আজ পঁচিশে বৈশাখ।

in আমার বাংলা ব্লগ20 days ago

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,


সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।


received_1192329868772512.jpeg

[সোর্স](মেটা এ আই)







আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।



পতন-অভ্যুদয়-বন্ধুর পন্থা, যুগ-যুগ ধাবিত যাত্রী।
হে চিরসারথি, তব রথচক্রে মুখরিত পথ দিনরাত্রি।
দারুণ বিপ্লব-মাঝে তব শঙ্খধ্বনি বাজে
সঙ্কটদুঃখত্রাতা।
জনগণপথপরিচায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!
জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয় জয় হে॥

আজ পঁচিশে বৈশাখ। সকাল থেকেই রোদের তীব্রতায় ভরে আছে জানলার বাইরে গাছের পাতাগুলো। মনে পড়ছে ছোটবেলায় মা কীভাবে প্রতি বছর এই দিনে রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন— “হে নুতন দেখা দিক আর বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ”। বুঝতাম না ঠিক কতখানি শুভ এই দিন, কিন্তু মায়ের চোখের উজ্জ্বলতা দেখে মনে হতো, এ যেন দুর্গাপুজোর মতোই এক আত্মিক উৎসব।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বইয়ের পাতায়, গানের কলিতে, নির্জন দুপুরে কবিগুরুর হাতে ধরা পড়ে গেলাম। “অন্তরে অন্তরে বাজে”, “যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়”— এইসব পংক্তি আমার ভালোবাসা আর বিচ্ছেদের সংজ্ঞা গড়ে দিল। একদিন হঠাৎ বুঝলাম, রবীন্দ্রনাথ শুধু কবি নন, তিনি এক আত্মীয়। আমার ভাবনার, আমার বিষণ্নতার, আমার সম্ভ্রমের ভাষা।

আজ যখন চারপাশে এত বিভেদ, এত হিংসা, তখন “মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ”— এই লাইনটা যেন অন্তরের জোর জোগায়। পঁচিশে বৈশাখ তাই শুধু জন্মদিন নয়, মনে হয় যেন আমার নিজের অস্তিত্বের শিকড়ে ফিরে যাওয়ার দিন। মনে পড়ে যায়— যতই অন্ধকার হোক, একটা গান, একটা কবিতা, একটা কথা— থেকে যায় আমাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য।

মনে মনে বলি বাতাসে লাশের গন্ধে ছুটে আসে চিল। এই দ্বন্দ্ব অনিবার্য। অধর্মের বিনাশ চায় সমাজ, সভ্যতা।

বেশ কয়েকমাস পর কলকাতা গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম জোড়াসাঁকো ঘুরে আসব। কিন্তু কাজ মেটাতে গিয়ে আর সময় করে উঠতে পারলাম না। প্রথমবার রবিঠাকুরের সামনে বসিনি। শুধু রাস্তায় দেখেছি মানুষহীন প্রকৃতি একাই বেচাকেনা করছে। সামান্য দু'এক জন লাল সাদা শাড়িতে সজ্জিত। অথচ কী গমগমে ছিল এই দিন৷ কেন এই শূন্যতা? মানুষ হয়তো ভয় পেয়েছে৷ ভারত এই দিনটির জন্য প্রস্তুত ছিল না ঠিকই তবে সকলেই আজ সুস্থ সমাজ চায় এও স্পষ্ট। আশা করি দ্রুত সব ঠিক হয়ে যাবে৷

অতিরিক্ত আঁকড়ে ধরার প্রতি মুহুর্তেই মনে হয়, এই বিশ্বভরা প্রাণের মধ্যে সবচেয়ে আপন সেই গলার স্বর, যেটা বলে— “তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা।”
তাঁরই সমস্ত সৃষ্টি আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি এভাবেই যুগে যুগে বেকচে থাকবেন মানুষের সাথে সভ্যতার প্রাণে।

1000205476.png


1000216462.png

পোস্টের ধরণক্রিয়েটিভ রাইটিং
কলমওয়ালানীলম সামন্ত
মাধ্যমস্যামসাং এফ৫৪
লোকেশনপুণে,মহারাষ্ট্র
ব্যবহৃত অ্যাপক্যানভা, অনুলিপি


1000216466.jpg


১০% বেনেফিশিয়ারি লাজুকখ্যাঁককে


1000192865.png


~লেখক পরিচিতি~

1000162998.jpg

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিত গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।

🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾


1000205458.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNq11oNEiVHeYi1dFPZdD9DtfDnLSeGtLw3tXF7pNDf1KxPvxfffo2xboPm7wR8jPkKYie3LXrW.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQSBbshXsaBma59uahG3EZgK1iDXVoywUGGxx1xjvsB7gc2x2aoAvMJQKdwPc9f7Bh4cuj9tdr6.png

1000205505.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 20 days ago 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে এমন হৃদয়স্পর্শী লেখা সত্যিই প্রশংসনীয়। আপনার ব্যক্তিগত স্মৃতি, অনুভূতি আর কবিগুরুর সঙ্গে আত্মিক সংযোগ মন ছুঁয়ে গেল। বর্তমান সময়ে তাঁর বাণী আমাদের পথ দেখাক। এমন সাহিত্যচর্চা সবসময় জারি থাকুক। শুভেচ্ছা রইল লেখনী ও জীবনের পথে।

 20 days ago 
1000448531.jpg1000448530.jpg1000448529.jpg1000448528.jpg1000448527.jpg