জেনারেল রাইটিং || স্মৃতিচারণ: শীতকালে জাল দিয়ে মাছ ধরা
বন্ধুরা,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি। আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে শীতকালে জাল দিয়ে মাছ ধরার একটি ঘটনা শেয়ার করব। |
---|
শৈশবের কয়েকটা বছর আমি গ্রামে থাকলেও পরে শহরে গিয়ে বড় হয়েছি । বাবা চাকরিজীবী ছিলেন তাই বাবার চাকরির সুবাদে আমরা শহরে শিফট হয়ে যাই। তবে শহরের চলে গেলেও গ্রামের প্রতি টান আমার সব সময় থাকতো। কোন ছুটির অকেশন আসলেই পরিবারের সবাই মিলে চলে যেতাম গ্রামে। গ্রামে আসার পরে যে শান্তি পেতাম তা হয়তো বলে বোঝাতে পারবো না। ছোটবেলায় এরকম হত, গ্রামে আসার পর যখন শহরে যাওয়ার দিন চলে আসতো আমি কান্নাকাটি শুরু করে দিতাম শহরে না যাওয়ার জন্য। বিভিন্ন ধরনের বাহানা করতাম শহরে না যাওয়ার।
যাই হোক, এই ভাবেই অনেক বছর কেটেছে আমার। গ্রামে শীতকালে যখন পরিবারের সবাই মিলে ছুটি কাটাতে যেতাম আমরা আমাদের বাড়ির পাশে থাকা খাল থেকে সবসময় মাছ ধরতাম। শীতকালে খালের জল অনেকটা শুকিয়ে যেত আর খালে যে কচুরিপানাগুলো থাকতো সেগুলোর নিচে মাছগুলো লুকিয়ে থাকত। আমরা জাল নিয়ে গিয়ে সেগুলোকে ধরতাম। আমি, বাবা, জ্যাঠা, দাদা, ভাই সবাই মিলে এই কাজ করতাম। দুপুরে স্নান করার পূর্বেই আমরা মাছ ধরতে যেতাম এবং দুই ঘন্টার মধ্যে অনেক মাছ ধরে নিয়ে বাড়ি চলে আসতাম। খুব মজা হত এভাবে মাছ ধরে।
একবার খালে জাল নিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে অবাক করার মতো ঘটনা ঘটেছিল। খালের জলে আমরা সবাই জাল নিয়ে নেমে খালের কূলের একাংশের কচুরিপানাগুলোকে জালের মধ্যে ঘিরে ফেলে দিই। তারপর জালটাকে কিছুটা টেনে তুলে নিয়ে এই কচুরিপানাগুলোকে সবাই মিলে ফেলে দিই । তারপর জালে আটকে যাওয়া মাছগুলো সব সামনে চলে আসে। সেইবার এভাবে মাছ ধরতে গিয়ে অনেক মাছ পেয়েছিলাম। প্রায় দুই কুড়ি কৈ মাছ ছিল একবার জাল টানাতেই। এটা অবাক করার মতো হলোও সত্যি ঘটনা । এই ঘটনাটি আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে। শুধু কৈ মাছই ছিল না শোল মাছ, টাকি মাছ, বাইন মাছ ইত্যাদি আরো কয়েক প্রকারের মাছ ছিল। এতগুলো মাছ একসাথে পেয়ে আমরা তো মহা খুশি হয়েছিলাম।
তবে সেইবার একটা সমস্যা হয়েছিল তা হল এই জালের মধ্যে একটি জলঢোঁড়া সাপও বেঁধে গেছিল। তাই দেখে তো আমি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করি। একদিকে এতগুলো মাছ পাওয়ার আনন্দ অন্যদিকে সাপের ভয়! ওভারঅল একটা অন্যরকম সিচুয়েশন ক্রিয়েট হয়ে গেছিল। তবে জলঢোঁড়া সাপ বিষাক্ত নয়, সেটা আমি আগে থেকেই জানতাম। তাই ভয় পেলেও এটা জানতাম এই সাপের জন্য আমাদের কোন ক্ষতি হবে না।
দ্বিতীয়বার যখন খালের অন্য অংশে জাল টানতে গেছিলাম তখন আবার আমার সাপের ভয় করছিল। সেই জন্য আমি উপরে দাঁড়িয়ে থেকেই দ্বিতীয়বারের জাল টানা দেখি। তবে দ্বিতীয়বারের জাল টানাতে খুব বেশি মাছ আমরা তখন পাইনি। তবে প্রথমবারে যতগুলো মাছ পেয়েছিলাম সেটাই আমাদের সেই দিনের জন্য যথেষ্ট ছিল । শীতকালে ঠান্ডা জলের মধ্যে এভাবে কাপতে কাপতে মাছ ধরার মধ্যে একটা অন্যরকম মজা ছিল। অনেক বছর কেটে গেছে এরকম ভাবে আর খালে নেমে মাছ ধরা হয়নি। হঠাৎ করেই এই ঘটনাটি মনে পড়ে গেল তাই তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম।
কচুরিপানার ভিতরে অনেক মাছ পেয়েছেন খুব আনন্দ লেগেছিল নিশ্চয়ই। আসলে মাছ ধরতে সবারি খুব ভালো লাগে।এক সাথে অনেক মাছ পেয়ে খুব আনন্দ পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।মাছ মারার আনন্দে সাপের ভয়ে চিৎকার করেছেন।তবে আবার পরক্ষণেই মনে পড়েছে যে বিষাক্ত সাপ নয়।সাপ বিষাক্ত না হলেও ভয় লাগে আমার।ধন্যবাদ পোস্টি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ দিদি, কচুরিপানার ভেতর থেকে অনেক মাছ ধরে খুব আনন্দ করেছিলাম সেইদিন। সব সাপে ভয় পাওয়াই উচিত, আমিও সবসময় ভয় পাই এগুলো দেখলে।
এই শীতের সকালে জলে গিয়ে মাছ ধরছেন আর শীতে কাঁপছেন। আমি তো পড়ছি আরা ঠান্ডায় কাঁপছি🤣। মজা করলাম।
শোল মাছটাকে মাছ বাইন মাছ এগুলো সাধারণত খালে বিলাই থাকে। যারা খালে চাল বসায় আম্মু তাদের কাছ থেকে এই মাছগুলো কিনে নেয়। ইস আপনি যদি আমাদেরকে দিয়ে দিতেন। আমিও জানি খালে মাটিতে যে এই সাপগুলো থাকে এগুলো বিষাক্ত হয় না। বিষাক্ত হোক বা না হোক দেখলে ভয় তো পাবোই।
তাহলে তো দেখছি ভালোই শীত পড়ে গেছে আপনাদের ওদিকে আপু। আমাদের এইখানে এখনো অতটা শীত পড়ে পারেনি যদিও। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টটি পড়ে আপনার সুন্দর মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
এতগুলো মাছ পেয়েছেন তার সঙ্গে একটি সাপ ফ্রি না পেলে কি হয়। এজন্য সাপ জালে উঠে চলে এসেছে। আসলে এরকম সিচুয়েশনে ভয় পাওয়ারই কথা। এরকম সাপ দেখে দ্বিতীয়বার জাল ফেলার কথা তো চিন্তাই করা যায় না প্রথমবার অনেক বেশি মাছ পেয়েছিলেন জন্য দ্বিতীয়বার আর তেমন একটা মাছ উঠে নি। শীতকালে এরকম মাছ ধরতে দেখতে খুব ভালো লাগে। কখনো নিজের ধরা হয় নি।
মাছ ধরার ক্ষেত্রেও অফার! অনেকগুলো মাছ ফেলে একটি সাপ ফ্রি!! হিহিহি 🤣🤣🤣
শীতকালে খালে বিলে মাছ ধরা যতটা মজা লাগে সাপের ভয় থাকে আরও বেশি। আপনি গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে অনেক আগে খালে মাছ ধরেছেন। তবে শীতকালে কচুরিপানাগুলোর কারণে মাছ ধরতে একটু কষ্ট হয়। আর মাছ ধরতে যদি একবার ভয় পাওয়া যায় তাহলে দ্বিতীয়বার মাছ ধরতে গেলে নিজের কাছে ভয় লাগে। আর যারা শহরে থাকে তারা গ্রামে আসলে তাদের কাছে অনেক ভালো লাগে। যাওয়ার সময় অনেক সময় কান্নাকাটিও করে।আসলে খুব সুন্দর করে মাছ ধরার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।
শহর থেকে গ্রামে ঘুরতে গিয়ে পুনরায় যখন শহরে যাওয়ার দিন চলে আসতো অনেক কান্নাকাটি করতাম আমি। গ্রামে গিয়ে শীতকালে খালে বিলে মাছ ধরে যে আনন্দ পেতাম সেটা রেখে আর আসতে ইচ্ছা করতো না শহরে।
আপনি আমাদের সাথে সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন। শীত কালে যেমন ঠান্ডা লাগে ঠিক তেমনি মাছ ধরতেও ভীষণ ভালো লাগে। শীতের সময় সব খাল-বিল শুকিয়ে যায়। যাইহোক আপনারা কচুরিপানা সরিয়ে অনেক গুলো মাছ পেয়েছেন এটা আমার কাছেও ভীষণ ভালো লেগেছে। তবে জলঢোঁড়া সাপ দেখলে ভয় লাগে কিন্তু এই সাপের কোন বিষ নাই। আপনি আপনার নিজের অনুভূতি গুলো শেয়ার করেছেন জেনে খুশি হলাম। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
শীতের সময় খালের জল অনেকটা কমে গেলে সেখানে গিয়ে কচুরিপানা জালের মধ্যে আটকে অনেক মাছ পেতাম। অন্যরকম এক খুশির অনুভূতি হতো তখন। শীতকালে জলে নেমে মাছ ধরার সময় ঠান্ডা লাগলেও প্রচুর মাছ পেতাম তো ভাই, তাই অনেক আনন্দ হতো তখন।
মাছ ধরা দেখতে আমারও ভীষণ ভালো লাগে, তবে সেভাবে মাছ ধরার সুযোগ হয়নি তেমন। কিন্তু বড়শি দিয়ে বেশ কয়েকবার পুঁটি মাছ ধরেছিলাম ছোটবেলায়। যাইহোক এটা জানি যে পুকুর বা খালের পানি শুকিয়ে গেলে, কচুরিপানার নিচে কৈ মাছ থাকে অনেক। যাইহোক এতগুলো মাছ একসাথে পেলে আনন্দ লাগার ই কথা। আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।