অণুকবিতা "ভীষণই অরাজনৈতিক"

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago


Copyright-free Image source : Pixabay


অণুকবিতা "ভীষণই অরাজনৈতিক"



💘


♡ ♥💕❤

চোখ দুটি তার লুকিয়েছে আজ ভীষণ অভিমানে,
চামড়া ঢাকা কঙ্কালদেহ আজ দাঁড়িয়েছে সম্মুখ সমরে ।
নির্মম সভ্যতার বুকে আজ পদাঘাত করি
মানুষ নামের অমানুষ হতে ভিক্ষা নয়, নিয়েছে কাঁড়ি
এক মুঠো ক্ষুধার অন্ন আর ধনীর বুকের এক খাবলা মাংস ।


কত মিছিল চলে গেছে রাজপথ দিয়ে,
কত সিংহ কণ্ঠের গর্জনে ময়দান আজ কাঁপে ।
কত স্বপ্নের রঙিন ফানুস উড়িয়েছে কত শত নেতা,
তবু হতভাগাদের সেই শূন্য উদর রয়ে যায় আজও ফাঁকা,
মাথার উপরে সুনীল আকাশ, তাদের রাজপথেই বিছানা ।


গভীর রাতের এই শহরটা আমার ভীষণই অচেনা,
দিনের বেলায় এর ঐশ্বর্যে চোখ ঝলসে যায় ।
রাতের আঁধারে শত বুভুক্ষু প্রেত-মূর্তি ওঠে জেগে,
ডাস্টবিনে তারা সারমেয়দের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে ।


মানুষ নাকি ? ওরা তো পশু, কারণ ওরা বস্তিতে থাকে,
মানুষ হলুম আমরা, যারা গাড়ি ঘোড়ায় চড়ি ।
কী বলো পাগলের মতো ? ওরাও মানুষ ? ওদেরও খিদে আছে ?
আমি ভাবতুম নোংরা কুকুর, ডাস্টবিন ঘেঁটে বেঁচে থাকে ।
পাঁচটি বছর পরে যখন ভোটের সময় আসে,
তখন শুধুই মানুষ ওরা অন্য সময় পশু ।


ঝড় উঠেছে, ভীষণ বৈরী হাওয়ায়
স্বপ্নের পাল ছেড়ে বারংবার ।
বাউল হাওয়া তবু পারেনি তাকে নোয়াতে,
তীব্র আশায় সমুজ্জ্বল সুকঠিন মাস্তুল ।


আকাশ মেঘলা হলেই চোখের কোণে জমে জল;
বৃষ্টি যখন নামে চোখের পাতা ভেজে ।
যখন ওঠে তীব্র বৈশাখী ঝড়,
রক্ত চলকে হৃদয়ে তুফান ওঠে ।


জীবন খাতা আমার প্রশ্নে ভরতি,
আজো উত্তর পেলাম না ।
প্রশ্নের পর প্রশ্ন জোটে,
উত্তরের জন্য মাথা খুঁটে
তবু কোনো উত্তর পেলাম না ।

♡ ♥💕❤


Sort:  
 3 years ago 

প্রত্যেক টি কবিতা দারুন । আমি মুগ্ধ হয়েছি আজ আরেকবার দাদা আপনার লেখা পড়ে।

চোখ দুটি তার লুকিয়েছে আজ ভীষণ অভিমানে,
চামড়া ঢাকা কঙ্কালদেহ আজ দাঁড়িয়েছে সম্মুখ সমরে ।
নির্মম সভ্যতার বুকে আজ পদাঘাত করি
মানুষ নামের অমানুষ হতে ভিক্ষা নয়, নিয়েছে কাঁড়ি
এক মুঠো ক্ষুধার অন্ন আর ধনীর বুকের এক খাবলা মাংস ।

কত মিছিল চলে গেছে রাজপথ দিয়ে,
কত সিংহ কণ্ঠের গর্জনে ময়দান আজ কাঁপে ।
কত স্বপ্নের রঙিন ফানুস উড়িয়েছে কত শত নেতা,
তবু হতভাগাদের সেই শূন্য উদর রয়ে যায় আজও ফাঁকা,
মাথার উপরে সুনীল আকাশ, তাদের রাজপথেই বিছানা ।

রাজপথে মিছিল যেন মানুষের অধিকার এনে দেবে এই প্রতিশ্রুতি দেয়
এদিকে মানুষের মুখের খাবার কিছু মানুষ রুপী অমানুষ কেড়ে নেয়।

ভাল থাকবেন দাদা । ধন্যবাদ । শুভেচ্ছা ও ভালবাসা সবসময় থাকবে আপনার জন্য।

Thank You for sharing Your insights...

 3 years ago 

আমাদেরকে খুলে দিতে হবে হৃদয়ের বন্ধ দুয়ার। পথ শিশুদের জন্য হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। ছোট শিশুরা কত আর্তনাদ করে। এ আর্তনাদ গুলো কি মানুষের হৃদয়ে পৌঁছায় না?
আপনার এই অণুকবিতা গুলোর মর্মার্থ অনেক দাদা। কবিতাগুলো নিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে গেলে অনেক কিছু খুঁজে পাওয়া যায় এই কবিতা গুলোর মধ্যে । আসলে আমার অনেক ভালো লাগে আপনার এই অণু কবিতা গুলো পড়তে।

Thank You for sharing...

 3 years ago 

মানুষ নাকি ? ওরা তো পশু, কারণ ওরা বস্তিতে থাকে,
মানুষ হলুম আমরা, যারা গাড়ি ঘোড়ায় চড়ি ।
কী বলো পাগলের মতো ? ওরাও মানুষ ? ওদেরও খিদে আছে ?
আমি ভাবতুম নোংরা কুকুর, ডাস্টবিন ঘেঁটে বেঁচে থাকে ।
পাঁচটি বছর পরে যখন ভোটের সময় আসে,
তখন শুধুই মানুষ ওরা অন্য সময় পশু ।

কবিতার লিখা লাইনগুলো বাস্তব। বস্তিতে থাকা মানুষকে আমাদের সমাজের অনেকেই মানুষ বলে গন্য করে না।

কিন্তু যখন ভোটের সময় আসে তাদের মূল্য বেড়ে যায় অন্যান্য সময় তাদের দিকে ফিরেও তাকায় না তারা।
আর এইটাই হলো আমাদের সমাজের বাস্তবতা।

 3 years ago 

মানুষ নাকি ? ওরা তো পশু, কারণ ওরা বস্তিতে থাকে,
মানুষ হলুম আমরা, যারা গাড়ি ঘোড়ায় চড়ি ।
কী বলো পাগলের মতো ? ওরাও মানুষ ? ওদেরও খিদে আছে ?
আমি ভাবতুম নোংরা কুকুর, ডাস্টবিন ঘেঁটে বেঁচে থাকে ।
পাঁচটি বছর পরে যখন ভোটের সময় আসে,
তখন শুধুই মানুষ ওরা অন্য সময় পশু ।

দাদা আজকের কবিতার প্রতিটি লাইন অসাধারণ। তবে এই কবিতার অর্থ বুঝা অনেক জ্ঞানের ব্যপার। আজকের কবিতার অর্থ খুজতে অনেক সময় লেগেছে। তবে অনেক মজা পেলাম, ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

কোনটা রেখে কোনটা ভালো বলবো। সবগুলো অণু কবিতা এতো গভীর থেকে লিখেছেন দাদা একদম হার্টে লেগেছে।

মানুষ নাকি ? ওরা তো পশু, কারণ ওরা বস্তিতে থাকে,
মানুষ হলুম আমরা, যারা গাড়ি ঘোড়ায় চড়ি ।
কী বলো পাগলের মতো ? ওরাও মানুষ ? ওদেরও খিদে আছে ?
আমি ভাবতুম নোংরা কুকুর, ডাস্টবিন ঘেঁটে বেঁচে থাকে ।
পাঁচটি বছর পরে যখন ভোটের সময় আসে,
তখন শুধুই মানুষ ওরা অন্য সময় পশু ।

বাস্তবতা আসলে এমনি হয় দাদা। বড় বড় নেতারা ভোট দেয়ার বেলায় মানুষ মনে করে। আর যখন সে নেতা হয়ে যায় তখন সে আর কাউকে মানুষ মনে করে না। অথচ তাদের ভোটেই সে নির্বাচিত হয়েছে 🙂

Thank You for sharing...

 3 years ago 

কষ্ট লাগে। কেবল ভোটের সময়ই তাদের কিছু কদর। আর বাকী সময় অবহেলা।

এজন্য মাঝে মাঝে সমাজতান্ত্রিক কিছু ধারনা আমার ভাল লাগে। পুজিবাদে বস্তুবাদ নিয়ে আসে।

আমরা আজো ফাইব স্টারে যাই যেখানে পাশের রেল স্টেশনেই অনেকে দু বেলা কোনরকম খেয়ে খোলা আকাশের নিচেই শুয়ে পড়ে। ভাবলেই মনটা অশান্ত হয়ে যায়। কি করতে পারছি!!

 3 years ago 

তোমার শেয়ার করা কবিতা খুবই অসাধারণ হয়, দাদা। "ভীষণই অরাজনৈতিক" কবিতাটি তোমার অন্যান্য কবিতার মতোই অর্থবহ সুন্দর একটি কবিতা। প্রত্যেকটা কবিতা সম্পূর্ণভাবে একটি কবিতা থেকে অন্যটি ভিন্ন এবং বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ আলাদা । তোমার কবিতার মধ্যে আমরা প্রতিদিন নতুনত্ব কিছু খুজে পাই সব সময়। খুবই ভালো লাগে পড়ে। অনেক কিছু শিখতে পারি, অনেক কিছু জানতে পারি, অনেক কিছু বুঝতে পারি কবিতাগুলো পড়ে। অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর কবিতা আমাদের সাথে সবসময় শেয়ার করার জন্য। আজকের কবিতার এই বিশেষ লাইনগুলো আমার মন ছুঁয়ে গেছে।

মানুষ নাকি ? ওরা তো পশু, কারণ ওরা বস্তিতে থাকে,
মানুষ হলুম আমরা, যারা গাড়ি ঘোড়ায় চড়ি ।
কী বলো পাগলের মতো ? ওরাও মানুষ ? ওদেরও খিদে আছে ?
আমি ভাবতুম নোংরা কুকুর, ডাস্টবিন ঘেঁটে বেঁচে থাকে ।
পাঁচটি বছর পরে যখন ভোটের সময় আসে,
তখন শুধুই মানুষ ওরা অন্য সময় পশু ।

Thank You for sharing Your insights...

 3 years ago 

দাদা আপনার কবিতা পড়ে আমার ভীষণ ভালো লাগে আপনারএই কবিতায় সমাজের বিশৃঙ্খলা অনিয়মের বিষয়গুলো ফুটে উঠেছে। ধনীরা গরিবদের বারবার শোষন করছে। এই গরীব অসহায়দের নিয়ে রাজনীতি করছে শতশত নেতা রাজপথে তাদের কত স্বপ্ন দেখায় এইসব গরীব অসহায়দের নিয়ে ।কিন্তু দিন শেষে তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। আমাদের সমাজের উচ্চ স্তরের লোকজন বস্তিতে থাকা মানুষগুলোকে আসলে মানুষ মনে করে না তারা তাদের পোষা বিড়াল এর থেকেও নিকৃষ্ট মনে করে। এত সুন্দর একটি প্রতিবাদ মূলক কবিতা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Thank You for sharing Your insights...

 3 years ago 

মানুষ নাকি ? ওরা তো পশু, কারণ ওরা বস্তিতে থাকে,
মানুষ হলুম আমরা, যারা গাড়ি ঘোড়ায় চড়ি ।
কী বলো পাগলের মতো ? ওরাও মানুষ ? ওদেরও খিদে আছে ?
আমি ভাবতুম নোংরা কুকুর, ডাস্টবিন ঘেঁটে বেঁচে থাকে ।
পাঁচটি বছর পরে যখন ভোটের সময় আসে,
তখন শুধুই মানুষ ওরা অন্য সময় পশু ।

দাদা আপনার সবগুলো অনু কবিতার মধ্যে এই কবিতাটি এতটা বাস্তবমুখী এত চমৎকার ভাবে কবিতার ছন্দ গুলোকে আপনি ফুটিয়ে তুলেছেন পড়ে তো একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সত্যি দাদা খুবই বাস্তব মুখী কবিতার লাইনগুলো ছিল। আসলেই কিছু মানুষ আছে যারা মানুষকে মানুষ মনে করে না তাদের প্রয়োজনে শুধু তাদেরকে মানুষ হিসাবে সাময়িক গণ্য করেন। এদেরকে আমরা সবাই চিনি তারপরও কেন জানি আমরা এদের পিছনে দৌড়ায়। আমার কাছে বিষয়টা খুব খারাপ লাগে, তাই আমি এসব রাজনীতি মধ্যে নেই

Thank You for sharing...