অভিমান।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আবেগ রয়েছে যেমন ভালোবাসা, রাগ, ক্ষোভ, জেদ, এবং অভিমান। অভিমান আমাদের জীবনের এমন একটি আবেগ যা শুধুমাত্র আমরা নিজের পছন্দের মানুষ বা কাছের মানুষের ওপরই দেখাতে পারি বা অভিমান করতে পারি। কিন্তু এই অভিমান এমন একটি জিনিস যা দেখা যায় না, যেকারণে আমরা যদি কারোর ওপর অভিমান করে থাকি সে হয়তো বুঝতেও পারে না যে আমাদের অভিমান হয়েছে। অভিমান বড়ই অদ্ভুত একটি জিনিস, না যায় বলা না যায় সহ্য করা। আমরা আমাদের প্রিয়জনের উপর অভিমান করলে সব সময় এটাই আশা করি যে আমাদের প্রিয় মানুষটি আমাদের আচরণ দেখে বুঝবে এবং আমাদের অভিমান ভাঙিয়ে আবার সবকিছু ঠিক করে নেবে। কিন্তু দেখা যায় বেশিরভাগ সময়ে আমাদের অভিমান মনে বাসা বাঁধতে থাকে এবং আমাদের প্রিয় মানুষটি সেটা বোঝেই না যে আমাদের কতটা বেশি অভিমান হয়েছে এবং ধীরে ধীরে সেটা বেড়েই চলেছে।
সঠিক সময়ে এই অভিমান যদি না ভাঙ্গা হয় বা দুজন মিলে যেসব সমস্যা হয়েছে বা যে সব সমস্যার কারণে অভিমান হয়েছে সেই সব সমস্যার সমাধান না করা হয় তাহলে ধীরে ধীরে এমন পর্যায়ে চলে যায় এই অভিমানের গভীরতা যে, দুজনের মধ্যে একটি সুন্দর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কারণ আমাদের এই অভিমান আমাদেরকে কাছের মানুষের বা প্রিয় মানুষের থেকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং ভুল বুঝতে সাহায্য করে। তাই বেশিরভাগ সময় দেখা যায় দুজনের কারোর কোন দোষ না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র কিছু ভুল বোঝাবুঝি এবং অভিমানের কারণে অনেক ভালো ভালো সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। এসব ভুল বোঝাবুঝি এবং অভিমান এক সময় ঠিক হয়ে যায় কিন্তু কিছু কিছু রিলেশনে দেখা যায় অভিমান ভাঙতে ভাঙতে অনেক দেরি হয়ে যায় যার ফলে সম্পর্কের সেই টান বা ভালোবাসাটা থাকে না। আমাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কই অনেক সুন্দর সেটা হতে পারে বাবা-মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্ক, ভাই বোনের সম্পর্ক, বন্ধুত্বের সম্পর্ক অথবা স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক।
প্রত্যেকটা সম্পর্কই তার নিজস্ব জায়গায় অনেক বেশি সুন্দর, তাই এই সুন্দর সম্পর্কটাকে সুন্দরভাবে রাখার জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত একে অপরের সাথে একটু সময় কাটানো উচিত, কথা বলা উচিত, এবং নিজের মনের কথা সবসময় নিজের কাছের মানুষের সাথে শেয়ার করা উচিত। মনের কথা শেয়ার করে দিলে বা কোন সমস্যা হলে সেটা আলোচনা করলে অভিমানের কোন জায়গায় থাকে না। এমনকি কারোর কোন কাজ বা ব্যবহার ভালো না লাগলে সেটাও যদি বলে দেওয়া যায় তাহলে মনের মধ্যে কোন ক্ষত সৃষ্টি হয় না বা কোন অভিমান জায়গা করতে পারে না। প্রত্যেকটি মানুষের প্রত্যেকটা দিন সমান যায় না কোন দিন ভালো তো কোনদিন খারাপ কাটে। তাই কোনদিন ভালো ব্যবহার করলেও কোনদিন একটু খারাপ ব্যবহার বা এমন কোন কথা মুখ থেকে বেরিয়ে যেতেই পারে যেটা অপর ব্যক্তির পছন্দ হলো না বা ভালো লাগলো না। তার জন্য মান অভিমান করে বসে না থেকে অবশ্যই সে ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করে নিতে হয়।
আমরা যদি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করি এবং প্রিয় মানুষটির ওপর অভিমান করে থাকি তাহলে এমনও হতে পারে যে সে আমাদের অভিমান বুঝতে পারল না আর আমরা তাদের থেকে এবং অনেক বেশি মনের থেকে দূরে সরে গেলাম। আমরা অনেক সময় ভুল শুনে বা ভুল বুঝেও প্রিয় মানুষটির ওপর অভিমান করে ফেলি। তাই সর্বদা আমাদের আলাপ আলোচনার মধ্যে থাকা উচিত। এবং বর্তমান সময়ের ডিজিটাল জীবন থেকে একটু সময় বের করে প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাটানো এবং কথাবার্তার মাধ্যমে বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধান প্রতিনিয়ত করতে থাকা উচিত। তাহলে আমাদের মনের মধ্যে কোন অভিমান থাকবে না বা জন্ম নিতে পারবে না। আর আমরা আমাদের প্রিয় মানুষের সাথে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবো এবং সুন্দর ভাবে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারব।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।
অভিমান আসলে ভালোবাসারই আরেকটি রূপ, যা প্রিয় মানুষের প্রতি গভীর মমতা আর প্রত্যাশা থেকে জন্ম নেয়। তবে অভিমান যদি সময়মতো বোঝাপড়ার মাধ্যমে ভেঙে না ফেলা হয়, তাহলে তা ভালোবাসার উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং সম্পর্কের সৌন্দর্য নষ্ট করে দিতে পারে। তাই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে আবেগকে বোঝা, খোলামেলা কথা বলা আর একে অপরকে গুরুত্ব দেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, ভুল বোঝাবুঝির চেয়ে ভালোবাসার