স্মৃতিচারণ : আমার শৈশব স্মৃতিতে মেহগনি ফল
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
মঙ্গলবার, ১৮ ই মার্চ ২০২৫ ইং
আপনারা যারা গ্ৰাম এলাকার মধ্যে বসবাস করে থাকেন তারা হয়তো প্রত্যেকেই এই মেহগনি ফলের সাথে পরিচিত। মেহগনি গাছ গ্ৰাম এলাকার মধ্যে এক অন্যতম গাছ। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের গ্ৰাম এলাকা গুলোর মধ্যে এই মেহগনি ফলের গাছ রয়েছে। বিশেষ করে এই গাছ গুলো রাস্তার দুই ধারে লাগানো হয়। এছাড়া ও গ্ৰামের অনেক মানুষ এই মেহগনি গাছ গুলো বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য বাড়ির আশেপাশে লাগিয়ে থাকেন। বেশ কয়েক বছর আগে আমাদের বাড়ির আঙিনায় এই মেহগনি ফলের গাছ ছিল। কিন্তু বর্তমান তা আর নেই। আসলে এই মেহগনি ফল কে নিয়ে আমার অনেক শৈশব স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, যে স্মৃতি গুলো কখনোই ভোলার মতো নয়।
যাইহোক, প্রতি বছর বসন্ত কালের শুরুতে এই ফল গুলো গাছ গুলো গাছ থেকে ঝরে পড়ে যায়। এই ফল গুলো দেখতে কিছুটা নারকেল এর মতোই। কিন্তু এর ভিতরে অনেক গুলো ফল থাকে। যখন এই ফল গুলো পরিপক্ক হয়ে যায়, তখন এই ফল গুলো ফেটে ফেটে ফলের বিচি গুলো মাটিতে পড়ে যায়। ছোট বেলায় আমাদের বাড়ির আঙিনায় এরকম মেহগনি ফলের গাছ ছিল। এরকম বসন্ত কালের শুরুতে এই ফল গুলো ফেটে ফেটে বিচি গুলো পড়ে আমাদের আঙিনা একদম ভর্তি হয়ে যেত। আমার বাড়ির পাশেই আমার এক চাচাত ভাইয়ের বাড়ি। আমরা ছোট বেলা থেকেই একসাথে চলাফেরা করতাম।
বসন্ত কালে যখন আমাদের বাড়ির আঙিনায় এই মেহগনি ফলের বিচি গুলো পড়তো, তখন আমি এবং আমার চাচাতো ভাই সহ এই ফল গুলো কুড়িয়ে কুড়িয়ে বস্তা ভর্তি করে রাখতাম। আমি আমার আমার চাচাতো ভাই সহ এই ফলের বিচি গুলো কুড়ানোর প্রতিযোগিতা করতাম। তখন সে আমার বাসায় সব সময় ছিল। একসাথেই খেলা ধুলা করছিলাম।তো আমরা দুজনেই আলাদাভাবে এই ফল গুলো কুড়িয়ে কুড়িয়ে বস্তা ভর্তি করতাম।আর আপনারা সকলেই অবগত আছেন যে, বসন্ত কালে ঝিরঝির করে বাতাস বয়।আর এই বাতাসের সাথে আমাদের মেহগনি গাছের ফল গুলো ঝড়িয়ে পড়ে।আর আমরা সেই সাথে ফল গুলো কুড়িয়ে কুড়িয়ে রাখতাম।
সিজন শেষে যখন মেহগনি ফল গুলো শেষ হয়ে যায়, তখন আমাদের এলাকার মধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে কিছু সংখ্যক মানুষ এসে এই মেহগনি ফল গুলো কিনে নিয়ে যেত।তো আমি এবং আমার চাচাতো ভাই সহ একবার প্রায় তিন বস্তা সম পরিমাণ মেহগনি ফল সংগ্রহ করেছিলাম।তো একদিন হঠাৎ করে মেহগনি গাছের ফল কেনার জন্য আমাদের গ্ৰামের মধ্যে বেশ কয়েকজন লোক আসে।আমি এবং আমার চাচাতো ভাই সহ আমরা আমাদের সংগ্রহকৃত ফল গুলো তাদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলাম। তারা আমাদের কে তিন বস্তা মেহগনি ফলের দাম তখন প্রায় পাঁচশত টাকার মতো দিয়েছিল।
আসলে তখনকার দিনে এই পাঁচশত টাকার মূল্য অনেক বেশি ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে পাঁচশ টাকার তেমন একটা মূল্য নেই। তখন আমরা দুজন ওই পাঁচশ টাকা দিয়ে চলে গিয়েছিলাম রংপুর সুপার মার্কেটের মধ্যে। সেখানে গিয়ে আমরা বেশ কিছু জিনিস পত্র কেনাকাটা করেছিলাম। আসলে এই সব স্মৃতি আমার সারা জীবন মনে থাকবে। আসলে এই সব স্মৃতি কখনো ভোলার মতো নয়।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
ডেইলি টাস্ক বাসায় গিয়ে পূরণ করবো ✅।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মেহগনি ফলকে ঘিরে শৈশবের স্মৃতিচারণ সত্যিই মন ছুঁয়ে গেল।ছোটবেলার সেই নিষ্পাপ আনন্দ, প্রতিযোগিতা, আর প্রথম উপার্জনের উচ্ছ্বাস সবকিছুই যেন এক টুকরো সোনালী সময়। এমন স্মৃতি সত্যিই অমূল্য, যা আজও হৃদয়ে উজ্জ্বল হয়ে থাকে। দারুণ স্মৃতিগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।