আমাদের এই সমাজ মাঝে অনেক বন্ধু-বান্ধব থাকে। এই বন্ধুদের নিয়ে যেন আমাদের পথচলা। আসলে বন্ধু ছাড়া লাইফ কখনোই আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় না। বন্ধুদের সাথে সময় পার করলে জীবনের আনন্দ হাসি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে প্রকৃত বন্ধুরা সবসময় বিপদে-আপদে এবং সুখের সময়ও পাশে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু বন্ধু রয়েছে যে বন্ধুগুলো শুধু সুখের সময় থাকবে। তারা দুঃখের সময় থাকবে না। এই বন্ধুগুলো আমাদের প্রকৃত বন্ধু নয়। যারা দুঃখের সময় পাশে থাকে বন্ধু সাহায্য এগিয়ে আসে তারাই যেন প্রকৃত বন্ধু। তাইতো সমাজে প্রকৃত বন্ধুর গুরুত্ব অপরিসীম। আর এই বন্ধুগুলো ছাড়াও জীবন কখনোই আনন্দ হাসি খুঁজে পাওয়া যায় না।

আমাদের সমাজে এক বড় ভাই রয়েছে, তার নাম রতন আর এই রতন ভাই বন্ধু নাম ছিল সুজন। তারাও খুবই ভালো বন্ধু ছিল। তারা হাই স্কুল জীবনে একসাথে পড়াশোনা করেছে এবং কলেজেও একসাথে পড়াশোনা করেছে। তাদের মধ্যে কখনোই ঝগড়া মারামারি হয়নি। তারা সবাই প্রকৃত বন্ধুর মতনই আচরণ করত। গ্রামের সবাই তাদেরকে অন্যরকম চোখে দেখতো।এই বন্ধু এত ভালো ব্যবহার করতে যা বলার মতো না। তবে সুজন ভাই বিদেশ চলে যায়। আর এদিকে রতন ভাই দেশে এই ব্যবসা বাণিজ্য করতে থাকে। রতন ভাইয়ের ব্যবসা অনেক ভালো চলে। এসে অনেক মানুষের সাথে ওঠাবসা করে। তার জন্য বন্ধুর অভাব হয় না। সকলেই তার সাথে ভালো ব্যবহার এবং অনেক আনন্দের সাথে সেই দিনগুলো পার করতে থাকে।

রতন ভাই দেশে অনেক বড় একটি ব্যবসার সাথে জড়িয়ে যায়। আর তার অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। এদিকে সকল টাকা লোন নিয়ে সে ব্যবসা শুরু করে। তবে কিছুদিন ব্যবসা চালানোর পরে এবং তার আশেপাশে যেগুলো পরিচিত লোক ছিল তারা তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। যার কারণে ব্যবসার অনেক লস হয়ে যায়। আর এই ব্যবসায় লোস হওয়ার কারণে তার অনেক চিন্তাভাবনা মাথায় আসে এবং রতন ভাই যে ব্যাংক থেকে লোন করেছিল এই লোনের বার বার চাপ দিতে থাকে। এদিকে মানসিকভাবে রতন ভাই একদম শেষ হয়ে যায়। সব সময় তার চিন্তা ভাবনা এই টাকা নিয়ে।

রতন ভাইয়ের এই ব্যবসা যখন ভালো চলতেছিলো,তখন তার অনেক বন্ধু জোগাড় হয়েছিল। তাকে অনেক ভালোবাসতো তার সাথে সবসময় থাকতো, এই বন্ধুগুলোর কাছে রতন ভাই গিয়ে তারা সমস্যার কথা বলে। ব্যাংকের ঋণের কথা বলে যে তাকে কিছু অর্থ দিয়ে আপাতত এই ব্যাংকের লোনটা পরিশোধ করে দিলে সে অনেক উপকৃত হবে। কিন্তু তার আশেপাশে যে বন্ধুগুলো তার সুখের সময় পাশে ছিল। তারা কেউই তার পাশে দাঁড়ায় না। তাকে সাহায্য করতে আসে না, এদিকে রতন ভাই নানার টেনশনে চিন্তা ভাবনায় দিন পার করতে থাকে। এবং সে যেন চারিদিকে অন্ধকার দেখতে থাকে।

রতন ভাই কোথায় কি করবে ভেবেই পাচ্ছিলো না। অনেকের কাছে সে সাহায্য চেয়েছে।কিন্তু পায়নি। তার আত্মীয়-স্বজন যারা তার কাছ থেকে সুবিধা নিতো, যখন ব্যবসা ভালো চলতো তার কাছ থেকে অনেক টাকা ধার নিতো। সেই টাকা চাইতে গেলেও তার সাথে এখন খারাপ ব্যবহার করে। আসলে সুখের সময় সকল আত্মীয়-স্বজনরাও পাশে থাকে দুঃখের সময় কেউই পাশে থাকতে চায় না। রতন ভাই চারিদিক থেকে যেন হতাশা নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা করে থাকে। সে কিভাবে কি করবে এটাই যেন ভেবে পাচ্ছি না। হঠাৎ তখন তার বন্ধু সুজনের কথা মনে পড়ে যায়।রতন ভাইয়ের যে তা প্রকৃত বন্ধু ছিল সুজন, তখন রতন ভাই সুজন ভাই সাথে কথা বলতে চাইলো।

সুজন ছিল রতনের প্রকৃত বন্ধু। যার কারণে সুজন ভাই রতনের সকল ব্যবসা-বাণিজ্যের খোঁজ খবর আগে থেকে নিত। তার আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে কিংবা অন্য বন্ধুদের মাধ্যমে। একদিন জানতে পারে রতনের ব্যবসা খুবই খারাপ যাচ্ছে কিন্তু সুজন ভাই চেয়েছিল এই ব্যবসাগুলো যে খারাপ যাচ্ছে এই সমস্যার কথা তার বন্ধু তাকে নিজেই বলবে। সেই অপেক্ষায় ছিল। হঠাৎ করে রতন ভাই যখন সুজনকে ফোন দিয়ে তার কথা বলে সুজন বলে আরে বন্ধু তুই আমার প্রকৃত বন্ধু, তুই বিপদে পড়েছিস আমি কি বসে থাকবো নাকি। তোর বিপদটা কিভাবে উদ্ধার করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি কাজ করবো। তুই কোন চিন্তা ভাবনা করিস না। তোর ব্যাংকের ততো লোন আছে আমি এদিক থেকে সাহায্য করছি তুই ব্যবসা আবারও শুরু করবি।