NFT (Non fungible Token) কী ? এর ভবিষ্যৎ কী? বিস্তারিত আলোচনা

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে NFT নিয়ে কিছু তথ্য শেয়ার করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।

Source

NFT বা নন ফাঞ্জিবল টোকেন বর্তমান সময়ের প্রযুক্তি জগতের এক বৈপ্লবিক আবিষ্কার। এটি এমন একটি ডিজিটাল সম্পদ । ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি হওয়ায় এটি একবার যার নামে রেজিস্টার হয়, তা চাইলেও অন্য কেউ কপি করতে পারে না বা নকল বানিয়ে নিতে পারে না এই কারণেই একে বলা হয় নন-ফাঞ্জিবল, অর্থাৎ অপরিবর্তনীয় ।এই টোকেনগুলোর সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, প্রতিটা NFT একদম আলাদা। আপনি হয়তো ভাবছেন, আমি তো এই ছবিটা ডাউনলোড করতে পারি , কিন্তু NFT আসলে সেই ছবির মালিকানা প্রমাণ করে।

এটা এমন, যেন আপনি কারও বাড়ির দেয়ালে ঝুলানো একটা ছবি দেখছেন, কিন্তু আসল মালিক সে না মালিক অন্য কেউ। NFT হচ্ছে সেই মালিকানার ডিজিটাল কাগজ, যেটা ব্লকচেইনের মাধ্যমে নিরাপদে রাখা হয়। ফলে আপনি শুধু ছবি না, তার আসল মালিকানা কিনছেন।NFT মূলত আর্ট, সংগীত, ভিডিও এবং অনেক ধরনেওওর ডিজিটাল সামগ্রীর ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে। বিভিন্ন সময় বিখ্যাত ব্যক্তিদের আঁকা ডিজিটাল ছবি বা সংগীত NFT হিসেবে নিলামে বিক্রি হয়েছে লক্ষ লক্ষ ডলারে। এগুলোর জনপ্রিয়তা এতটাই বেড়েছে যে অনেক বড় বড় ব্র্যান্ড, যেমন Nike, Adidas, Coca Cola পর্যন্ত NFT বাজারে প্রবেশ করেছে।

তারা নিজেদের ডিজিটাল পণ্য তৈরি করছে, যা মানুষ সংগ্রহ করছে, বিক্রি করছে কিংবা গেমিং বা মেটাভার্সে ব্যবহার করছে।NFT শুধু আর্ট জগতেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি ধীরে ধীরে রিয়েল এস্টেট, শিক্ষার সার্টিফিকেট, আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন, এমনকি চিকিৎসার ইতিহাস সংরক্ষণের কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে। একজন রোগীর চিকিৎসা ইতিহাস যদি একটি এনক্রিপ্টেড NFT এর মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়, তাহলে তা অন্য কোথাও ব্যবহার করতে চাইলে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে রোগীর হাতে।এটা আসলেই একটা মজার ব্যাপার।তবে এই বিপ্লবী প্রযুক্তি নিয়ে যেমন আগ্রহ আছে, তেমনি আছে সমালোচনা।

অনেকে মনে করেন, NFT শুধু ধনী মানুষের বিলাসিতা বা এক ধরনের হাইপ। আর্থিক দিক থেকে কিছু প্রকল্পে জালিয়াতি হয়েছে, অনেকে হঠাৎ করে দাম পড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আবার পরিবেশগত দিক থেকেও কিছু সমালোচনা রয়েছে, কারণ অনেক NFT মিন্টিং এ উচ্চ পরিমাণে টাকা খরচ করে। কিন্তু হঠাৎ করে এর দাম পড়ে যাওয়ার ও অনেক বেশি চান্স থাকে।NFT এর ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশ্লেষকদের মতানৈক্য থাকলেও, প্রযুক্তির দুনিয়ায় এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এটি শুধু একটি ট্রেন্ড নয়, বরং ভবিষ্যতের একটি সম্ভাবনাময় ভিত্তি।

যেভাবে ইন্টারনেট প্রথমদিকে শুধু ইমেইল বা ওয়েবপেজে সীমাবদ্ধ ছিল, পরে সেটাই হয়ে দাঁড়ায় সোশ্যাল মিডিয়া, ই-কমার্স, ভিডিও ও দৈনন্দিন ব্যবহারের অংশ। NFT ঠিক তেমনি এক সম্ভাবনা যা ধীরে ধীরে আরও গভীরভাবে আমাদের জীবনে জড়িয়ে পড়বে।NFT আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে, ডিজিটাল দুনিয়াও মালিকানার দাবিতে বাস্তব জগতের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। সৃষ্টিশীল মানুষদের জন্য এটি একটি নতুন প্রযুক্তি। যে শিল্পী আগে শুধু লোকাল গ্যালারিতে ছবি বিক্রি করতে পারতেন, এখন তিনি বিশ্বব্যাপী নিজের কাজ বিক্রি করতে পারছেন, সেইও একটি NFT রূপে।

NFT হয়তো এখনো অনেকের কাছে ধোঁয়াশা, কিন্তু ঠিক যেমন করে ইন্টারনেট ধীরে ধীরে জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে, তেমনই NFT ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ডিজিটাল অ্যাসেট হিসেবে গড়ে উঠবে।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।