আমার জন্মদিনে কাটানো মুহূর্ত।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ১৫ ই মার্চ, শনিবার, ২০২৫ খ্রিঃ

কভার ফটো


1000032282.jpg



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছে। জন্মদিন দিনটা আমাদের সবার কাছে স্পেশাল। তেমনি আমার কাছেও স্পেশাল। যদিও জন্মদিন আনন্দের কোন বিষয় না। জন্মদিন আশা মানে জীবন থেকে একটা বছর কমে যাওয়া। তারপরেও আমরা বেশ আনন্দ করি জন্মদিনটা পালন করি। কালকে ছিল আমার জন্মদিন। দিনটা মোটামুটি ভালোই কেটেছিল।জন্মদিনে কাটানো মুহূর্তগুলোই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এসেছি। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।



1000032283.jpg
জন্মদিনটা সার বেশ অনেকদিন আগে থেকেই অনেক কিছু প্ল্যান করে রেখেছিলাম। আমি দেখেছি, যখনই কোন ব্যাপার নিয়ে বেশি ভাবি সেই কাজটাই আমার সম্পূর্ণভাবে হয় না। এর আগের বারের জন্মদিনটাও কেটেছিল রোজার মধ্যে। এবারেও জন্মদিনটা রোজার মধ্যেই ছিলো।রোজার মধ্যে হওয়ার কারণে অনেক ফ্রেন্ড আসতে পারে না, আবার রেস্টুরেন্ট খোলা থাকে না,লোকজন থাকে না। সেজন্য ছোটখাটো করেই গত দু'বছর জন্মদিন পালন করা হয়। জন্মদিনের আগেই অনেক কিছু উপহার পেয়েছিলাম। উপহার পেতে কার না ভালো লাগে। উপহার পেয়ে আমি বেশ খুশি হয়েছিলাম। তারপর এলো জন্মদিনের দিন। ১৪ তারিখে জন্মদিন আর ১৬ তারিখে আমার পরীক্ষা। কালকে থেকে আমার পরীক্ষা শুরু। সেজন্য আরেক সমস্যা।
1000032288.jpg
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেই কিছুটা পড়াশোনা শেষ করে নিয়েছিলাম।যেহেতু আমরা প্ল্যান করেছিলাম সন্ধ্যার পরে সেলেব্রেশন করতে বেরোবো। সেজন্য রাতে পড়া নাও হতে পারে। তারপর সব কাজ গুছিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর পড়লাম ভীষণ মাথাব্যথার কবলে। দুপুরবেলা একটু ঘুমিয়ে নিলাম। তারপর আমার বান্ধবী আসলেন আমার রুম। বান্ধবী ও আমার জন্য গিফট নিয়ে এসেছে। দেখে যেন মনটা ভালো হয়ে গেল। উপহার পাওয়ার আনন্দটাই আলাদা। বান্ধবী আর আমি মিলে গল্প করছিলাম সে সময় আমার দিদি এসে উপস্থিত হয়। আমার দিদি সব সময় হঠাৎ করে দেখা করতে চলে আসে। অনেকটা চমকে দেয় আমাকে। দিদি আর আমার ছোট ভাই এসেছে। দিদিও আমার জন্য গিফট নিয়ে এসেছে। দিদির হাতে আমার পিসিমণি আমার জন্য যত্ন করে পোলাও, মাংস আর এক ধরনের মাছ রান্না করে পাঠিয়েছেন। দেখে যেন মনটা ভরে গেলো।দিদি আমার জন্য এই প্রেস্টি টা নিয়ে এসেছিলো।
1000032285.jpg
তারপর দিদি আমাকে নিয়ে বের হতে চেয়েছিলো।কিন্তু আমি তো অলরেডি ফ্রেন্ডের সাথে প্লান করে রেখেছিলাম সে যেন আর যেতে পারলাম না। যেহেতু কালকে হোলি ছিলো সেজন্য দিদি ভাইকে নিয়ে মন্দিরে চলে গেলেন। আমিও যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু সময় হলো না। তারপর আমি আর আমার বান্ধবী মিলে বেশ কিছুক্ষণ সময় গল্প করলাম। দেখতে দেখতে ইফতারির সময় হয়ে এলো। আমার বান্ধবী যেহেতু মুসলিম সে রোজা রেখেছিলো।তারপর আমি ইফতার কিনে নিয়ে আসলাম। দুজন মিলে বেশ মজা করে ইফতার করলাম। অনেকে মিলে একসাথে ইফতার করতে বেশি ভালো লাগে। ইফতারের পরপরই আমরা রেডি হতে শুরু করলাম।প্রথমে শাড়ি পরব ভেবেছিলাম। একদিকে পরীক্ষা অন্যদিকে মাথা ব্যথা করছিল এজন্য আর শাড়ি পরলাম না। গিফটে পাওয়ার ড্রেসটাই পড়ে নিলাম। তারপর দুজন মিলে রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম।
1000032286.jpg
বের হয়ে প্রথমে আমরা গেলাম বনফুল বেকারিতে কেক কিনতে। তারপর পছন্দ করে দুজন মিলে একটা কেক কিনে নিলাম। কেকের উপর যে নামটা দেখছেন সেটা বান্ধবী দিয়েছেন। কেক কিনে আমরা রওনা দিলাম একটা রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে। যেহেতু রোজার সময় সেহেতু সব রেস্টুরেন্ট খোলা থাকে না। রেস্টুরেন্ট খোলা থাকলেও পর্যাপ্ত খাবার রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায় না। প্রথমে আমাদের অন্য একটা রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা ছিলো।সেখানে কিছু সমস্যা হওয়ার কারণে আমরা আরেকটা রেস্টুরেন্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি আর বান্ধবী রিক্সা করে সেখানে পৌঁছে গেলাম। পৌঁছে দেওয়ার পরে সেখানে আমাদের আরেকজন বন্ধুর আসার কথা ছিল। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সেও চলে আসলো।
1000032287.jpg
তারপর তিনজন মিলে বেশ মজা করলাম। আমাদের মজা আর কি ছবি তোলা। এক একজন এক এক স্টাইলে অনেক ছবি তুললাম। আমার বন্ধু আমার জন্য বেশ কিছু গিফট নিয়ে এসেছিল। গিয়ে ছবিগুলো পেয়েতো ভীষণ ভালো লাগছিলো।তারপর আমরা খাবার অর্ডার করে নিলাম। সেখানে রেডি মেনু বেশি ছিল না। যেহেতু রোজার সময় সেজন্য এনারা মেনুতে বেশি কিছু রাখেন না। তারপর আমরা অর্ডার করলাম ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই একটি কম্ব। তিনজনের জন্য তিনটা কম্বো অর্ডার করে নিলাম। সাথে কোল্ডিং অর্ডার করলাম। তারা জানালো তাদের এখানে কোল্ডিং পাওয়া যাবে না। সে জন্য আমরা ঠান্ডা পানি নিয়েছিলাম।
1000032284.jpg
খাবার আসতে আসতে আমরা ছবি তোলা এবং কেক কাটা শেষ করে নিলাম। তারপর খাবার চলে আসলো। তিনজন মিলে গল্প আড্ডায় খাবার খাওয়া শেষ করলাম। রেস্টুরেন্টটা বেশ ভালোই।আড্ডা দেওয়ার মত একটি জায়গা। এখানে সকল ধরনের খাবার পাওয়া যায়। রোজার জন্য খাবারের মেনু কমানো হয়েছিল আর কি। আমরা সাতরা নাগাদ বের হয়েছিলাম আসতে আসতে প্রায় নয়টা। নয়টার আগেই আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে পড়ি। সেখান থেকে বেরিয়ে আমি আর আমার বান্ধবী একটা রিকশা করে চলে আসি বনফুড বেকারির সামনে। আমার বন্ধু তার মতো তার বাড়িতে চলে যাই।
1000032282.jpgবনফুডের সামনে এসে বান্ধবীর বায়না সে গ্রিল আর নান খাবে। বান্ধবীরে আবদার আমাকে রাখতেই হবে। তারপর সেখানে গিয়ে গ্রিল এবং নান কিনে দিলাম। বান্ধবী সেগুলো পার্সেল করে বাড়িতে নিয়ে গেলো।তারপর আমরা দুজন মিলে সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম। আমার রুম বনফুডের একদম সাথেই। আমি বান্ধবীকে রিশায় তুলে দিয়ে নিজের রুমে ফিরে আসলাম। অল্প সময়ের মধ্যে বেশ ভালো একটা সেলিব্রেশন হয়েছিলো।
সব মিলিয়ে দিনটা বেশ ভালোই কাটলো।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ১৪ ই মার্চ ২০২৫ খ্রিঃ
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 2 months ago 

প্রথমেই আপনাকে জানাই আপনার জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। জন্মদিন আসলে আমরা সবাই অনেক বেশি খুশি থাকি। আর গিফট পেতে তো সবার কাছেই খুব ভালো লাগে। আপনি তো দেখছি বেশ অনেক কিছুই গিফট পেয়েছিলেন সবার কাছ থেকে। আর বাহিরে গিয়েও সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। কেক টা দেখে তো অনেক মজাদার মনে হচ্ছে।

 2 months ago 

আপনার জন্মদিনে কাটানো মূহুর্ত পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপু গিফট পেলে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আপনি তো দেখছি জন্মদিনে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন।আর রোজার দিনে এমন খাবার হলে আর কিছু লাগে না। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অনুভূতি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 2 months ago 

গিফট পেলে সবাই খুশি হয়। জন্মদিনে কাটানো অনুভূতি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম আপু। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 months ago 

পরীক্ষার টেনশন আর জন্মদিনের আনন্দ একসঙ্গেই পড়ে গেছে বুঝতেই পারছি। কিন্তু তার মধ্যেও জন্মদিনটা সুন্দরভাবে এনজয় করেছেন দেখে ভালো লাগছে। আমার তরফ থেকেও শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল। এমন জন্মদিন আরো বারে বারে আসুক এবং আপনি আরো সামনের দিকে এগিয়ে চলুন বোন। সব থেকে বড় কথা হলো জীবনে সুস্থ থাকবেন।

 2 months ago 

হ্যাঁ দাদা, পরীক্ষার টেনশনের সঙ্গে জন্মদিন টা ভালোই কেটেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। আমার জন্য আশীর্বাদ করবেন।

 2 months ago 

শুভ জন্মদিন শুভ হোক প্রতিটা দিন। প্রতিবছর নতুন করে জন্মদিন আসা মানেই জীবন থেকে একটি বছর কমে যাওয়া। জন্মদিনে সবাই মিলে অনেক আনন্দ করেছে জেনে ভালো লাগলো। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি এমন জন্মদিন যেনো সহস্রবার আছে তোমার জীবনে। জন্মদিনের অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। হ্যাঁ এটা ঠিক বলেছেন, জীবন থেকে আরও একটা বছর কমিয়ে ফেললাম।

 2 months ago 

দিদি প্রথমে আপনাকে জন্মদিন এর শুভেচ্ছা। জন্মদিন মানেই একটু আনন্দ। আপনি বেশ সুন্দর করে জন্মদিন পালন করেছেন। ধন্যবাদ দিদি আপনাকে এত সুন্দর জন্মদিন এর মুহুর্ত আমাদের মধ্যে তুলে ধরার জন্য।

 2 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। জন্মদিনের মুহূর্ত আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

 2 months ago 

যদিও অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে তবে আপনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই আপু। আমার অবশ্য এভাবে বার্থডে সেলিব্রেট করা হয় না কখনো। যাই হোক, বেশ ভালোভাবে দিনটা সেলিব্রেট করেছেন। গত তিন চার বছর ধরে আমারও রোজার মধ্যে বার্থডে পড়েছিল। তবে এ বছর ঈদের পরে। সুন্দর মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 months ago 

জন্মদিন মানেই আনন্দ, স্মৃতি, আর প্রিয়জনদের ভালোবাসায় ভরা একটি বিশেষ দিন। তোমার জন্মদিনের অভিজ্ঞতা পড়ে সত্যিই ভালো লাগলো! বন্ধুবান্ধব, উপহার, ইফতার, কেক কাটা, রেস্টুরেন্ট আড্ডা সবকিছু মিলিয়ে মনে হলো, সত্যিই দারুণ একটি দিন কাটিয়েছো। ব্যস্ততা, পরীক্ষা, রোজা সবকিছুর মাঝেও যে এত সুন্দরভাবে দিনটি উদযাপন করেছো, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এমন মুহূর্তগুলোই জীবনের অন্যতম সেরা স্মৃতি হয়ে থাকে। শুভ জন্মদিন।আগামীর দিনগুলোও যেন ঠিক এভাবেই ভালো কাটে, সেই শুভকামনা রইলো।

 2 months ago 
1000032292.png1000032294.png1000032293.png
 2 months ago 

যেকোনো কিছু প্ল্যানিং করে রাখলেই সেই কাজটা প্ল্যানিং মোতাবেক হয় না এটাই বাস্তব কথা। যাই হোক আপনার জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল। তবে জন্মদিনের সময় খুব সুন্দর ভাবে কাটিয়েছেন শুনে খুবই ভালো লাগছে। বন্ধুবান্ধব এবং ভাই-বোন সবার সাথে দেখা হল আনন্দ মজা আড্ডা হলো। এটা আসলে অনেক ভাগ্যের একটা ব্যাপার।