ফোটোগ্রাফি পোস্ট : "বাংলাদেশের পুজো -১২"steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

_7c798e9a-e2b9-4547-b516-caff09d16a86.jpg


জরাসন্ধ বধ । জরাসন্ধ ছিলেন কৃষ্ণের মামা কংসের শ্বশুর । কংস কৃষ্ণের হাতে নিহত হলে তিনি বারবার মথুরা আক্রমণ করেন । তাঁর আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে কৃষ্ণ রাজধানী মথুরা থেকে দ্বারকায় স্থানান্তরিত করেন । দ্বারকা ছিল একটি দ্বীপ নগরী । চারিদিকে সমুদ্র বেষ্ঠিত । তাই রাজধানী এখনে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ছিল । তারপরেও, কৃষ্ণ জরাসন্ধকে বিনাশ করে পথের কাঁটা সমূলে উৎপাটিত করার সুযোগ খুঁজতে লাগলেন । সুযোগ এসেও গেলো । জরাসন্ধ ছিল বিশাল এক মল্লযোদ্ধা, আবার মধ্যম পান্ডব ভীমও ছিলেন মল্লযুদ্ধে মহাবীর । কৃষ্ণের পরিকল্পনায় ভীমের সাথে জরাসন্ধের শুরু হলো প্রলয়ংকর মল্লযুদ্ধ । কিন্তু, জরাসন্ধ ছিলেন এক প্রকার অমর । তাই কোনোভাবেই ভীম তার সাথে এঁটে উঠতে পারছিলেন না । যতবার তাকে ভূমিতে আছড়ে ফেলা হয় ততবার যেন তার তেজ দ্বিগুন হয়ে যায় । এর পিছনে ছিল এক অদ্ভুত রহস্য । জরাসন্ধের জন্ম হয়েছিল ভারী অদ্ভুতভাবে । দুই মায়ের গর্ভে জন্ম তার । এক মায়ের গর্ভে অর্ধেক, আর এক মায়ের গর্ভে অর্ধেক । স্বভাবতই, জন্মের সময় জরাসন্ধ মৃত হন । তখন সেই দুই ভাবে বিভক্ত তার শরীরের দুটি খন্ড বনে ফেলে দেয়া হয় । জরা নামক এক রাক্ষসী সেই দুটি খন্ড জোড়া দিয়ে তাতে প্রাণদান করে । "সন্ধ" অর্থ জোড়া দেওয়া, সেই থেকে তার নাম জরাসন্ধ । কৃষ্ণ এটা জানতেন । তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এই ভাবে মল্লযুদ্ধে ভীম জরাসন্ধকে পরাজিত করতে পারবেন না । উল্টে, ভীম দীর্ঘক্ষণ লড়াই করে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ছিলেন । তখন, মলযুদ্ধের প্রাঙ্গনে এসে উপস্থিত হন কৃষ্ণ । তিনি একটি তালপত্রকে চিরে সেটা ভীমকে দেখান । মুহূর্তে ভীম বুঝতে পারেন জরাসন্ধের বধের উপায় । তিনি জরাসন্ধের উরুর উপর এক পা দিয়ে চেপে ধরে আরেকটা পা দুই হাত দিয়ে টেনে জরাসন্ধের শরীর লম্বালম্বি চিরে ফেলেন । এই ভাবে জরাসন্ধের বধ হয় ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৪৫ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।


দুঃশাসন বধ । দুর্যোধনের ভাই দুঃশাসন ছিল নারী লোভী, অসভ্য এবং দুরাচার । যুধিষ্ঠীর যখন পাশা খেলায় কৌরবদের কাছে রাজ্য, ভাই এবং দ্রৌপদীকে হারালেন তখন সভামধ্যে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করেন দুঃশাসন । দ্রৌপদীকে চুলের মুঠি ধরে ভুলুন্ঠিত করেন । এই অপমানে দ্রৌপদী দুঃশাসনের বুকের রক্ত দিয়ে নিজের চুল বাঁধবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন । যতদিন না তিনি দুঃশাসনের বুকের রক্ত দিয়ে চুল বাঁধতে না পারছেন ততদিন খোলা চুলে থাকেবন, কখনো চুল বাঁধবেন না । আর ভীম দুঃশাসনের বুক চিরে রক্তপান করবেন বলে এক ভীষণ প্রতিজ্ঞা করেন । অবশেষে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময় দুঃশাসনকে আক্রমণ ও পর্যুদস্ত করে ভীম দুঃশাসনের বুক চিরে তাজা রক্ত পান করেন । আর দৌপদী সেই রক্তে নিজের চুল রঞ্জিত করে চুল বাঁধলেন ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৪৫ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।


দুর্যোধন বধ । কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মূল হোতা ছিলেন দুর্যোধন । লক্ষ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণও তিনি । পঞ্চ পাণ্ডবদের অপমান, দুঃখ-কষ্টের মূল কারণ তিনিই । দ্রৌপদীকে সভা মধ্যে বস্ত্রহরণের মূল পরিকল্পনা তারই । তারই ইশারায় দুঃশাসন সভামধ্যে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করেন । যদিও কৃষ্ণ দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ আটকান এবং লজ্জা নিবারণ করেন । তদুপরি, দূর্যোধন দ্রৌপদীকে সভামধ্যে সবার সামনে নিজের নগ্ন উরু প্রদর্শন করে অশ্লীল ইঙ্গিত করেন । এই ভীষণ অপমানে দ্রৌপদী লজ্জায় দুঃখে কেঁদে ফেলেন ও তাঁর পঞ্চ স্বামীকে ভর্ৎসনা করেন । তখন ভীম দূর্যোধনের উরুভঙ্গ করবেন বলে এক ভীষণ প্রতিজ্ঞা করেন । দূর্যোধন তখন ভীষণ ভয় পেয়ে যান । কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে ভীম দুর্যোধন সহ গান্ধারীর শত পুত্রকে একাই হত্যা করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন । যখন যুদ্ধে সত্যি সত্যি ভীম একে একে দুর্যোধনের নিরানব্বই ভাইকে হত্যা করেন তখন দুর্যোধন ভীষণ ভয় পেয়ে যান । মাতা গান্ধারী তখন দুর্যোধনকে বলেন তাঁর সামনে এসে দাঁড়াতে । তিনি চোখের ফেট্টি খুলে তাঁর তেজোদীপ্ত পবিত্র দৃষ্টি দুর্যোধনের সর্বাঙ্গে বুলিয়ে দেবেন । এর ফলে তাঁর সর্বাঙ্গ লৌহ কঠিন ও অস্ত্র প্রতিরোধ্য হবে । দুর্যোধন মাতার নিকট সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে যেতে অস্বীকার করেন এবং একটি কলার পাতা দিয়ে কটিদেশ থেকে উরু অব্দি ঢেকে নিরাবরণ দেহে মাতার নিকট যান । ফলে কটিদেশ থেকে উরু অব্দি দুর্যোধন দুর্বল থাকেন, আর সকল অঙ্গ লৌহ কঠিন ও অস্ত্র প্রতিরোধ্য হয়ে যায় । আর এই কথা চতুর কৃষ্ণ জানতে পারেন । তাই, ভীমের সাথে দুর্যোধনের গদা যুদ্ধের সময় যখন ভীম কিছুতেই দুর্যোধনকে হারাতে পারছেন না তখন তিনি দুর্যোধনের উরুর দিকে ইঙ্গিত করে ভীমকে দুর্যোধনের উরুভঙ্গের প্রতিজ্ঞার কথা স্মরণ করিয়ে দেন । তখন ভীম গদার দুই ভীষণ আঘাতে দুর্যোধনের দুই উরু ভঙ্গ করেন । পরের দিন ভগ্ন উরু নিয়ে দুর্যোধনের মৃত্যু হয় ।
তারিখ : ২০ অক্টোবর, ২০২৩
সময় : সন্ধ্যা ৭ টা ৪৫ মিনিট
স্থান : শিকদারবাড়ি, বাগেরহাট, খুলনা, বাংলাদেশ ।


ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)


তারিখ : ০৮ নভেম্বর ২০২৩

টাস্ক ৪০৯ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : 39a653574d0ff39003ef92b9ef389cc34bacc28fec8a47df460860aa59720daa

টাস্ক ৪০৯ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

বাংলাদেশের পুজোতে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দাদা। সত্যি বলতেই আপনার ফটোগ্রাফিতে বোঝা যাচ্ছে অনেক চমৎকার ভাবে পুজো উদযাপন করেছেন। আর এই পুজোর সুবাদে আমরাও কিছু চমৎকার ফটোগ্রাফি দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ দাদা আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি।

 2 years ago 

দাদা সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফির মধ্যে দিয়ে তথ্য সমৃদ্ধ বর্ননায় ভীষণ ভালো লাগে বাংলাদেশের পুজোর ফটোগ্রাফি গুলো। আমার কাছে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো চমৎকার লেগেছে।সুন্দর বর্ননায় আরো আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে।ধন্যবাদ দাদা শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমাদের বাংলাদেশেও আজকাল পূজা মন্ডপ গুলো খুব সুন্দর করে সাজানো হয় । বিশেষ করে আমরা ফরিদপুর থাকতে একটা পূজা দেখেছিলাম সেটা ইন্ডিয়া থেকে লোকজন এসে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিল ভালো লেগেছিল । আপনার আজকের পোষ্টের মাধ্যমে জরাসন্ধের কাহিনীটি জানতে পারলাম । দুই মায়ের গর্ভে কিভাবে জন্মগ্রহণ করেছিল সেটা জানা ছিল না আজকে জেনে নিলাম । পরবর্তীতে তাকে জোড়া দেওয়া হয়েছিল আবার পা ধরে টান দিয়ে দুই খন্ড করে তার মৃত্যু ঘটানো হলো ঘটনাটি পড়ে ভালো লাগলো । দ্রৌপদীর কাহিনীটিও রামায়নে দেখেছি খুব ভালো লেগেছিল পড়ে । যুদ্ধ শেষে চুল বেঁধেছিল সেটাও দেখেছিলাম । আজকে আবার অনেকদিন পরে কাহিনীটি পড়ে মনে পড়ে গেল ।

 2 years ago 

দাদা আজও দেখছি পুজোর ফটোগ্রাফির সাথে সাথে বেশ সুন্দর সুন্দর কিছু গল্প জুড়ে দিয়েছেন আমাদের মাঝে। সত্যি বলতে দাদা এখানে এমন কিছু তথ্য সম্বলিত গল্প আপনি মেয়ার করেন যে হয়তো নিজের অজান্তে সে গুলো আমার পড়া হয়ে উঠে নি। আর আপনার এই পোস্ট গুলো হতে সমস্ত বিষয় গুলো জানতে পারি। ধন্যবাদ দাদা আমাদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

দাদা দেখতে দেখতে এই সিরিজের ১২ তম পর্ব শেয়ার করে ফেলেছেন আমাদের সাথে। এই পর্বেও চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। সেই সাথে ইতিহাস সম্পর্কে অজানা অনেক তথ্য জানতে পারলাম। যাইহোক এতো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

বাংলাদেশেে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দাদা। বাংলাদেশে পুজোর ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর লাগছে দাদা সেই সাথে বিস্তারিত বিবরণ পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 2 years ago 

বেশ দারুণ দাদা প্রথম দৃশ্যটা, চমৎকারভাবে ডেকোরেশন করা হয়েছে। বাংলাদেশের মাঝেও এতো সুন্দর ডেকোরেশন করা হয় সেটা আপনার ফটোগ্রাফি না দেখলে জানতামই না। তবে দৃশ্যের সাথে গল্পগুলো পড়ে ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ

 2 years ago 

মলযুদ্ধের প্রাঙ্গনে এসে উপস্থিত হন কৃষ্ণ । তিনি একটি তালপত্রকে চিরে সেটা ভীমকে দেখান ।

আর এই কথা চতুর কৃষ্ণ জানতে পারেন । তাই, ভীমের সাথে দুর্যোধনের গদা যুদ্ধের সময় যখন ভীম কিছুতেই দুর্যোধনকে হারাতে পারছেন না তখন তিনি দুর্যোধনের উরুর দিকে ইঙ্গিত করে ভীমকে দুর্যোধনের উরুভঙ্গের প্রতিজ্ঞার কথা স্মরণ করিয়ে দেন । তখন ভীম গদার দুই ভীষণ আঘাতে দুর্যোধনের দুই উরু ভঙ্গ করেন । পরের দিন ভগ্ন উরু নিয়ে দুর্যোধনের মৃত্যু হয় ।

এই দুটো ঘটনাই বেশ ভালো লেগেছে দাদা এবং কৃষ্ণের বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করতেই হয়। এবারের পর্বটিও বেশ ভালো লেগেছে ভাই।

শুভেচ্ছা রইল