দূর্ঘটনা নাকি সচেতনতার অভাব?

in আমার বাংলা ব্লগ13 days ago

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসি। আপনারা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের সামনে একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে হাজির হয়েছি। বিষয় হচ্ছে আমাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব।


road-3774012_1280.jpg

Image by Анна Иларионова from Pixabay


আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সকল ঘটনাই দুর্ঘটনা নয়। কিছু কিছু ঘটনা নিতান্তই আমাদের সচেতনতার অভাবে ঘটেছে। যাকে আমি কোন ভাবেই দুর্ঘটনা হিসেবে মানতে রাজি নই। যেমন ধরুন, আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। আমার মাথার উপরে একটি নারিকেল গাছ ছিল এবং সেখান থেকে একটি নারিকেল আমার মাথার উপরে পড়লো তাহলে সেটাকে আমি দুর্ঘটনা বলবো। কিন্তু আমার মাথার উপর একটি নারিকেল গাছ রয়েছে, সেখানে পাঁকা নারিকেল রয়েছে এবং আমি তা দেখেও সে নারিকেল গাছ তলাতেই দাঁড়িয়ে আছি। তখন যদি আমার মাথার ওপর নারিকেল পড়ে তাহলে সেটাকে আমি কোন অবস্থাতেই দুর্ঘটনা বলতে পারিনা। এটা হচ্ছে আমার মধ্যে সচেতনতার অভাব। নিয়ম হচ্ছে ফুটপাত ধরে হাটার। কিন্তু আমি যদি তা না করে রাস্তার উপর দিয়েই হাঁটি এবং যাত্রাপথে কোন একটি গাড়ি আমাকে ধাক্কা দেয়, তাহলে কোন অবস্থাতেই আমি এই ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলতে পারব না। এটা হচ্ছে আমার মধ্যে সচেতনতার অভাব। এই বিষয়টিই আমি আপনাদেরকে বুঝাতে চাচ্ছিলাম।

আমাদের দেশে এমনিতেই সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ খুব বেশি। সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের পরিমাণও প্রচুর। এই অবস্থায় যদি আমরা দেখি মহাসড়কে অটোরিক্সার দাপট তাহলে বিষয়টি আরো বেশি ঘোলাটে হয়ে যায়। বাংলাদেশের প্রায় ৯৯% অটো ড্রাইভারি চূড়ান্ত রকমের মূর্খ। তাদের মধ্যে ন্যূনতম কোন রকমের পড়ালেখা নেই। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, তাদের মধ্যে পড়ালেখা না থাকার পাশাপাশি তাদের মধ্যে কোন রকমের কমনসেন্স পর্যন্ত নেই। কোথায় গাড়ি দাঁড় করাতে হবে, কোথায় দাঁড় করিয়ে যাত্রী তুলতে হবে, কোথায় দাঁড় করিয়ে যাত্রী নামাতে হবে, কি কি বিষয় জানতে হবে, কিভাবে নিতে হবে এসব বিষয় তাদের মধ্যে ন্যূনতম কোন জ্ঞান নেই। তাদের গাড়ির ওজন অনুযায়ী কতটুকু গতিতে তারা যেতে পারবে সেই বিষয়টুকু তারা জানে না। এরা যখন মহাসড়কে যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই দুর্ঘটনার পরিমাণ দশগুন বেড়ে যায় এবং বর্তমানে বাংলাদেশে এই সমস্যাটাই হয়েছে। এই অটোচালকদের কারণে বাংলাদেশ ঘটা একটি দুর্ঘটনার কথা আমরা সকলেই জানি। তারেক মাসুদের সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো। সেই ঘটনাটি আমি পড়েছিলাম। সেখানে মূল দোষ কিন্তু ছিল একজন মূর্খ অটো ড্রাইভারের। যে জানেনা রাস্তার ঠিক কোন জায়গায় পার্কিং করতে হয়। যার কারণে বিপরীত দিক থেকে আসা বাসের সাথে সেই অটো ওভারটেকরত অবস্থায় থাকা তারেক মাসুদের প্রাইভেট কারের সংঘর্ষ হয় এবং ওই সংঘর্ষে তারেক মাসুদের প্রাণ যায়। এটা তারেক মাসুদ এবং বাস ড্রাইভারের জন্য দুর্ঘটনা। কিন্তু সেই মূর্খ অটোড্রাইভার এর জন্য অসচেতনতা এবং তার এই অসচেতনতার জন্যই আমরা তারেক মাসুদের মত একজন চলচ্চিত্রকারকে অকালে হারিয়েছি।

তাই আমি বলতে চাই, আমাদেরকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আমরা যখনই কোন অটোরিক্সায় চড়বো তখন ড্রাইভারকে এসব বিষয় সচেতন করতে হবে। কারণ আমরা চাইলেই তা সম্ভব। আশা করি সবাই বিষয়টি মাথায় রাখবেন। ধন্যবাদ সকলকে।


IMG_5055.jpg

নিজের সম্পর্কে
আমি মুহাম্মদ সাব্বির আকিব। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি। জেলাঃ চাঁদপুর, থানাঃ ফরিদগঞ্জ। থাকি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন দক্ষিণ গাজীরচট নামক স্থানে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রসায়নে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে একটি ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট হিসাবে কর্মরত রয়েছি। বিবাহিত এবং আল্লাহ একটি পুত্র সন্তানের জনক করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ।