ফোটোগ্রাফি পোস্ট - ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে আমরা তিনজন
রাখীর পরেরদিন । আগের রাতে ঘুমই হয়নি তেমন । ভোট দিতে দিতে ৪ টা । পরের দিন ভোরে উঠে সারাদিন ঘোরাঘুরির প্ল্যান আছে । তাও আটটায় উঠে পড়লুম । ফ্রেশ হয়েই অমনি ল্যাপটপ অন করে ভোট দিতে বসে গেলাম । ড্রাইভারকে পাঠিয়ে দিলাম সেই কাঁকিনাড়া, সজীব যেখানে এসে রয়েছে । সজীবের আসতে আসতে দেড় ঘন্টা লাগবে ধরে নিয়ে ভোট দেয়া স্টার্ট করলুম । তাও দু'ঘন্টা লেগে গেলো । প্রানপণে কোনোদিকে না তাকিয়ে ভোট দিয়ে গেলাম । এরপরে স্নান করে খেতে বসলুম ।
সারাদিন প্রচন্ড গরমে ঘোরাঘুরি করতে হবে । তাই প্রচুর মাছ, মাংস, তরিতরকারি থাকা সত্ত্বেও শুধু আলু ভাতে, ডাল আর একটি মাত্র ওমলেট দিয়ে প্রাতঃরাশ সমাধা করলুম । এরই মধ্যে নিলয় চলে এলো । কিন্তু, সজীব আর ড্রাইভারের কোনও পাত্তা নেই । ফোন করে জানলুম যে ব্যারাকপুর রোডে প্রচুর জ্যাম । আসতে আরো ১ ঘন্টা ।
যাই হোক এক ঘন্টা আর লাগলো না । চল্লিশ মিনিটের মধ্যেই ওরা চলে এলো । শুরু হলো আমাদের সারাদিন ব্যাপী পুরো কলকাতা চষে বেড়ানোর অভিযান । আমরা তিন জন - আমি, নিলয় আর সজীব । প্রথমেই গেলুম দক্ষিনেশ্বর মন্দিরে । সজীব পুজো দিলো, আমি আর নিলয় শুধু দর্শক হয়ে রইলুম । এরপরে মন্দির চত্বরে কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করেই সোজা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের গাড়ি হাঁকালুম আমরা ।
দক্ষিনেশ্বর থেকে ভিক্টোরিয়া অনেকটাই পথ । পথে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । তো যাই হোক ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর মেইন গেটের সামনে এসে যখন নামলুম তখন সূর্য মাঝ আকাশে আগুন ছড়াচ্ছে । দ্রুত টিকেট কেটে ঢুকে পড়লাম আমরা তিন জন । অনেক গুলো ছবি তুললাম আমরা । সজীব আর নিলয়েরও বেশ কিছু ফটো তুললাম ভিক্টোরিয়ার সাথে ।
আমি তো বহুবার এসেছি, নিলয়ও তাই । কিন্তু, সজীবের এই প্রথমবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দর্শন । স্বাভাবিকভাবেই তাই বেশ উত্তেজিত সে । বেশ হাসি ঠাট্টা চলতে লাগলো । তিনজন ছেলে আমরা, সাথে আর কেউ নেই । তাই, স্বাভাবিকভাবেই একটু হাসি ঠাট্টা ইয়ার্কি - এসব তো চলবেই । ঢুকে পড়লুম অবশেষে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অভ্যন্তরে ।
ঢুকেই বেশ অবাক হয়ে গেলাম । আমূল পরিবর্তন ভেতরে । আগে ছিল যত ব্রিটিশ আমলের নানান জিনিসের প্রদর্শনী, আর এখন শুধুই নেতাজি আর নেতাজি । পুরো ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এখন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মেমোরিয়াল । দারুন লাগলো বিষয়টি সত্যি । চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অজস্র নেতাজির ছবি, খবরের কাগজের কাটিং, চিঠিপত্র, ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং প্রজেক্টর দিয়ে দেওয়ালে ফেলা অসংখ্য ছোটবড় তথ্যচিত্র । এসব দেখে তো মাথা ঘুরে গেলো আমার ।
হাতে সময় একদমই কম । তাই প্রবল ইচ্ছে সত্ত্বেও দেখা সম্ভব হয়নি এসব । একটা আর্ট গ্যালারিতে অবশেষে খুঁজে পেলুম কিছু ব্রিটিশদের করা চিত্রকর্ম । ছোট, বড়, মাঝারি এবং দানবাকৃতির অসংখ্য আর্ট । কিছু ফোটো তুলে ফেললাম ঝটপট । এরপরে বিশাল এক একটা হলঘর খুব দ্রুত পেরিয়ে আমরা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর বাইরের পার্কে এসে পড়লুম ।
তিনজনে মিলে হাঁটতে বেরুলাম পার্কে । বিশাল লেক, ফোয়ারা আর অসংখ্য গাছগাছালির ছায়াঘেরা পথ দিয়ে হাঁটতে দারুন লাগছিলো সত্যি । মাঝে মাঝে গাছের আড়ালে একটু নির্জন বেঞ্চিতে ভালোবাসা রচিত হতে দেখলুম এক এক জোড়া কপোত কপোতীর । লজ্জায় আমাদের মুখই রাঙা হয়ে উঠলো ।
এরপরে ফেরার পালা । দুপুরের খাবার সময় হয়ে এলো । ড্রাইভারকে বললুম চীনা টাউনে নিয়ে যেতে । ওখানেই এক চাইনিজ রেস্টুরেন্টে দুপুরের লাঞ্চ সমাধা করলাম । সেখানে দারুন একটা মজার সময় কাটলো আমাদের । এরপরের গন্তব্য "সায়েন্স সিটি" । এটা আগামীকাল বলবো । আজ এ পর্যন্তই ।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনের গেটে নিলয় আর সজীব
তারিখ : ১২ অগাস্ট ২০২২
সময় : দুপুর ১ টা ৪৫ মিনিট
স্থান : ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
মহারানী ভিক্টোরিয়ার ব্রোঞ্জ মূর্তির সামনে আমরা । নীচে ব্রোঞ্জ নির্মিত রানীর শোভাযাত্রার একটি খন্ড দৃশ্য ।
তারিখ : ১২ অগাস্ট ২০২২
সময় : দুপুর ১ টা ৫৫ মিনিট
স্থান : ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের প্রধান তোরণ ।
তারিখ : ১২ অগাস্ট ২০২২
সময় : দুপুর ২ টা ০০ মিনিট
স্থান : ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অভ্যন্তরে নেতাজীর নানান স্মৃতিচিহ্ন
তারিখ : ১২ অগাস্ট ২০২২
সময় : দুপুর ২ টা ১৫ মিনিট
স্থান : ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অভ্যন্তরে সিলিং থেকে দেওয়ালের সর্বত্র অসংখ্য সব সূক্ষ দারুন কারুকার্য
তারিখ : ১২ অগাস্ট ২০২২
সময় : দুপুর ২ টা ১৫ মিনিট
স্থান : ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আর্ট গ্যালারি । অসংখ্য ছোট, বড়, মাঝারি এবং বৃহদাকার আর্ট ।
তারিখ : ১২ অগাস্ট ২০২২
সময় : দুপুর ২ টা ৪০ মিনিট
স্থান : ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ
পরিশিষ্ট
প্রতিদিন ২০০ ট্রন করে জমানো এক সপ্তাহ ধরে - ৬ষ্ঠ দিন (200 TRX daily for 7 consecutive days :: DAY 06)
টার্গেট ০৪ : ১,৪০০ ট্রন স্টেক করা
সময়সীমা : ১৪ অগাস্ট ২০২২ থেকে ২০ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত
তারিখ : ১৯ আগস্ট ২০২২
টাস্ক ৩৪ : ২০০ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
২০০ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : d21f11d9fd886ed7557b2b03921a20f60b612e845304760ddb3fcf6242af9882
টাস্ক ৩৪ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
god bless you
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
hi, i am new in steemit please support.
টেনিদার গল্পে অনেক পড়েছি এই জায়গা আর গড়ের মাঠের নাম।ইচ্ছা আছে ঘুরতে যাওয়ার।ধন্যবাদ দাদা দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
দাদা ঘুরতে গিয়েছেন তিনজনেই তবে সজীব একা পুজো দিল। আপনাদেরও পুজো দেওয়া উচিত ছিল। তবে এটা জেনে ভালো লাগলো ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অভ্যন্তরে ব্রিটিশ বাদে বর্তমানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মেমোরিয়াল। আরো বেশি ভালো লাগলো দেয়ালের তথ্যচিত্রগুলো কথা জেনে। যাই হোক মোটামুটি খুব ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর পোস্ট। আশা করি তিনজনে মিলে খুবই ইনজয় করেছেন রোদগরমের মধ্যেও, সময়টা বেশ আনন্দে কেটেছে।
ভিক্টোরিয়ার বাইরের ছবি আর ভেতরের ছবি সবগুলোই ভালো লাগছে। অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে। ৫বছর আগে লাস্ট গেছিলাম। কল্যাণী থেকে দুরত্বের কারণে আর যেতে মন চায় না। তবে অনেকক্ষেত্রে বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য উপযোগী পরিবেশ নয় মনে হয়েছে আমার।
দাদা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর কথা অনেক অনেক বার শুনেছি। দেখেছি হয়তো টিভিতে দুই একবার তবে সামনের অংশটুকু। কখনও ভেতরের অংশের ফটোগ্রাফি এত চমৎকারভাবে দেখা হয়নি। এটা জেনে বেশি ভালো লাগলো নেতাজি কে নিয়ে অনেক কিছু নতুনভাবে সংযোজিত হয়েছে। নেতাজিকে নিয়ে বেশ কয়েকটি টিভি সিরিয়াল আমি দেখেছিলাম। নেতাজির সংগ্রামী জীবনকে আমি সবসময় শ্রদ্ধা করি। যাইহোক সজীব দাদাকে নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত সময় কাটানোর মুহূর্ত গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনি ব্যস্ততার মাঝেও উনাকে সময় দিয়েছেন এটা উনার জন্য অনেক বড় পাওয়া। তবে বিশ্বাস করেন দাদা আপনার ড্রেসটা আজকে খুব ভালো লাগছে।
তিন জনের মাঝে শুধু সজীব ভাই চশমা ছাড়া এটা কিন্তু মিলিয়ে নিলে ভাল হত । যেদিকে তাকাই ছয় জোড়া আঁখি একই সাথে । গল্পে গল্পে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কথা অনেক বার শোনা হয়েছে । ছবিতে এত কাছ থেকে সম্ভবত এবারেই প্রথম দেখার সুযোগ হলো । আজকের পোস্ট, লেখার ভাষাটা কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে ।
তিনজনে আড্ডা গল্প ঘুরাঘুরিতে দারুণ একটা সময় পার করেছেন এটা বুঝতে পারছি ।
নেতাজীর ছবি ছাড়া অন্য নিদর্শন গুলো কিন্তু মিস করে গেলাম দাদা ।
আগামী দিনে "সায়েন্স সিটি" দেখার এবং জানার অপেক্ষায় রইলাম ।
Here in Nigeria, we say traffic jam reduces life span, but it didn't only do that, it still dismantles plans, in the sense that if you have planned and hour, it may turn to two hours and that already get things wrongly. Where traffic jam happens is a city where people lives most, just like Lagos Nigeria.
those pictures are nice and you look good as well
দাদা আমাদের সৌভাগ্য 🤗 আপনার জন্য আজ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল পুরোটা দেখতে পেলাম। সজীব দাদাকে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো ☺️ বেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন সবাই দেখলাম 🤗 আর প্রতিটি ছবি দূরদান্ত হয়েছে।
বাহ! তিনজন মিলে বেশ আনন্দ ফুর্তির মাধ্যমে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ঘুরাঘুরির যে আনন্দঘন মুহূর্তগুলো আমাদের মধ্যে শেয়ার করেছেন সত্যি দারুণ লেগেছে দাদা। আসলে এরকম ঘুরাঘুরির ইচ্ছা আমারও প্রবল, তবে সময় স্বল্পতায় সবকিছু কেমন যেন অকেজো করে রেখেছে আমাকে। যাই হোক কখনো যদি সুযোগ পাই অবশ্যই যাওয়ার চেষ্টা করব সেই সাথে আপনার সাথেও দেখা করব সজিবের মত আশা রাখি।