নেগেটিভ থেকে পজেটিভ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আশা করছি আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের ভালো লাগবে।


christmas-2411764_1280.jpg

ছবির উৎস


আমরা সমাজে বাস করি।আর আমাদের আশেপাশে রয়েছে বিভিন্ন মানসিকতার মানুষ।এর মধ্যে থেকে কেউ আমাদের পজেটিভ আবার কেউ নেগেটিভ।সৃষ্টিলগ্ন থেকেই এটি হয়ে আসছে যে,আপনি সবার কাছে সমান ভাবে ভালো বা খারাপ মানুষ হতে পারবেন না।এই ধরুন আপনি কিছু কিছু মানুষের চোখে প্রিয় আবার কিছু মানুষের চোখে অপ্রিয়।এখন আপনি যাদের কাছে অপ্রিয় হয়ে গেছেন কোনো কারণ ছাড়াই ।তাদের কিভাবে নেগেটিভ থেকে পজেটিভ বানাবেন তার কিছু নিনজা টেকনিক আমি একটি গল্পের মাধ্যমে শেয়ার করছি।


আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি তখন আমাদের এক বান্ধবী, ওর নাম ফাতেমা।এবার ওর সমস্যায় হচ্ছে সবার পিছনে লাগা ।ওর দাদা আবার ওই এলাকায় একটু নেতা টাইপের লোক ছিল,তাই পাওয়ার দেখাতে চেষ্টা করতো।ওর সাথে আমার প্রথম দিকে একদমই সম্পর্ক ভালো ছিলনা। পরে কিন্তু ও আমার ভালো বান্ধবী হয়ে গিয়েছিল।স্কুল থেকে বিদায় নেওয়ার আগে বান্ধবীরা মিলে গ্রুপ ফটো তুলেছিলাম আর সেখানে ও ছিল।তাহলে বুঝুন নিশ্চয় ভালো সম্পর্ক ছিল তাই ফটোতে ছিল।

ফাতেমার সাথে সম্পর্ক ভালো না থাকার কারণ বেশি ছিল ফার্স্ট বেঞ্চে বসা।এবার একটি বেঞ্চে তো চার পাঁচজন করে বসা যায়। ও আগে এসে নিজের সিটে বসলেই কিন্তু বাকি সিট গুলোতে আমরা বসতে পারি। ও ওর নিজের পরিচিত বান্ধবীদের সিট রেখে দিত। তারা দেরিতে এসেও বসতে পারতো ফার্স্ট বেঞ্চে,আমরা আগে গিয়েও বসতে পারতাম না।ক্লাসে ওর রোল ছিল ১০/১২ এর পরে।সাধারণত যাদের সিরিয়াল আগে থাকে তারাই সামনে বসে ।কিন্তু ওর জন্য সামনের দিকে বসা সম্ভব হতোনা আমার আর আমার বান্ধবীর।এবার সামনে না বসলে ম্যাম ক্লাস নিতে আসলেই দেখতেন আমি পিছনে বসেছি।

আব্বুর অফিস ছিল আবার ওই ম্যাম দের বাড়িতে।এখন ম্যাম তো বাড়িতে গিয়ে আব্বুকে বলে দিত আমি পিছনে বসি প্রতিদিন।এবার বাসায় এসে আব্বু তো রাগ করতেন পিছনে বসার জন্য।বেশ কিছুদিন একই অবস্থা আরকি।আমার আর সামনে বসা সম্ভব হতো না।আমি যেহেতু ওখানকার লোকাল ছিলাম না।তাই ওর সাথে ঐভাবে দ্বন্দ্বে যেতাম না কখনোই।

এর কিছুদিন পরে আমাদের ক্লাসে ক্যাপ্টেন এর নির্বাচনি ভোট হলো।এবার আমি তো জানি ফাতেমা ক্যাপ্টেন এ দাড়াবে আর ওকে কেউ ভোট দিবেনা।আর এটাই আমার সুযোগ ওর সাথে বন্ধুত্ব করার ।তখন আমি আর কিছু বান্ধবীদের বলে রেখেছিলাম ওকে ভোট দিতে।কারণ ও এমনিতেও ভোটে জিতবেনা।কারণ পাবলিক তো ওকে সেইভাবে ভালো জানেনা ,পাবলিক বলতে ক্লাসের অন্যরা।আর ঠিক তাই হয়েছে ও মাত্র ৬/৭ টা ভোট পায়,আর ক্যাপ্টেন হতে পারেনা।কারণ অন্য দুজন আরো বেশি ভোট পেয়ে জিতে যায়।আর তখন ওকে যেই ক'জন ভোট দিল সে কজনের মধ্যে তো আমিও ছিলাম।তারপর থেকেই আমাদের ভালো সম্পর্ক হলো। আমি আর আমার বান্ধবী ফার্স্ট বেঞ্চে বসতে পারতাম।

ফাতেমা আমাদের জন্য সিট রেখে দিত।তারপর ক্লাসে সাময়িক পরীক্ষা হলে।আগে তো ঐভাবে সিট পড়তো না পরীক্ষার হলে।তাই ওকে বলে রেখেছিলাম আমার সামনের বসতে।কারণ ওকে পরীক্ষায় দেখালে আমার সাথে সম্পর্ক ভালো হয়ে যাবে।যেহেতু ও খুব একটা ভালো স্টুডেন্ট না ।তাই আমার খাতা দেখে লিখে ফার্স্ট হওয়ার কোনো সম্ভবনা ওর ছিলনা।এভাবে করেই আমি ওকে নেগেটিভ থেকে পজেটিভে পরিণত করেছিলাম।এখন আপনাদের আশেপাশেও যদি এরকম লোক থাকে।তাহলে আপনারা প্রশংসার মাধ্যমে উৎসাহিত করে পজেটিভ করে নিতে পারেন বন্ধুরা।আর যদি দেখেন সেটা সম্ভব না ।তাহলে বাদ দিয়ে দিন নিজের তালিকা থেকে,হা হা হা। এই গল্পটি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করা এজন্য,সেদিন প্রায় ১২ বছর পর মার্কেটে হঠাৎ দেখা হলো আমার এই বান্ধবীর সাথে।


ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আজকের মতো এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু । আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 years ago 

এটা ভালো ই বলেছেন, নেগেটিভ মানুষগুলো কে পজিটিভ করতে হলে ভালো ব্যবহার দিয়ে ঠিক করা যায়। ভালোবাসার কাঙ্গাল আসলে সবাই।ভালো ব্যবহার,ভালবাসা অগ্রাহ্য আসলে কেউ করতে পারে না।বেশকিছুদিন পর বান্ধবীর সাথে আপনার দেখা হলো। তাই পুরোনো স্মৃতি মনে পরে গেলো।আজ তাই আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

বাহ ছোট থেকেই বেশ ভালো বুদ্ধি ছিল আপনার, চমৎকারভাবে যে মানুষের সাথে সম্পর্ক কারোই সম্পর্ক ভালো না আপনি চমৎকারভাবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক করে নিয়েছেন, আপনার গল্পটা আমার খুব ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

আপনি খুব ভালো কাজ করেছেন আপু একজন নেগেটিভ মানুষকে নেগেটিভ ভাবে না দেখে তাকে পজিটিভ করার চেষ্টা করেছেন। আসলে ফাতেমাকে পরীক্ষায় সাহায্য করার কারণে সে হয়তো কিছুটা পজিটিভ হয়েছে এবং মন মানসিকতা চেঞ্জ করেছে। আমাদের সকলেরই আসলে এমন করা উচিত। ভালো লাগলো আপনার লেখাটি পড়ে।

 2 years ago 

জি আপু,ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আমাদের চারপাশে হাজারও নেগেটিভ মানুষের ভিড়। কিন্তু আমরা কি করি এ সমস্ত মানুষ গুলো কে অবহেলা করে তাদের সঙ্গ ছেড়ে দেই। কিন্তু আমরা যদি তাদের কে ভালোবাসা দিয়ে তাদের আচরণগুলো পরিবর্তন ঘটাতে চাই তাহলে কিন্তু তারা অবশ্যই পরিবর্তন হবে। আসলে ভালোবাসার উপরে আর কিছুই নেই। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

 2 years ago 

জি আপনি ঠিক বলেছেন আপু,ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।