এলাকার বন্ধুদের সাথে ভুরিভোজ ও ঘোরাফেরা করা (শেষ পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক


আমরা যখন এলাকা থেকে চরভদ্রাসনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম তখন চিন্তা করেছিলাম ৪০ থেকে ৫০ মিনিট মতো সময় লাগবে সেখানে পৌঁছতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের সেখানে পৌঁছাতে প্রায় সোয়া এক ঘন্টা সময় লেগেছিলো। যাওয়ার রাস্তাটা অবশ্য বেশ ভালোই ছিলো। শুধু অল্প কিছু রাস্তা ছিলো খারাপ। শেষ পর্যন্ত আমরা যখন সেখানে গিয়ে পৌঁছলাম। সেখানে পৌঁছে প্রথম দৃশ্যটাই মন কেড়ে নিলো। সামনেই দেখতে পেলাম প্রমত্তা পদ্মা। নদীটি দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো সে পূর্ণ যৌবন ফিরে পেয়েছে। তবে নদীর পানি দেখে আর সেটাতে নামার সাহস করিনি। কারণ পানিতে ছিলো প্রচন্ড স্রোত। সেখানে পৌঁছে আমরা দেখতে পেলাম ঘাটের থেকে কিছুটা দূরেই একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এই গ্রামের ভেতরেও এমন একটা রেস্টুরেন্ট দেখে আমাদের বেশ ভালই লাগলো। আমরা সবাই বলাবলি করতে লাগলাম ঠিক এইরকম একটা রেস্টুরেন্ট আমাদের শহরের নদীতেও ছিলো।

IMG_20230818_180438.jpg

আমরা যখন সেখানে পৌঁছেছি তখনও বেশ রোদ ছিলো। যার ফলে আমরা আশেপাশে তাকিয়ে খুঁজতে লাগলাম কোথাও বসা যায় কিনা। খুঁজতে খুঁজতে একটু দূরে তাকিয়ে দেখি সামনেই একটি বড় নৌকা পাড়ে ভেড়ানো রয়েছে। আর নৌকাটি যেখানে ছিল সেখানে ছিলো গাছের ছায়া। তাই আমি সবাইকে বললাম চল আমরা সবাই গিয়ে ওই নৌকায় বসি। নৌকাটা ঢেউয়ের তালে হালকা দুলছিলো। আমরা সবাই সেই নৌকায় বসে আড্ডা দিতে লাগলাম। সেই সাথে চলছিলো ছবি তোলা। ঢেউয়ের তালে অল্প দুলছিলো নৌকাটি আর আমরা অনেক মজা পাচ্ছিলাম। সে এক দারুন অনুভূতি। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে বসে আড্ডা দেয়ার পর আসরের আযান শুনতে পেলাম। আমরা দেখতে পেলাম আমরা যেখানে বসে রয়েছি তার খুব কাছাকাছি একটি মসজিদ রয়েছে। আমরা কয়েকজন বন্ধু গিয়ে সেখান থেকে নামাজ পড়ে এলাম।

IMG_20230818_171619.jpg

IMG_20230818_175326.jpg

নামাজ পড়ে আসার পরে অন্য বন্ধুরা বলতে লাগলো চল আমরা এখন একটু সামনে থেকে হেঁটে আসি। আমরা যে নদীর পারে গিয়েছিলাম সেখানকার যে ব্যাপারটি আমার কাছে সবচাইতে ভালো লেগেছিলো সেটা হচ্ছে। দীর্ঘ পথ ধরে পুরো পাড় বাঁধানো ছিলো। দেখে বুঝতে পারছিলাম এক সময় হয়তো এখানে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন হয়েছে। সেই কারণেই বোল্ডার দিয়ে পাড়গুলো বাঁধাই করে দেয়া হয়েছে। বাঁধাই করা নদীর পাড় দিয়ে হাঁটতে বেশ ভালো লাগে। তাছাড়া সেদিনের আবহাওয়াটাও ছিল চমৎকার। বিকালের পরিবেশটা হালকা মৃদু বাতাস আরো মনোরম করে তুলেছিলো। আমরা কয়েক বন্ধু গল্প করতে করতে হাঁটতে হাঁটতে বেশ কিছুদূর সামনে চলে গেলাম। তবে একটা পর্যায়ে গিয়ে আমি সবাইকে থামতে বললাম। বললাম আর সামনে গেলে পরে ফিরতে আমাদের কষ্ট হবে। তাছাড়া সামনের জায়গাটাতে দেখতে পেলাম তেমন কোন গাছপালাও নেই যার ফলে বেশ রোদ। আমার কথা শুনে সবাই দাঁড়িয়ে গেলো। তারপর আমরা আবার উল্টো দিকে ফিরতে লাগলাম।

IMG_20230818_164711.jpg

কিছুদূর হাঁটার পরে আমরা একটি জায়গায় একটি বাঁধানো ঘাট দেখতে পেলাম। জায়গাটা ফাঁকা দেখে আমরা সবাই মিলে সেখানে বসে পড়লাম। নদীর পানি দেখে আমার আর ভালো লাগছিল না। তাই আমি স্যান্ডেল খুলে পা ভেজানোর জন্য কয়েক সিঁড়ি নিচে নেমে গেলাম। তারপর হাঁটু সমান পানিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। বাইরের আবহাওয়া ছিল মোটামুটি গরম। তার ভেতরে এই নদীর ঠান্ডা পানির স্পর্শ পেয়ে মনে হচ্ছিল নদীতে কিছুক্ষণ ঝাঁপাঝপি করে নেই। তবে যেহেতু সাথে কাপড়চোপড় নেইনি সে কারণে আর সেই ইচ্ছাটা পূরণ করা হলো না। সেই ঘাটে বসে বেশ কিছুক্ষণ সময় আমরা আড্ডা দিলাম। এর ভেতরে এক বন্ধু তার মোবাইলে কয়েকটা গান প্লে করলো। সবগুলোই ছিল ৯০ দশকের জনপ্রিয় গান। গান গুলি শুনতে শুনতে আমরা পুরনো দিনে ফিরে গেলাম। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে কাটানোর পর আমরা বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম। চমৎকার একটা দিনের স্মৃতি নিয়ে সবাই বাড়ি ফিরছিলাম। সামনে কোন এক সপ্তাহে আমরা পদ্য বিলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম ফেরার পথে। এখন দেখা যাক সেই পরিকল্পনাটা সফল হয় কিনা ?

IMG_20230818_175457.jpg


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানচরভদ্রাসন

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

নদীর পাড়ে গিয়ে দেখছি দারুন মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। বিশেষ করে প্রচন্ড রোদের মধ্যে নদীর পাড়ে গেলে পরিবেশটা ভালোভাবে উপভোগ করা যায় না বিকেল মুহূর্তটা নদীর পাড়ে কাটানোর দারুন সময়। যাইহোক, নদী ভাঙ্গনের কারণেই এরকম বাঁধ দেওয়া হয়েছে। ছোটবেলার নদী ভাঙ্গন দেখেছিলাম মানুষের কান্নার হাহাকার সত্যিই সেই স্মৃতি মনে পড়লে খুবই কষ্ট লাগে । আপনার কাটানো মুহূর্ত খুবই ভালো লেগেছে ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

এমন ভাসমান রেস্টুরেন্টটি আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আগেও দেখেছি।তবে এটা আপনার শহরের না জেনে বেশ অবাক হলাম সেম ভাসমান রেস্টুরেন্ট।নদীর পাড় এভাবে বেঁধে দেওয়াতে ভাঙনের সম্ভাবনা থাকবে না।তাছাড়া নদীর নির্মল হাওয়া আমার ও খুবই ভালো লাগে।দারুণ সময় পার করেছেন বন্ধুদের সঙ্গে ভাইয়া।তবে আপনার শহরের নদীর নাম কি?

 last year 

নদীর পাড়ে গিয়ে বন্ধুদের সাথে কাটানো অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষন ভালো লাগলো। ওয়েদারটা সত্যি ই খুব সুন্দর ছিল।এমন পরিবেশে গেলে মনটা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। আপনারা নৌকা পেয়ে তাতে বসে সময় কাটিয়েছেন। সত্যি পানির স্রোতে নৌকায় দোল খেতে খুব ভালো লাগে।এরপর ঘুরতে যাবেন পদ্য বিলে, সেই রকমই পরিকল্পনা। দেখা যাক কি হয়।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 last year 

বর্ষাকালে নদী পূর্ণ যৌবন ফিরে পায়। আর সেই সৌন্দর্য দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগে। প্রথম দেখাতেই তাই তো নদীর সৌন্দর্য আপনার হৃদয় কেড়ে নিয়েছিল ভাইয়া। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। যাই হোক বন্ধুদের সাথে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া।