নাইস ভিউ [বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত]
হ্যালো বন্ধুরা
কেমন আছেন সবাই ? আজ আমি একটা মুভি রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি আপনাদের সাথে। এই মুভিটি বাস্তব কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত একটি চাইনিজ সিনেমা। ছবিটির মধ্যে কোন রোমান্স কোন অ্যাকশন সিন কিছুই নেই। তবে মুভিটি দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন মুভিটি আসলেই অনেক সুন্দর।
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত পোস্টার
মুভি সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ-
নাম: নাইস ভিউ
পরিচালক: Wen Muye
দেশ: চায়না
মুক্তি: ১ ফেব্রুয়ারি , ২০২২
ভাষা: Mandarin
বক্স অফিস : $২২১ মিলিয়ন
তথ্যগুলো Wikipedia থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে
কাস্ট-
নং | বাস্তব নাম | চরিত্রে |
---|---|---|
১ | Jackson Yee | Jing Hao |
২ | Tian Yu | Liang Yongcheng |
৩ | Chen Halin | Jing Tong |
৪ | Qi Xi | Wang Chunmei |
প্লট/ স্টোরিলাইনঃ-
সিনেমার প্রথমেই জিনহাও কে দেখানো হয় যার একটা ফোন রিপেয়ারিং এর দোকান আছে। তার সংসারে শুধুমাত্র তার ছোট বোন আছে। তার মা অনেক আগেই একটা কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। আর সেই সেম অসুখটা তার বোনের মধ্যেও আছে। তোর বোনের অপারেশন করার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন কিন্তু জিনহাও একটা ছোট দোকান চালাতো । তার পক্ষে এত টাকা ম্যানেজ করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু তার মায়ের মৃত্যুর সময় তার মাকে জিনহাও কথা দিয়েছিল যে সারাজীবন তার ছোট বোনকে সে দেখেশুনে রাখবে।
জিনহাও খুবই চিন্তিত ছিল কারণ এত টাকা ম্যানেজ করা তার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব ছিল না। হঠাৎ এক সময় জিনহাও এর ফোনে তার বন্ধুর কল আসে। তার বন্ধু তার সাথে জরুরী দেখা করতে বলে। জিনহাও তার বন্ধুর ফোন পেয়ে তার সাথে দেখা করতে চলে যায়। এরপর জিনহাও এর বন্ধু জিনহাওকে একটা ফ্যাক্টরিতে নিয়ে গিয়ে বিশাল বড় একটা কার্টুনের গোডাউন দেখায়। সেখানে অনেক অনেক পুরাতন ফোন ছিল। যেগুলোর কোন মালিক ছিল না। এগুলোর মালিকের জেল হয়েছে এবং সে এখন জেলে বন্দী আছে। এজন্য এগুলোর দায়িত্ব জিনহাও এর বন্ধুর উপর দিয়ে দেয়া হয়েছে বিক্রি করার জন্য। এখন জিনহাও এর বন্ধু এক লক্ষ টাকার বিনিময় সেগুলো সেল করে দেবে। জিনহাওকে ওর বন্ধু অফার দেয় যে তুমি ১ লক্ষ টাকা দিয়ে সব কিছু নিয়ে নাও। তুমি তো ফোন রিপেয়ারিং এর কাজ করো তুমি এগুলো সেরে সুরে সেল করতে পারবে। এই প্রস্তাবে জিনহাও রাজি হয়ে যায়।
পরে এসব পুরাতন ফোনগুলো তার নিজের দোকানে নিয়ে এসে ধীরে ধীরে ওগুলো সারাই করতে থাকে। জিনহাও হিসাব করে দেখলো প্রত্যেকটা ফোন যদি সে সারাই করে বিক্রি করতে পারে তাহলে তার মোট ১০ লক্ষ টাকা লাভ হবে। এতে তার বোনের চিকিৎসা হবে এবং সে বড় একটা দোকান দিতে পারবে। তাদের আর কোন দুঃখ থাকবে না। এই ভেবে জিনহাও অনেক খুশি ছিল। কিন্তু জিনহাও অনেক বড় একটা দুঃসংবাদ শুনতে পায় খুব শীঘ্রই। সরকার থেকে ঘোষণা দেয়া হয় আর কেউ কখন থেকে পুরাতন ফোন কিনতে বা বিক্রি করতে পারবে না। এই নিউজ শুনে ওর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। সে এমনি অনেক কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করতেছে এরপর আবার এতো বড়ো একটা ধাক্কা। জিনহাও যে এক লক্ষ টাকা দিয়ে ফোনগুলো কিনলো, সে টাকাটা ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের প্রেসার রয়েছে তার মাথার উপর।
অনেক চিন্তা ভাবনা করার পর জিনহাও একটা বুদ্ধি বের করে। এই ফোনগুলো যে কোম্পানির সেই কোম্পানির ম্যানেজারের কাছে যায়। ম্যানেজারের কাছে গিয়ে রিকোয়েস্ট করে যে পুরাতন ফোনের পার্টসগুলো যদি আপনারা নিয়ে নেন তাহলে আপনারা এই পার্টস ব্যবহার করে রিফারবিসড ফোনে লাগাতে পারবেন। এতে আপনাদের খুব সহজেই অনেক লাভ হবে। এরপর ওই ম্যানেজার জিনহাও কে বলে ওই পুরনো ফোনের পার্টস গুলো যে ভালো আছে সেটার প্রমাণ দাও। এরপর জিনহাও কিছু পার্টস টেস্টিং হাউসে নিয়ে যায়। সেখান থেকে টেস্ট করার পর দেখতে পায় প্রত্যেকটা পার্টসই অনেক ভালো আছে। নতুন পার্টস এর মতই পারফরম্যান্স। এরপর সেই রিপোর্টটা জিনহাও নিয়ে এসে ওই ম্যানেজারকে দেখায়। কিন্তু ম্যানেজার তখন আর কোন সাড়া দেয় না। এতে জিনহাও খুব কষ্ট পায়। এরপর জিনহাও ওই কোম্পানির মালিকের সাথে দেখা করার আপ্রাণ চেষ্টা করে। কিন্তু তেমন কোনো সুযোগ পায় না। অনেক চেষ্টা করার পর ওই কোম্পানির মালিকের সাথে ১০ মিনিট কথা বলার সুযোগ পায়। অনেক রিকোয়েস্ট করার পর মালিক যখন কথা বলতে চায় তখন জিনহাও তার সবকিছু বুঝিয়ে বলে। তখন ওই মালিক বলে যে আমরা তোমাকে অগ্রিম টাকা দিতে পারব না। তুমি যদি সত্যিই এটা করতে পারো তাহলে করে নিয়ে আসো আগে। তিন মাস সময় হাতে আছে তোমার জন্য।
এই অফার পেয়ে জিনহাও খুবই খুশি হয়। এরপর জিনহাও বাসায় আসে নতুন একটা ফ্যাক্টরি সাইজের ঘর ভাড়া নেয়। এখানে বলে রাখি জিনহাও এর আগের দোকানপাট সব কিছুই কেরে নেয়া হয়েছে। সবকিছুই ব্যাংকের লোনের কারণে তারা এসে নিয়ে গেছে। কারণ জিনহাও লোন পরিশোধ করতে পারেনি। আর এদিকে নিজের ঘরেও থাকতে পারছিলো না কারণ ভাড়া দিতে পারেনি গত ৩ মাস। এজন্য ফ্যাক্টরিতে থাকতে হতো। এখন কাজ করার জন্য ফ্যাক্টরিতে তো অনেকগুলো কর্মচারী প্রয়োজন। জিনহাও কর্মচারীর হায়ার করার জন্য একটা প্ল্যান করে। কিছু প্লাটুন নিয়ে ঘুরে বেড়াতো। লেখা থাকতো এই কোম্পানিতে কেউ নিস্বার্থভাবে কাজ করতে পারবে কিনা। যদি পারে তবে সবাই একসাথে রিক্স নিতে হবে। সাকসেস হলে সবাই হবে। এই সর্ত নিয়ে কেউ কাজ করতে পারবে কিনা। এরপর খুবই ভালো মনের কিছু ভালো ব্যাকগ্রাউন্ডের লোক খুজে পায়। তাদের অতীত অনেক ভাল ছিল। বিভিন্ন কারণে তারা আজ পথে পথে ঘুরছে।
জিনহাও এরকম কিছু মানুষ ম্যানেজ করে কোম্পানির কাজ শুরু করে। কিন্তু কম্পানির ওই ঘরের বেতন পরিশোধ করতে পারছিল না। এজন্য ওখান থেকে ওদের বের করে দেওয়া হয়। এরপর কর্মচারীদের বাড়িতে গিয়ে তারা রাতদিন কাজ করতে থাকে। এদিকে জিনহাও তার কর্মচারীদের বাড়িতেই রাত যাপন করত তার ছোট বোনের নিয়ে। কারণ ওদের থাকার কোন জায়গা ছিল না। এভাবে করতে করতে তারা অনেক অনেক পার্টস ঠিকঠাক করে কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে। এরপর কোম্পানি সেগুলো চেক করে ফলাফল জানাবে বলে তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলে।
জিনহাও ও তার সব কর্মচারীরা সবাই বাইরে অপেক্ষা করছিল। কিছুক্ষন পর ফলাফল আসে এবং তাদেরকে অভিনন্দন জানানো হয় আর কোম্পানিতে দুই বছরের জন্য কন্ট্রাক্ট করে পার্টস সরবরাহ করতে। আর এভাবেই জিনহাও অনেক উপরে উঠে যায়। পরবর্তীতে জিনহাও নিজেই একটা পার্টস তৈরীর কারখানা বানিয়ে ফেলে। সে এখন একজন বড় মাপের শিল্পপতি। আর চায়নার একটা বাস্তব ঘটনা। যাইহোক রিভিউ কেমন লাগলো জানাবেন সবাই। ধন্যবাদ।
মুভি ট্রেইলারঃ-
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

বাস্তব ঘটনা শুনে সত্যিই অবাক হলাম। আসলে সকল সফলবান লোকদের পিছনে এমন কোন না কোন ঘটনা রয়েছে। তেমনি জিনহাও এর সাফল্যের কথা শুনে খুবই ভালো লাগলো। আসলে ও ওর চেষ্টা চালিয়ে গেছে। সেজন্যে সফল হয়েছে। যদি সে হতাশ হয়ে চুপ করে থাকতো তাহলে সে আজকে এত বড় শিল্পবতী হতে পারত না।
বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ছবিগুলো বেশ চমৎকার হয়। কোম্পানিটার মালিকের সাথে ১০ মিনিটের কথাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল জিনহাওয়ের জন্য। জিনহাওয়ের প্লাটুন নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সিদ্ধান্তটা সত্যি অসাধারণ ছিল।
কোন কর্মই মানুষকে ছোট করেনা বরং কর্মই মানুষকে বড় করে তোলে। যাই হোক জিনহাও এখন কোটিপতি শুনে ভালো লাগলো।আপনার রিভিউটি বেশ চমৎকার ছিল।
জিনহাও এর সাফল্য দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। তিনি পরিশ্রম করেছেন এবং সফলতা অর্জন করেছেন। আসলে পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না। তার মনোবল শক্ত ছিল এবং নিজের পরিশ্রমের জোরেই তিনি আজ সফল হয়েছেন। চায়না মুভি সাধারণত দেখা হয় না। তবে আপনার শেয়ার করা রিভিউটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আসলে এধরনের মুভি রিভিউ পড়লে বা দেখলে ভালো কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। কারণ প্রত্যেকটি সফলতার পিছনে অনেক পরিশ্রমের গল্প লুকিয়ে থাকে। যেগুলো আমাদের সকলকেই অনুপ্রাণিত করে।
ভাইয়া এ ধরনের চায়না মুভিগুলো কখনো দেখা হয় না। তবে এ ধরনের চায়না মুভি গুলো দেখার ইচ্ছে আমার আছে।নাইস ভিউ এর রিভিউটি পরে আরো একবার জানতে পারলাম যে পরিশ্রম করলে সে পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না। উক্ত মুভিতে জিনহাও এর সাফল্য ছিল সত্যিই অতি চমৎকার। অসাধারণ একটি মুভি রিভিউ আমাদের উপহার দেয়ার জন্য প্রিয় ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাহ অসাধারণ একটি মুভির কাহিনী পড়লাম।এই মুভিটা যেহেতু বাস্তব ঘটনা।তাই এর থেকে শিক্ষণীয় অনেক কিছু রয়েছে।যেমন- কিভাবে একজন মানুষ একদম দরিদ্র থেকে ধনী হয়ে যায়। আবার অনেক বার বড় বড় ধাক্কা খাওয়ার পরেও সে চেষ্টা চালিয়ে যায় এবং সফল হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর এই মুভি রিভিউটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন এবং অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
মুভির কাহিনীটা সত্যি ভালো লাগলো,আর এই বাস্তব কাহিনী গুলোকে মুভিতে পরিণত করলে সেটা দেখার একটা আলাদা ইন্টারেষ্টিং কাজ করে। তবে সত্যি বলতে চীনাদের এই ধরণের দক্ষতার জন্যেই আজ তারা অনেক এগিয়ে।
আসলে রিভিউ ভালো হলে পোস্ট পড়তেও আলাদা একটা টান কাজ করে ভাই। সত্যি দারুণ রিভিউ করেছেন। আমি রিভিউ পড়ে মনে হয়েছে যে পুরো মুভি আমি দেখে ফেলেছি। ছোট লেখার মাঝে পুরো মুভিটাকে ফুটিয়ে তুলেছেন ভাই।
বেশ মোটিভেটিং রিয়াল ইন্সিডেন্ট।অনেকগুলো ভালো মনের পলিশ্ড ব্রেন যখন এক হয় তখন পজেটিভ রেভেল্যুশন আসতে বাধ্য। শুধু ইচ্ছে শক্তি প্রবল থাকতে হবে।জীবনমুখী কাহিনী।