প্রত্যেকটা দিন ব্যস্ততার মধ্যে কাটানোর পর যখন সাপ্তাহিক ছুটিটা হয় তখন সবাই চায় পরিবারের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য। আর এর জন্য সবথেকে ভালো উত্তম জায়গা হচ্ছে ইকোপার্ক। রবিবারে সব থেকে বেশি ভীড় হয়ে থাকে ইকো পার্কে। কারণ এই দিনটাতে সরকারি ছুটি থাকে সবাই তার পরিবারকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করে।
IMG20241109184518.jpg

IMG20241109185111.jpg

IMG20241109184639.jpg

IMG20241109184409.jpg


যেহেতু হাতে কম সময় ছিল তাই আমরা ভাবলাম স্টেশনে কিছুটা সময় পার করা যাক। স্টেশন বলতে এখানে কিছু ট্রেন আছে সেখানে টিকিট কেটে উঠলে পার্কের অনেক জায়গা ঘুরে আসা যায়। স্টেশনে অনেকগুলো বেঞ্চ রয়েছে সেখানে বসে রেস্ট নেওয়া যায়। এখানে সব থেকে দুঃখের বিষয়টা হলো স্টেশনে বসে ছবি তুললে দশ টাকা করে দিতে হবে মানে জরিমানা। এটা যে কেন করেছে সেটা আমি জানি না। সবাই মিলে বসে গল্প করছিল আর আমি দীপ্র দাদা দুজনে মিলে গিয়েছিলাম মাক্স এর জায়গায়। মানে বিভিন্ন ধরনের মুখোশ এখানে রয়েছে সেগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম। এই ছাড়া হাতে তেমন একটি সময়ও আমাদের আর ছিল না মাত্র ২৫ মিনিট ছিল। কিছু কিছু মানুষ বের হওয়ার জন্য গেটের দিকে যাচ্ছিল আবার আমাদের মতন যারা দেরি করে এসেছে তারা এই দিকে ঘুরছিল। আমি কিছু মুখোশের ছবি তুললাম আর নিজের একটি সেলফি নিলাম।
IMG20241109191148.jpg

IMG20241109185843.jpg

IMG20241109185814.jpg

IMG20241109185749.jpg

IMG20241109183634.jpg

IMG20241109183509.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি: oppo
ক্যামেরার মডেল: oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:০৯.১১.২০২৪
সময়:০৬.৪৫মিনিট
স্থান: কলকাতা


ঘুরতে ঘুরতে হুইসেল বেজে উঠলো বুঝে নিলাম আমাদের বের হবার সময় হয়ে গিয়েছে। মাইকে বলা হচ্ছে পার্ক থেকে বেরিয়ে যেতে মেইন গেট অফ করে দেওয়া হচ্ছে। এটি শোনার পর আমরা সবাই মেইন গেটের দিকে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম। কিন্তু ভাগ্নে কিছুতে আসতে চাচ্ছিল না তাই জোর করে তাকে কাঁধের উপর উঠিয়ে চলতে শুরু করলাম। কারণ ভাগ্নের কিছুতে আসতে চাচ্ছিল না। কিন্তু কি করার আমরা দেরি করে এসেছি আর যেহেতু পার্কের একটি নিয়ম আছে সেই নিয়ম আমাদের অবশ্যই ফলো করতে হবে। বাইরে যেয়ে আমরা কিছু খাওয়া-দাওয়া করলাম ভেবেছিলাম গেম খেলব কিন্তু সেটার হলো না তার জন্য মনটা একটু খারাপ হয়ে গেছিল। ভাবলাম পরে একদিন হাতে সময় নিয়ে এসে গেমটা খেলব আগে। যাইহোক, ইকো পার্কে এটুকু সময় ঘুরে কোন মজা পাওয়া যায় না। কিন্তু তারপরেও অনেকটা দিন পরে ঘুরতে এসেছিলাম।সেহেতু যেটুকু ঘুরতে পেরেছি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে আর মনটাও খুব ভালো হয়ে গিয়েছে।

আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 5 hours ago 

ভাইয়া আপনি কিন্তু বেশ দারুন একটা স্থানে প্রবেশ করেছেন এবং সেই স্থান থেকে ফটো ধারণ করেছেন। আমার দেখা কোন পার্কে এই সমস্ত জিনিসগুলো খেয়াল করি নাই। আছে অনেক কিছু জিনিসের ছবি ভাস্কর্য। যাইহোক একটি মুহূর্তে ঘুরতে ঘুরতে পার্কের মধ্যে থাকার সময় পার হয়ে গেল তাই বাঁশি বেজে উঠেছে। আর এরপর আপনারাও সেখান থেকে বের হয়ে। তবে যাই ইকো পার্কের মধ্যে কাট গোলাপের ফটোটা দেখে বেশি ভালো লেগেছে।