রাতের বেলায় ভুট্টা পুড়িয়ে খাওয়ার গল্প।

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ- ১৭ ই মে, শনিবার, ২০২৫ খ্রিঃ

কভার ফটো


1000047703.jpg

কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো। আপনাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক ভালো লাগে। আজকেও হাজির হয়েছে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। লোকের মুখে শুনেছি ভুট্টা পুড়িয়ে খেতে নাকি অনেক মজা লাগে। এর আগে আমি কখনোই ভুট্টা পুড়িয়ে খাইনি। কালকে রাত্রে বেলা হঠাৎ করেই চারজন মিলে বসে ভুট্টা পুড়িয়ে খেলাম। সেই মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।



1000047704.jpg
রাত তখন বাজে প্রায় সাড়ে বারোটা। কালকে রাত্রে আমরা অনেক মজা। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করেছিলাম। অনেকদিন পর একটু বাতাসে সবাই মিলে আম কুড়াতে বের হয়েছিলাম। সেসব করতে করতে সাড়ে বারোটা বেজে গিয়েছিল। আমাদের এবার ভুট্টা চাষ হয়েছে। আমাদের খেতে ভুট্টা চাষ এই প্রথমবার বাবা করেছেন। আমরা তিন ভাই বোন থাকলে খুব একটা মজা হয় না পাশের বাড়ির মামারা বাড়িতে এসেছে। মামা দুই ছেলে মেয়ে এবং দিদা আমাদের সাথে মিশলে মিশন মজা হয়। কালকে আমরাই সবাই মিলে এসব করেছি।
1000047705.jpg
হঠাৎ করে বারান্দার উপর ভুট্টা দেখে ভুট্টা পুড়িয়ে খাওয়ার ইচ্ছে হলো। গ্রামে রাত সাড়ে বারোটা মানে কেউ আর জেগে থাকে না। সবাই গভীর ঘুমে। আমরা দুই বোন এবং দিদা আর মামার ছেলে আমরাই চারজন মিলে ঠিক করলাম ভুট্টা পুড়িয়ে খাব। যেই কথা সেই কাজ। আমি একটি ভুট্টা নিয়ে আমাদের ঘরের সাইডে গেলাম। দিদাদের বাড়ি এবং আমাদের বাড়ির মাঝে বেশ অনেকটা ফাঁকা জায়গা। সেখানে আমরা ভুট্টা ফুরানো সিদ্ধান্ত নিলাম। আকাশে চাঁদ উঠেছিল কিন্তু বারবার মেঘে ঢেকে যাচ্ছিল। আমার তো রাত করে ঘুমানোর অভ্যাস। এত রাতে ভুট্টা পুড়াতে গিয়ে বেশ মজা করেছিলাম সবাই।
1000047706.jpg
আমাদের বাড়ি থেকে আমি কিছু খড়ি এবং খড় নিয়ে গেলাম। প্রথমে ভুট্টা টা ছুলে নিলাম। তারপর দিদাকে বললাম একটু ঝাল এবং একটু তেল একসাথে মাখিয়ে আনতে। কথা অনুযায়ী দিদা নিয়ে আসলো। তারপর আমি সেই ঝাল তেলের মিশ্রণ ভালো করে ভুট্টাতে লাগিয়ে নিলাম। তারপর মামার ছেলে এবং আমার বোন মিলে ছোট ছোট করে খড়ি গুলো ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে নিল।
1000047707.jpg
রাত্রেবেলা দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল দেখতে বেশ ভালো লাগছিল। খানিকটা ঠান্ডা বাতাস হওয়ার কারণে অতিরিক্ত গরম লাগছিল না। তারপর আমি আগুনের মধ্যে তেল ঝাল মাখা ভুট্টা দিয়ে দিলাম। ভুট্টা পোড়াতে থাকলাম তিনজন মিলে। বেশ অনেকক্ষণ সময় লেগেছিল ঘুরতে কি পড়াতে। তিনজন মিলে গল্প করছিলাম এবং মজা করছিলাম। বারবার মেঘে ঢাকা চাঁদ দেখতে বেশ ভালো লাগছিল। অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করছিলাম চাঁদের ফটোগ্রাফি করব কিন্তু বারবার মেঘ এসে ঢেকে দিচ্ছিল।
1000047708.jpg

1000047709.jpg
এভাবে করতে করতে ভুট্টা পোড়ানো প্রায় শেষের দিকে। তারপরে দিদা আসলো। বেশ কিছুক্ষণ ভুট্টা আগুনের মধ্যে রেখে দিয়েছিলাম। তারপর আস্তে আস্তে বের করলাম। বের করার পর প্রথমে একটা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ভুট্টা মুছে নিলাম। যেহেতু আমাদের ভুট্টা খড়ের মধ্যে দিয়েছিলাম গায়ে অনেক ছাই লেগে গিয়েছিল। তারপর সেটা পরিষ্কার করে মুছে নিলাম। ধুতে চেয়েছিলাম তবে দিদা বলল তাতে নাকি এর আসল টেস্ট চলে যায়। তারপরে আবার একটু ঝাল লবণ এবং তেল একসাথে করে ভুট্টার গায়ে জড়িয়ে নিলাম।
1000047710.jpg

এবারে আমাদের ভুট্টা পোড়ানো কমপ্লিট। এখন শুধু খাওয়ার পালা। একটু ঠান্ডা হতেই আমরা সবাই মিলে খেতে শুরু করলাম। ভুট্টা পোড়ানো যে খেতে এত মজা সেটা আগে জানা ছিল না। মামার ছেলে এবং বোন দুজন তো পাল্লা দিয়ে খেতে লাগলো। তাদের নাকি ভীষণ পছন্দ হয়েছে। আমার কাছেও বেশ ভালো লেগেছিল। দিদা, ভাই, বোন এবং আমি মিলে বেশ মজা করে ভোটটা পোড়ানো খেলাম। আমাদের ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় ১:৩০ বেজে গিয়েছিল। গ্রামের মানুষ এত রাত সচারতা জেগে থাকে না। সবাই মিলে বেশ মজা করছিলাম। খাওয়া শেষ করে সবাই মিলে বাড়িতে চলে এলাম।
প্রথমবার পোড়ানো খেলাম। খাবারটি আসলেই ভীষণ মজা। আমার তো দারুন লেগেছে। আবার একদিন পুড়িয়ে খাব।
আজ এই পর্যন্তই।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ১৬ ই মে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 4 days ago 

ভুট্টা পুড়িয়ে খাওয়া দারুন মজা, গতবার আমি বেশ কয়েকদিন ভুট্টা পুড়িয়ে খেয়েছি ভীষণ ভালো লাগে আমার কাছে। অনেক রাতে সবাই ভুট্টা পুড়িয়ে খাওয়ার মুহূর্ত দারুন ভাবে উপভোগ করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আগুনের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে জাস্ট মুগ্ধ হয়ে গেছি। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 days ago 

এমন সুন্দর জোৎস্না রাতে ভূট্টা পুড়িয়ে খাওয়ার মধ্যে রয়েছে আলাদা রকম একটা অনূভুতি। যেমন সুন্দর পরিবেশ তেমনই সুন্দর মূহূর্ত। বেশ দারুণ কেটেছে আপনার সময় টা। সবমিলিয়ে চমৎকার ছিল আপনার পোস্ট টা। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

 2 days ago 

ভুট্টা এইভাবে পুড়িয়ে খেলে খুবই ভালো লাগে। ভাই বোন ও দিদার সাথে মজা করে ভুট্টা পুড়িয়ে খেয়েছেন শুনে ভীষণ ভালো লাগলো। সত্যি সকলে মিলে কিছু খেলে খুবই আনন্দ হয়। বিশেষ করে এত রাত্রি বেলায় ভুট্টা পুড়িয়ে খাওয়ার কথা শুনে খুবই ভালো লাগলো।নিশ্চয়ই অনেক মজা করে করে সকলে মিলে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।