এলোমেলো কিছু ফটোগ্রাফি। ফটোগ্রাফি পর্ব -৩৬
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আবারও আমার তোলা কিছু এলোমেলো ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আসলে ফটোগ্রাফি করতে এক দিকে যেমন তোমার লক্ষ্য রাখতে হবে যে বাইরের জগতকে তুমি কিভাবে উপস্থাপন করবে। এক একজন মানুষ কিন্তু এক এক ভাবে একই চিত্রকে তুলে ধরে। অর্থাৎ কোন দৃশ্যকে যদি ১০ জন মানুষ ছবি তোলে তাহলে ১০ জন মানুষের আলাদা আলাদা ১০ ধরনের ছবি হবে ওই একই চিত্রের। আসলে একজন মহিলা মাথায় করে বিশাল বড় এক পাটকাঠির আঁটি নিয়ে এই জলাভূমি থেকে বাড়ির দিকে অর্থাৎ উঁচু ভূমিতে যাচ্ছিল। আসলে এরকম দৃশ্য দেখে আমি আর বসে থাকতে পারলাম না। খুব জলদি আমি আমার ক্যামেরায় এই শক্তিশালী মহিলার একটা ছবি তুলে নিলাম।
আসলে গ্রামের শ্রমজীবী মানুষেরা সারাদিন পরিশ্রম করতে করতে তাদের শরীরকে আর ফিট রাখতে হয় না। আমাদের শহরের মানুষগুলো তাদের অতিরিক্ত মেদ কমানোর জন্য যেমন জিমে যায় তাদের শরীরের উন্নতি করার জন্য। কিন্তু এসব সহযোগী মানুষের আর জিমে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। কারণ তারা সারাদিন এত পরিশ্রম করে যে এতে তাদের শরীর এই প্রতিকূল পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে শুরু করে। এছাড়াও এসব শ্রমজীবী মানুষের শরীরে তেমন কোন রোগ বাসা বাঁধতে পারে না।
আসলে আপনি কি কখনো খেয়াল করে দেখেছেন যে, এসব গ্রামের শ্রমজীবী মানুষদের ভিতরে একটা গোপন চেহারা লুকিয়ে আছে। যে চেহারাটি সমগ্র বিশ্বের মানুষ অপেক্ষা সম্পূর্ণ আলাদা। অর্থাৎ তারা তাদের এত দুঃখ, কষ্টকে কখনোই অন্যের সামনে প্রকাশ করতে পারে না। তাদের সম্পূর্ণ দুঃখ-কষ্ট তারা নিজেদের ভিতর সব সময় চাপা দিয়ে রাখে। আপনি এসব গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে আপনি কখনোই বুঝতে পারবেন না যে এদের কত কষ্ট। কারণ তারা আপনার সাথে সব সময় হাসিমুখে কথা বলবে।
আসলে এই সাহসী মহিলাটিকে আমি দূর থেকে দেখতে পেলাম যে উনি এই পাটকাঠির আঁটি নিয়ে বাড়ির দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ আমার মনে হয় ওনার বাড়িতে অন্য কোন কাজ রয়েছে যেটি এই কাজ অপেক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবুও তিনি খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন না। বাড়ি যাওয়ার সময় তিনি যদি এই পাটকাঠির এক আঁটি বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন তাহলে তার কাজ সামান্য হলে অনেকটাই এগিয়ে যাবে। আসলে গ্রামের মানুষের বুদ্ধিমত্তা অনেক বেশি শহর অপেক্ষা। এছাড়া ঐসব মহিলারাও কিন্তু সব সময় কঠোর পরিশ্রম করে তাদের নিজেদের উন্নতির জন্য।
আসলে পাট জলে ভিজিয়ে রাখলে এই জল কিন্তু নোংরা হয়ে যায় অর্থাৎ দূষিত হয়ে যায়। এছাড়াও এসব জলে জন্ম নেয় বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়। এমনকি মশার উৎপত্তি হয় এই জল থেকে। আর এই দূষিত জল থেকে গ্রামের মানুষগুলো পাটের আঁশ ছাড়িয়ে সেই আঁশ রোদে শুকায়। যদিও তাদের এই জলের ভিতরে কাজ করতে হয়। ফলে তাদের বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়। কিন্তু যতই রোগ হোক না কেন তারা তাদের কাছ থেকে এক মুহূর্তের জন্য পিছিয়ে যায় না।
আসলে গ্রাম বাংলার মানুষের প্রতিটি কাজের দক্ষতা অনেক বেশি থাকে শহর অঞ্চলের লোক অপেক্ষা। তারা অনেক দক্ষতার সহিত বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করে থাকে। এছাড়াও তারা শহরের লোক অপেক্ষা অনেক বেশি পরিশ্রম করতে পারে। আমরা সাধারণত অল্প কাজ করে একদম হাঁপিয়ে যাই। কিন্তু আপনারা দেখুন এই গ্রামের লোকেরা সারাদিন রোদের নিচে, বৃষ্টিতে ভিজে এবং এই নোংরা জলে সারাদিন কাজ করেই চলেছে। তারা কখনো এক মুহূর্তের জন্য বিশ্রাম নেয় না। একদম কাজে শেষে তারা বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নেয়।
আসলে দূর থেকে এই মাঠের পাটের কাঠি দিয়ে সারি সারি পাটের আঁটি খাড়া করে রাখায় এক অসাধারণ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও তারা এটি অনেক বুদ্ধিমত্তর সাথে করে থাকে। কারণ যে কোন সময় ঝড় বৃষ্টি আসতে পারে। কিন্তু কোন ঝড়-বৃষ্টি এই পাটের আঁটিগুলোকে ফেলতে পারবে না। এভাবে পাটকাঠি রাখার প্রধান কারণ হলো রোদে যাতে এই পাটের কাঠিগুলো শুকিয়ে যায়। আসলে একজন মহিলা মাঠের মাঝখান থেকে এই পাটের কাঠিগুলো এনে এই উঁচু জায়গাতে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখছেন।
ক্যামেরা পরিচিতি : CANON
ক্যামেরা মডেল : Canon EOS 6D Mark II
ক্যামেরা লেংথ : 42 mm
আশাকরি আজকের এই ফটোগ্রাফিক পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
ভাই আপনি আজকে খুব চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো আমার এমনিতেই ভীষণ ভালো লাগে। আপনার প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি চোখ ধাঁধানো ছিল। আসলে এ ধরনের ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে কার না ভালো লাগে। এত সুন্দর করে ফটোগ্রাফি গুলো করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার গ্রাম বাংলার ফটোগ্রাফি গুলো এক কথায় অসাধারণ। এত চমৎকার ফটোগ্রাফি কি করে করেন তাই চিন্তা করছি ।তবে প্রতিটি ফটোগ্রাফির নিচের বর্ণনা পড়ে সত্যি ভীষণ ভালো লেগেছে। আর প্রতিটি ফটোগ্রাফি দেখেছি আর চিন্তা করেছি সবগুলো ফটোগ্রাফি করতে আপনাকেও তো এই মানুষগুলোর খুব কাছে যেতে হয়েছে ।যেখানে প্রথম ফটোগ্রাফিতে দেখলাম এক মহিলা জলাভূমি থেকে পাট কাঠি মাথায় নিয়ে যাচ্ছে ।আপনার তো তাহলে ওই জলাভূমিতে নামতে হয়েছিল ফটোগ্রাফি করার জন্য ।যাইহোক সত্যি চমৎকার ছিল ।ধন্যবাদ আপনাকে।
বাহ্!বাহ্!বাহ্! দেখে তো একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমি আমার মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি ভাই।দেখে খুবই ভালো লাগলো। আমারও ফটোগ্রাফি করার অনেক শখ।আপনার জন্য অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
দাদা আপনার ফটোগ্রাফি মানে একদম অসাধারণ। প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার বলে কথা। অনেক ভালোলাগে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো। অসংখ্য ধন্যবাদ যথাযত বর্ণনার মাধ্যমে সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়।
আপনার ফটোগ্রাফি গুলো সব সময় খুব চমৎকার হয়। আজকের ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এবং প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফির সাথে যে বর্ণনাগুলো দিয়েছেন সেগুলো তো আরো অসাধারণ ছিল। গ্রাম বাংলার সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
এলোমেলো ফটোগ্রাফি হলেও অনেক অসাধারণ একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট করেছেন দাদা। আপনার ফটোকপি গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে আপনি একজন ভালো মানের প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। সব মিলিয়ে একটি দুর্দান্ত পোস্ট ছিল আজকেক ফটোগ্রাফি পোস্টটি
আপনার ফটোগ্রাফির দক্ষতা খুবই ভালোভাবে শেয়ার করেছেন। খুবই সুন্দর সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করার মাধ্যমে কর্মঠ মানুষের কিছু কষ্টকর এবং ঐতিহ্যবাহী কিছু ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করে সবাইকে দেখানোর জন্য।