পরিবেশ দূষণ।

in আমার বাংলা ব্লগ8 days ago


কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।


17424679043466655584698526286865.jpg


সোর্স



পরিবেশ দূষণ বলতে আমরা প্রাকৃতিক পরিবেশকে যেসব ভাবে দূষিত হতে দেখতে পাই সেই সব দূষণকেই সাধারণত বুঝে থাকি। যেমন আমরা পরিবেশ দূষণ বলতে নদী নালা দূষিত হওয়া, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ ইত্যাদি কে বুঝি। এছাড়াও আমাদের পরিবেশের সবথেকে বড় যে জিনিসটা দূষিত হয়ে পড়ছে সেটা হচ্ছে মানুষ নিজেই। পরিবেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ মানুষ, পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত জীব। পরিবেশের এই সব থেকে উন্নত জীবের দাঁড়াই পরিবেশ প্রতিনিয়ত একটু একটু করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে। এবং ধীরে ধীরে এই পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতে ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো ২০২১ সালে যখন লকডাউন পড়েছিল তখন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ ঘরে বন্দি থাকায় বাইরের পরিবেশ নদী-নালা অনেক বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেখা গেছে। অর্থাৎ মানুষের কর্মের জন্যই বাহ্যিক পরিবেশ নদী-নালা প্রতিনিয়ত নোংরা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কলকারখানার কারণে বায়ু দূষণ হয়ে থাকে এছাড়াও বিভিন্ন গাড়ি যে পরিমাণ দূষিত বায়ু ত্যাগ করে সেই সব কারণেও প্রতিনিয়ত বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে চলেছে।


এছাড়া আমরা যে পরিমাণ বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার শুরু করেছি সেই সব বাদ্যযন্ত্র আগেকার সময় হয়তো মানুষেরা কল্পনাতেও ভাবতে পারেনি। আর এইসব বাদ্যযন্ত্রের ফলে যে চরম বিকট আওয়াজ সৃষ্টি হয় সেই আওয়াজ আমাদের পরিবেশের শব্দ দূষণের প্রধান একটি কারণ। এছাড়াও যানবাহনের শব্দ, অপ্রয়োজনীয় হর্ন, জোরে কথা বলা ইত্যাদি বিভিন্ন শব্দ দূষণের ফলে আমরা প্রাকৃতিক শব্দ কেমন হয় সেটা যেন ভুলেই গেছি এবং ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক শব্দগুলি আমাদের পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে এসেছে। ফলে রাতে চারপাশের পরিবেশ নিরব থাকা সত্ত্বেও আমরা এই প্রাকৃতিক শব্দগুলি পাইনা। মানুষ এত নিষ্ঠুর হয়ে পড়েছে দিন দিন যে তারা বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্যের পাশাপাশি শখের খাবার খাওয়া শুরু করেছে, যার ফলে পরিবেশের অনেক বেশি ক্ষতি হতে দেখা যায়। মানুষ বিভিন্ন জিনিস বিভিন্ন নতুন নতুন খাবার স্বাদ করার লোভে তারা পশু পাখিও ধরে রান্না করে খাওয়া শুরু করেছে। যার ফলে পরিবেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের পশু এবং পাখিরা বিলুপ্ত হতে দেখা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক সম্পদ গাছপালা, জঙ্গল কেটে প্রকৃতির সম্পদ নষ্ট করছে যার ফলে প্রকৃতির পাশাপাশি নিজেদের জন্য মরণের রাস্তা তৈরি করছে।


আমরা বেঁচে থাকার জন্য যে অক্সিজেনের প্রয়োজন সেই অক্সিজেন তৈরি ফ্যাক্টরি মানুষ জেনে বুঝে নষ্ট করছে। অর্থাৎ সব জঙ্গল গাছপালা কেটে মানুষ নিজেই আমাদের পরিবেশের অক্সিজেনের অভাব ঘটিয়ে ফেলছে। এছাড়াও নদী-নালা, পুকুর-ডোবা, এমনকি সমুদ্র পর্যন্ত নোংরা করে ফেলছে যার ফলে এইসব জলচর প্রাণীদের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা অনেক কষ্টকর হয়ে উঠছে। শুরু জলচর প্রাণী নয় উভচর প্রাণীদের জন্যও উপযুক্ত প্রয়োজনীয় জলের অভাব পড়ছে। এইসব প্রাকৃতিক সম্পদ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করার ফলে আমরা ধীরে ধীরে কতটা ধ্বংসের মুখে নেমে যাচ্ছি তা হয়তো আমরা কল্পনাও করতে পারছি না। এসব প্রাকৃতিক সম্পদ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়ার ফলেই আমাদের প্রকৃতির আবহাওয়া সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ হতে পারছে না। যেকোনো সময়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাচ্ছে, শীতের সময় সীমা ক্রমশ কমে আসছে আর গরমকাল এবং গরমের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। আর এই গরম বেড়ে যাওয়ার ফলে পরিবেশের সাথে সাথে মানুষের জীবনও অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


পরিবেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারলে আমরা নিজেদের কেও ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারবো। এবং পরিবেশের সাথে সাথে আমরাও সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারব, যা বর্তমান পরিস্থিতিতেও বেঁচে থাকা অনেকটাই অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। চারপাশের পরিবেশে কোথাও একটু শুদ্ধ বায়ু বা অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না। আগেকার সময় গ্রামের দিকেও একটু শুদ্ধ বায়ু পাওয়া গেলেও বর্তমান সময়ে গ্রাম শহর কোথাও শুদ্ধতা আর বেঁচে নেই। যার ফলে আমাদেরকেই একটা সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করতে হবে বন জঙ্গল গাছপালা কাটা বন্ধ করতে হবে। জলাশয় পরিষ্কার রাখতে হবে যেন আমাদের পরিবেশের প্রত্যেকটি প্রাণ সুস্থভাবে বাঁচতে পারে। পশু পাখিদের ওপর সদয় হতে হবে, আমাদের পরিবেশ থেকে যেন কোন পশু পাখি বিলুপ্ত হয়ে যেতে না পারে। আমরা যদি একটু সচেতন হই তবে আমাদের পরিবেশও অনেক সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারব এবং আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন যাপন অনেক সুন্দর করে করতে পারব। তার জন্য কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা আমাদের নিজেদেরকেই তৈরি করতে হবে এবং যেখানে সেখানে নোংরা ফেলা যাবে না। প্রাকৃতিক সম্পদ মানে আমাদের সম্পদ তাকে প্রতিনিয়ত আমাদেরই রক্ষা করতে হবে।


আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।

Sort:  
 8 days ago 

1000035285.jpg

1000035284.jpg

1000035283.jpg

 8 days ago 

ঠিক বলেছেন আপু ২০২১ সালে লকডাউনের মধ্যে সব কিছু বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছিল। মানুষ যত বেশি জিনিস ব্যবহার করবে পরিবেশ তত বেশি অপরিষ্কার হবে। এমনকি আমাদের জন্য পরিবেশ আজ এতটা দূষিত হচ্ছে। তবে আমরা চাইলেও বিভিন্ন উপায়ে পরিবেশ দূষণ রোধ করতে পারি। আপনি খুব সুন্দর ভাবে পরিবেশ দূষণ কিভাবে হয় এবং এর প্রতিকার লিখেছেন। খুবই ভালো লাগলো আপু আপনার লেখা ধন্যবাদ।