জেনারেল রাইটিং : শৈশবের শীতকাল।
হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি @purnima14 বাংলাদেশী,
আজ- ২৩ শে নভেম্বর, শনিবার, ২০২৪ খ্রিঃ।
কভার ফটো
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার।আমি আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করে থাকি। আমি আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।শীতকাল তো আমাদের সকলেরই প্রিয়।তবে শৈশবের শীতকালটা আমাদের কাছে আরো বেশি প্রিয় ছিলো নিশ্চয়ই। আমি ৯০ দশকেই না হলেও ৯০ দশকের আংশিক ছোঁয়া কিছুটা পেয়েছি। এখন যারা বেড়ে উঠছে তারা ৯০ দশকের ছোঁয়া পাইনা বলেই চলে। চলুন আপনাদের সাথে আজকে শেয়ার করি আমার শৈশবের শীতকালটা কেমন ছিলো।শৈশবের শীতকালের নানান মুহূর্ত নিয়ে আজকের পোস্টটি সাজাতে চলেছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
আজ কয়েক দিন ধরে আমার শৈশবের কথা খুব মনে পড়ছে। এইতো কালকেই আপনাদের সাথে শৈশব নিয়ে একটি কবিতা লিখে শেয়ার করেছিলাম। আজ আমি লিখব আমার শৈশবের শীতকাল নিয়ে। আমার মনে হয় আমার মতো অনেকেরই সুন্দর ছিলো শৈশবের শীতকাল। আজ খুব বেশি করে মনে পড়ছে হারিয়ে যাওয়া সেই দিনগুলো। কুয়াশা মোড়ানো সকাল,চাদর মুড়ি দিয়ে বের হতাম সকলে।সকালবেলা উঠে দেখি মায়ের সব কাজ শেষ। আমি তখন ভাবতাম মায়েদের বুঝি শীত লাগেনা কেমন করেই শীতের মধ্যে উঠে সব কিছু করে নেয়।
শীতকালটা তখন সবচেয়ে আনন্দ করে উপভোগ করতাম, যখন আমার দিদা দাদু আমাদের বাড়ি বেড়াতে আসতো।সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে অপেক্ষা করতাম একটু মিষ্টি রোদের ঝলকানির জন্য। দাদু জুড়ে দিতো তার ছেলেবেলার গল্প। দাদুর গল্প গুলো শুনতাম আর দিদার হাতের পিঠা খেতাম। আমরা সবাই মিলে চুলার চারিদিক গোল হয়ে বসে পড়তাম দিদা এক এক করে ভাপা পিঠা তৈরি করে আমাদের এক একজনের হাতে দিয়ে দিতেন। খেজুরের গুড়ের পিঠা আর সঙ্গে দাদুর ছোটবেলার মজার গল্প একেবারে জমে যেত।
গল্প শুনতে শুনতে পেয়ে যেতাম সূর্যি মামার দেখা।মিষ্টি রোদে পিট পেতে বসে থাকতাম। আমার খুব ভালো করে মনে আছে আমার ছোট কাকু আমাকে একটি লাল জুতো কিনে দিয়েছিলো। সব থেকে মজার কাহিনী হলো তখন একটা গান ছিলো খোকাবাবু যায় লাল জুতো পায়। সেই গানটাই অভিনয় করেছিলো আমার প্রিয় অভিনেতা দেব। আমি আমার দাদুর হাত ধরে রাস্তায় হাঁটতে বের হতাম আর নিজে নিজেই সেই গানটা বারবার গাইতাম। কি যে ভালো লাগতো বলে বোঝাতে পারবো না। মাঝে মাঝে আমার খেলার সঙ্গিরাও মজা করতো।ওরা আমাকে দেখলেই বলত ওই যে চলে এসেছে লাল জুতো পায়। তখন আমার রাগ হয়ে যেত। মায়ের আঁচলে গিয়ে কান্না করতাম। তবে এখন সেই মুহূর্তগুলো মনে পড়লেই উপভোগ করি। কত সুন্দর ছিল সেই সময় গুলো।
শীতের দিনে স্নান করবো না বলে কত যে বাহানা ধরতাম। এখনো আমি শীতের দিনে স্নান করবো না বলে অনেক বাহানা ধরি। ছোটবেলায় স্নান করতে না চাইলে মা সে কি জোর করে স্নান করিয়ে দিতো।দুপুরবেলায় আমরা দুই ভাই বোন দুটি গামলাই করে জল রোদে দিয়ে রাখতাম। মা কাজ শেষ করে দুপুরবেলায় আমাদের দুই ভাই বোনকে জোর করে স্নান করিয়ে দিত। স্নান শেষে গামলার মধ্যে বসে থাকতাম। ভীষণ ভালো লাগতো। গরম গরম জলের মধ্যে যেখানে সূর্যের তাপ তীক্ষ্ণভাবে এসে পড়েছে ঠিক সেইখানে গামলা নিয়ে বসে থাকতাম। ইস দিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম।
রোজ বিকেলবেলায় মা শীতের কাপড় পরিয়ে দিতেন। আমরা দুই ভাই বোন ছিলাম সমবয়সী। সমবয়সী বলতে দেড় বছরের ছোট বড় আমরা। দুজনের মধ্যে যেমন মারামারি হতো তেমন খুনসুটিও ছিলো।বিকেল হলে দুই ভাই বোন দাদুর হাত ধরে আবার বেরিয়ে পড়তাম হাঁটতে। দাদু সারা গ্রাম ঘুরে বেড়াতেন আমাদেরকে নিয়ে।আমরা যখন একটু বড় হলাম তখন আমাদের বিকেলটা খেলাধুলায় ভরে থাকতো। কত রকমের যে খেলা খেলতাম। তারপর ঠিক সন্ধে সন্ধ্যে আমরা দাদুর ছোটবেলার স্মৃতি মনে করে কয়েকটি লাঠি নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে আগুন পোহানো শুরু করতাম।
আমার মা অনেক ধরনের পিঠা তৈরি করতে পারে। প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলা বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে আমাদেরকে খাওয়াতেন। এখনো অবশ্য মা অনেক ধরনের পিঠা তৈরি করে আমাদেরকে খাওয়ান। তবে আগের মতো আর দাদু দিদাকে একসাথে নিয়ে খেতে পারি না। আমার দিদাকে আমি অনেক বেশি মিস করি। একটা বছর হয়ে গেল দিদা আমাদের মাঝে নেই। আমার ছেলেবেলা থেকে বড় হওয়া সবকিছুর মধ্যে দিদার অবদান অনেকখানি। প্রত্যেকটা মুহূর্তে তার কথা ভেবে আমি কষ্ট পাই।
এখনো তো কুয়াশা মুড়িয়ে সকাল আসে,
শিশির ফোঁটা পরে ঘাসে ঘাসে।
এখনো তো রোজ সকালে মিষ্টি রোদ হাসে।
কই,
আমার মিষ্টি শৈশব?
সে ফিরে তো আসে না যে।
পোস্টের বিবরণ
ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
লোকেশন:কুষ্টিয়া
প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।
আমি কে !
আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত।
@purnima14
আমি তিনটি ম্যান্ডেটরি টাস্ক কমপ্লিট করার পরে স্ক্রিনশট নিয়েছি।
শৈশবের শীতকাল জেনারেল রাইটিং পরে অনেক ভালো লাগলো। প্রতিটা মানুষের শৈশব অনেক সুন্দর থাকে। আমাদের সবার জীবনেই এমন মজার মজার কিছু ঘটনা থাকে যেগুলো শৈশবে ঘটে থাকে আর বড় হয়ে মনে পড়লে খুব হাসি পায়। ছোটবেলায় লাল জুতোটা খুব প্রিয় ছিল যদি এখন কিনে দেওয়া হয় পড়তে পারবে তো ! অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন সবার জীবনে এরকম মজার মজার ঘটনা থাকে যেগুলো এখন মনে পড়লে হাসি পায়। আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।