ক্রিয়েটিভ রাইটিং || ভৌতিক গল্প : প্রতি মঙ্গলবার (পর্ব - ০১)

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভালো আছো। আমিও ভালো আছি।

glass-pane-975494_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

ছোট্ট একটি গ্রাম, সেই গ্রামের একটা অংশে বসবাস করে তিশা এবং তার পরিবার। পরিবারে তারা চারজন সদস্য সে, তার ছোট ভাই, তার মা এবং তার বাবা। তবে তার বাবা গ্রামে থাকে না, শহরে থাকে। বিগত ১০ বছর ধরে সে শহরে কাজ করে এবং টাকা ইনকাম করে। আর সেই টাকার কিছু অংশ মাঝে মাঝেই তাদের জন্য গ্রামে পাঠায়। তার বাবা যেহেতু এত বছর ধরে শহরে ইনকাম করেছে তাই একটা ছোটখাটো বাড়ি কেনার মত কিছু টাকা জমিয়ে ফেলেছে তার বাবা। তার বাবাও চায় পরিবারের সকলকে শহরে নিয়ে আসতে, ছোট্ট একটা বাড়ি কিনে সুন্দর করে থাকতে।

যদিও তিশার মা, তিশা এবং তার ছোট ভাই গ্রাম ছেড়ে শহরে যেতে চায় না। তারা অল্প খেয়ে থাকলেও গ্রামেই অনেকটা সুখে রয়েছে এরকম বক্তব্য তাদের। তবে তার বাবা যেহেতু জীবনের অনেকটা সময় শহরে পার করেছে, সেজন্য তার বাবাও চায় তার সাথে পুরো পরিবারটা থাকুক। তার বাবা সপ্তাহে একদিন করে গ্রামে আসে এবং তাদের সাথে সময় কাটিয়ে আবার পুনরায় শহরে চলে যায়। একবার তার বাবা এসে সবাই মিলে শহরে যাওয়ার বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করে। অনেক আলোচনার পর অবিশেষে সিদ্ধান্ত হয় যে তারা সবাই শহরে চলে যাবে।

তবে এর আগে তার বাবা ছোট্ট একটি জায়গার উপর একটি ঘর দেখে রেখেছিল। যেটি সে ক্রয় করতে চেয়েছিল। আসলে এই বাড়িটি পুরাতন একটি বাড়ি ছিল। অনেকদিন ধরেই পরে ছিল বাড়িটি তবে এটি কেনার কোন লোক ছিল না। কেনার লোক না থাকায় অনেকটা কম দামেই বিক্রি করে দিতে চায় মালিক। তিশার বাবা এটাকে তার জন্য একটা সুযোগ মনে করে এবং অনেকটা কম টাকায় সে বাড়িটা কিনে ফেলে। তবে বাড়ি কিনলেই তো আর হয় না, যেহেতু পুরনো বাড়ি ছিল তাই তার পিছনেও খরচ রয়েছে। এইজন্য সে কিছু মিস্ত্রি দিয়ে পুনরায় বাড়িটি রং করায় এবং টুকটাক ঠিক করে। তারপর কয়েকদিন পরেই সে শহরে নিয়ে আসে তার পুরো পরিবারকে।

এই নতুন শহরে প্রথম প্রথম মানিয়ে চলাটা তাদের জন্য একটু কষ্টকর হচ্ছিল। তবে পরিবারের সবাই এখন একসাথে রয়েছে, এটাই তাদের জন্য আনন্দের বিষয় ছিল। গ্রামে থাকতে তারা এলোমেলো ঘুরে বেড়াতে পারতো, বন্ধু-বান্ধবী ছিল, আশেপাশের লোকজন ছিল, তাদের সাথে মিশতে পারত। তবে শহরে আসার পর কেমন জানি তারা একা হয়ে গেছে। তার বাবা সকালেই কাজে বেরিয়ে পড়ে। তিশার ছোট ভাই, তিশা এবং তার মা একটা ঘরের মধ্যে বসে টুকটাক সময় কাটায়, রান্নার কাজ করে, এভাবেই তাদের কয়েকটা দিন কাটে। এই বাড়িতে আসার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় বাড়িতে। তারা সবাই একটা বিষয় খেয়াল করে যে, তারা কোন জিনিস যেখানে রাখছে সেখানে থাকছে না। হয় সেখান থেকে পড়ে যাচ্ছে, না হলে সেখান থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। এক অদ্ভুত কান্ড ঘটতে থাকে তাদের সাথে।

এই শহরে চোরের উৎপাত আছে সেটা তারা জানে। তবে চোর জিনিসগুলো চুরি করে নিয়ে যাবে, ভেঙ্গে ফেলবে অথবা এক জায়গা থেকে নিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে রাখবে, এরকমটা তো করবে না। এই বিষয়টা নিয়ে তারা অনেক ভাবনায় পড়ে। প্রথম সপ্তাহ এভাবে যাওয়ার পর বিষয়টা সবাই খেয়াল করে কিন্তু কেউ কাউকে বলে না। দ্বিতীয় সপ্তাহেও একই ঘটনা ঘটে এবং তারা একটা বিষয় খেয়াল করে প্রত্যেক সপ্তাহের মঙ্গলবারই এই ঘটনাগুলো দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া মঙ্গলবার হলেই কেমন জানি আরও নিশ্চুপ হয়ে যায় বাড়ির পুরো পরিবেশটা। রাত হলেই বিভিন্ন ধরনের শব্দ শোনা যায়। একবার রাতের বেলা জানলায় তারা রক্ত মাখা হাতের দাগও দেখতে পায়। এই বিষয়টা তাদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার ঘটায়

চলবে...


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (ভৌতিক গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা এই গল্পটির প্রথম পর্ব তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷