|| শ্রীলেদার্সে জুতো কিনতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা ||

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার বন্ধুরা


আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমার আজকের ব্লগটি শুরু করতে চলেছি।

দুর্গাপূজা হোক বা কালীপূজা যে কোন অকেশনে সবথেকে আমাদের কলকাতার বুকে বেশি ভিড় থাকে সেটা হল শ্রীলেদার্সের জুতোর দোকান। এর পিছনে বিশেষ দুটি কারণ হলো যে তাদের কোয়ালিটি এবং ঠিকঠাক দাম। আসল ঠিকঠাক দাম বললেও ভুল হবে, অন্যান্য জায়গার তুলনায় অনেক কম দামে এখানে জুতো পাওয়া যায়। তবে শুধুমাত্র যে ভারতীয়রা এখান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় জুতো বা ব্যাগ কেনাকাটা করে থাকে তা কিন্তু নয়। অনেক সময় দেখা যায় বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর লোক আসেন, যারা এখান থেকে কেনাকাটা করেন। তবে ইদানিং আমার কাছে মনে হচ্ছে যে শ্রীলেদার্সের জুতোর কোয়ালিটি বেশ খানিকটা কমে গেছে এবং সেটার পিছনে সব থেকে বড় কারণ হলো তাদের নাম, যশ। সেসব কথা না হয় বাদ দিলাম, চলুন তাহলে আমার জুতো কেনার কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। পুজোর সময় আমি এবং মা গিয়েছিলাম এখানে জুতো কেনার জন্য। আমাদের বারাসাতে মোটামুটি একটা ছোট পরিসরে শ্রীলেদার্সের জুতোর দোকান রয়েছে। তবে চাঁদনী চকে বা নিউমার্কেটে বেশ বড় পরিসরের একটা শোরুম রয়েছে। যদিও সেখানে যাওয়া হয় না সময়ের স্বল্পতা বা অনেকটা দূরে হয়ে যাওয়ার কারণে।


InShot_20231219_160725518.jpg


যাইহোক দুই তিন দিন আগে আমি একাই গিয়েছিলাম আমাদের বারাসাতের শ্রীলেদার্সের শোরুমে। যদিও এখানে কালেকশন খুব বেশি একটা থাকে না তারপরও মাঝেমধ্যে বেশ ভালো রকমের কালেকশন আসে, সেই আশা নিয়ে গেছিলাম। তবে শুধু আমার জুতো কেনার জন্য নয়, আমার দাদার এক জোড়া জুতো এবং মায়ের জন্য একটা নিয়মিত ব্যবহারের জন্য চপ্পল। সকালবেলাটা এখানে ভিড় খুব বেশি একটা থাকে না, সন্ধ্যার পরে এখানে প্রচন্ড ভিড় হয় এজন্য অনেকটা ফাঁকা শোরুম পাওয়ার জন্য দুপুর দিকে এখানে গেছিলাম কেনাকাটা করার জন্য। প্রথমেই শোরুমে গিয়ে যে ব্যাপারটা আমার চোখে পড়লো সেটা হলো পুরো শোরুম ছিল একেবারে ফাঁকা। আমি ছাড়া খুব সম্ভবত আর দুই একজন লোক এখানে ছিল। প্রথমত ভেবেছিলাম যে হয়তো দুপুর বেলা এজন্য লোকের ভিড় কম, তাই পরবর্তীতে যখন চারিদিকে খেয়াল করলাম তখন বুঝতে পারলাম আসল কারণ। এখানে আসলে তেমন কোনো জুতোই ছিল না, আর যা ছিল সব পুরনো কালেকশন। অর্থাৎ দূর্গা পূজার সময় বা কালী পূজার সময় যেগুলো বিক্রি হয়নি সেগুলোই পড়ে রয়েছে নতুন করে তারা কিছু উঠায় নি এখানে।


20230720_190749.jpg


20230720_190557.jpg


যাই হোক তারপরও চেষ্টা করলাম যে নিজের পছন্দমত যদি কোন জুতো পাওয়া যায়। তবে সেখানে গিয়ে অনেকটা অবাক হলাম, এখানে লেডিস কালেকশন একেবারে নেই বললেই চলে অর্থাৎ যা একটা রয়েছে তা পছন্দ হওয়ার মত নয়। সুতরাং আমার আর কেনাকাটা হলো না। যদিও একটা পছন্দ হয়েছিল তবে সেগুলো আমার সাইজ না হওয়ার কারণে ক্যান্সেল করতে হলো। এরপর চিন্তা করলাম যে মায়ের জন্য যা কিছু একটা নিব সেখানে গিয়ে দেখি। তবে সেখানেও অনেকটা হতাশ হয়ে ফিরতে হলো, কারণ যা কেনার জন্য গিয়েছিলাম মায়ের জন্য সেখানে সেগুলো তো ছিলই না আর জিজ্ঞাসা করার পর বলল বেশ কিছু মাস হয়ে গেল এ ধরনের কালেকশন এখানে আসে না। সবই কলকাতায় পাওয়া যায়। এজন্য অনেকটা বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে মায়ের জন্য জুতো কিনতে হল। তবে আমারটা তখনও কেনা হয়নি।


20230720_190738.jpg


20230720_190552.jpg


এরপর চলে গেলাম তাদের দোতালায় যেখানে boys কর্নার ছিল অর্থাৎ দাদার জন্য কেনাকাটা করতে। আগে থেকেই দাদা মোবাইলে আমাকে কিছু ফটো পাঠিয়ে দিয়েছিল এবং সেগুলো সেখানকার কর্মচারীদের প্রথমে দেখালাম যে এই ধরনের কালেকশন আছে কি না । তারা বেশ অনেক সময় দেখার পর বলল যে খুঁজে দেখতে হবে হয়তো আছে। আমিও দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম এবং টুকটাক ফটো তুলতে লাগলাম। বেশ কিছু সময় পর একজন লোক এসে বলল যে হ্যাঁ এই কালেকশন হবে তবে ৭-৮ এবং ৯ এই সাইজটা রয়েছে, এর থেকে কম হবে না। আমার দাদা ওর সাত সাইজের জুতো পরে তাই ভাগ্যক্রমে সেটা পেয়ে গেলাম। এরপর সেখান থেকে শুধু দাদার জন্য কেনাকাটা করে বেরিয়ে আসতে হলো আমাকে। আসলে এই জায়গাটা আগেও বেশ কয়েকবার গেছি এবং অনেকটা হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। কারণ এখানে কালেকশন অত্যন্ত খারাপ এবং যথেষ্ট কম এজন্য আমি সবসময় চেষ্টা করি কলকাতায় চলে যাওয়ার জন্য। তবে তাদের কাছে শোনার পর বলল যে আর কয়েক মাস পরে এখানে নাকি বড় করে করা হবে এবং সব ধরনের কালেকশন এভেলেবল থাকবে।


20230720_190539.jpg


পোস্ট বিবরণলাইফ স্টাইল
ডিভাইসrealme 8i
ফটোগ্রাফার@pujaghosh

আজ আর নয়। আজ এই পর্যন্তই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে আর সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তীতে আবারও নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 last year 

জ্বী আমিও বেশ কয়েক জোড়া জুতো নিয়ে এসেছিলাম বাংলাদেশে, আমার জন্য নিয়েছিলাম এখনো সেগুলো পড়ছি। তুলনামূলকভাবে দামের বিষয়টি অনেক সস্তা মনে হয়েছে আমার নিকট এবং কোয়ালিটিও ভালো। তবে হ্যা, আপনার কথার সাথে একমত যে, যশ কিংবা খ্যাতি একবার বেড়ে গেলে তখন অনেক কিছুই ঠিক থাকে না। আপনার নিজের জন্য পছন্দসই কিছু পেলেন না, তার জন্য এক ব্যাগ সমবেদনা পাঠালাম, হা হা হা।

 last year 

এক ব্যাগ সমবেদনা গ্রহণ করলাম ভাই, হা হা হা। ধন্যবাদ আপনাকে,এমন সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য ।

 last year 

বর্তমান সময়ে মানুষ কেনাকাটা করে ভালো মান সম্মত দেখে। আপনি শ্রীলেদার্সের জুতোর দোকানে গেলে কেনাকাটা করার জন্য আপনার দাদা এবং মায়ের জন্য। আসলে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যাদের নাম থাকা সত্ত্বেও তারা জিনিসপত্র একদম নরমালি তুলে থাকে। এই কারণে পরে তাদের কাস্টমার নষ্ট হয়ে যায়। তবে আপনার দাদার পায়ের সাইজ সাত থাকার কারণে আপনার সুবিধা হয়েছে জুতা কিনতে। দোকান হিসাবে কাস্টমার খুব কমে। হয়তোবা পুজোর নতুন কালেকশনের জুতা না আনার কারণে। যাইহোক সুন্দর করে পোস্টটি শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, পোষ্টটি পড়ে গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য।