অনেকদিন পর এঁকে ফেললাম একগুচ্ছ পদ্মফুল। আর্ট পোস্ট।
<
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।


আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
গতকালই বলেছিলাম যে একটি ছবি আঁকছি আর সেটা সম্পূর্ণ হয়নি। আজ তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই বাড়ির সমস্ত কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি করে বসে পড়েছিলাম ছবিটা নিয়ে। এবং সেটা সম্পূর্ণ করলাম।
অনেকদিন ছবি না আঁকলে হাত বসে যায়। তখন ছবি খুব একটা ভালো হয় না। তবে এবার এঁকে কিন্তু সেরকমটা মনে হয়নি। যদিও নিজের কাজ নিজেই ভালো বলবো এই মানসিকতা আমার কখনোই নয় তবুও এই ছবিটা হয়ে যাওয়ার পর আমি মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছিলাম। ভাবছিলাম সত্যিই কি এত সুন্দর দেখতে আর আমি পারলাম!
ভারতের জাতীয় ফুল হলো পদ্মফুল। ছোটবেলা থেকেই খুব সহজ পদ্ধতিতে এঁকেছি। কখনো এইভাবে ফোটা পদ্ম ফুল আঁকিনি। তাই বলা চলে প্রথমবার এবং হাতে খড়ি। হয়ে যাওয়ার পর একেবারেই মনে হচ্ছে না যেন প্রথমবার।।
রং দেওয়ার সময় যখন ডমসের কালার পেন ব্যবহার করছিলাম তখন দেখলাম এই ছবিতে ব্রাশ পিন ব্যবহার করা যাবে না। ব্রাশে আমি প্রেমের থেকেও বেশি সাবলীল তাই ব্রাশই ধরে নিলাম।
কেমন হয়েছে বলুন তো?
তবে আগে দেখে নিন কিভাবে এঁকেছি আর কি কি লাগলো।
- ডমসের কালার পেন
- স্কেচবুক
- পেন্সিল
- ওয়াটার কালার
- তুলি
- স্কেল
- ইরেজার
আসুন ধাপে ধাপে দেখে নিই কিভাবে এঁকেছি।
🌷ধাপ-১🌷
![]() | ![]() | ![]() |
---|
প্রথমে স্কেচবুকের উপর পেন্সিল ও স্কেলের সাহায্যে পাতা বর্ডার এঁকে নিলাম।
এবার পাপড়ি এঁকে নিলাম পদ্মের কুঁড়ি বানাবো বলে। এবং বানিয়েও ফেললাম।
🌷ধাপ-২🌷
![]() | ![]() |
---|
- এভাবে আরও একটি কুঁড়ি এঁকে নিলাম।
🌷ধাপ-৩🌷
![]() | ![]() | ![]() |
---|---|---|
![]() | ![]() | ![]() |
দুটো কুঁড়ি এঁকে নেওয়ার পর বড় ফুল আঁকবো তাই একেবারে বাম দিকের ভুলটা আগে শুরু করলাম।
মাঝে ডিম্বাকার একটি গোল এঁকে নিয়েছি প্রথমে যা বীজের ছবি হবে। এবং এটিকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন আকারের পাপড়ি আঁকলাম।
এমনভাবে এঁকেছি যেন মনে হচ্ছে পদ্ম টা ফুটে রয়েছে। ফুলের নিচ থেকে একটি কান্ড একেবারে নিচে পর্যন্ত টেনে দিলাম।
একেবারে বামদিকের ফুলটা হয়ে যাওয়ার পর মাঝের দিক করে আরেকটি ফুল আঁকলাম। ওই একই পদ্ধতিতে এঁকেছি।
ধাপে ধাপে ছবি দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।
🌷ধাপ-৪🌷
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
পদ্মগুলো মোটামুটি এঁকে ফেলেছিসাথে কান্ডগুলোও। এবার একটু একটু করে পাতা এঁকে নিচ্ছি।
পাতাগুলো শেষ করে নেওয়ার পর ডানদিকের নিচের দিকে একটি ফুল এঁকেছি। কারণ বড্ড খালি খালি লাগছিল।
পেন্সিলের কাজ এখানেই শেষ। এবার রঙের কাজ করব।
🌷ধাপ-৫🌷
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
আমার যেহেতু ওয়াটার কালারের কেক রয়েছে তাই অল্প একটু রং আর অনেকটা জল মিশিয়ে দিলেই রং তৈরি হয়ে যায়। একদম হালকা করে রং বানিয়ে প্রথমে গোলাপি রং দিয়ে পদ্মফুল এবং কুঁড়িগুলোর রং করে নিয়েছি।
এবার পদ্ম পাতার ওপরের অংশটা অ্যাকোয়া গ্রিন রঙ দিয়ে একে নিলাম। একেবারেই পাতলা করে। কারণ শেডিং-এর জন্য বেস কোড পাতলাই দিতে হয়।
আর পা চারতলার দিকটা রং দিয়েছি লেমন গ্রিন। একই রকম পাতলা করে।
🌷ধাপ-৬🌷
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
এবার দেখুন দ্বিতীয় কোড রংটা দিলাম।
দ্বিতীয় কোড রং শুকিয়ে যাবার পর তৃতীয় করে শেডিং করলাম রং দিয়েই।
যেহেতু সবুজ রঙের কাজ করছি তাই একেবারে কান্ডগুলো রং করে নিলাম। হলুদ আর লেমন গ্রীন এই দুটো কালার মিশিয়ে।
🌷ধাপ-৭🌷
![]() | ![]() |
---|
এবার আমি ব্যাকগ্রাউন্ড টা করে নিচ্ছি।
কাঁচা হলুদ রঙ দিয়ে একেবারেই শেড দিলাম। আসলে হলুদ রঙ খুব সহজেই বসে যায়৷ তাই বার বার কোড দিতে হয় না৷
হলুদ ও সবুজ রং দিয়েই মাঝের ডিম্বাকৃতিগুলো এবং তার নিচের অংশটুকু রং করে নিলাম।
🌷ধাপ-৮🌷
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
এবার আমি ব্রাশ পেন দিয়ে বর্ডার করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সত্যি বলতে কি সেটা হয়নি।
তাই জিরো জিরো ব্রাশ দিয়ে বাকি ফুলের শেডিং টা করলাম।
একইভাবে পাতাগুলো করে নিলাম। মাঝি রেখার চিহ্ন দিয়েছি একই কালার ব্যবহার করে। ফুলের পাপড়িতে ও লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন।
এ কাজগুলো শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমি মাঝের বীজটি এঁকে নিলাম ঠিক করে।
একই রং একটু গাঢ় করে নিয়ে ফুল এবং পাতার বর্ডার লাইন টা ঠিক করে এঁকে নিলাম।
🌷ধাপ-৯🌷
- মাঝের বীজটিও একটু রিয়েলিস্টিক করার চেষ্টা করলাম।
🌷ধাপ-১০🌷
- নিজের সই করে দিলাম।
এভাবেই শেষ হয়ে গেল আমার এই পদ্ম ফুলের ছবিটি। আসুন দেখেনি ফাইনাল লুক কেমন হয়েছে। কারণ আমি বেশ কিছু ছবি তুলেছি।
ছবিটি শুরু করেছিলাম গতকাল সন্ধ্যে থেকে আর শেষ হলো আজ প্রায় বেলা সাড়ে বারোটাতে। আসলে এখন একটানা ছবি আঁকতে পারিও না কারণ প্রচন্ড পিঠে ব্যথা করে। তাই এই সমস্ত কাজ যেহেতু সূক্ষ্ম এবং সময় সাপেক্ষ তাই সময় নিয়ে করি।
তাহলে বন্ধুরা আজকে আমার নিবেদন আপনাদের কেমন লাগলো জানাবে না অবশ্যই। অনেকদিন পর আর্ট পোস্ট নিয়ে এলাম তাই নিজেও মনে মনে অনেক আনন্দ পেয়েছি।
ভালো থাকুন আবার আসব আগামীকাল অন্য কোন পোস্ট নিয়ে। আজ
টা টা

পোস্টের ধরণ | আর্ট পোস্ট |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | আইফোন ১৪ |
লোকেশন | পুণে,মহারাষ্ট্র |
১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক খ্যাঁককে

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
বেশ অনেকদিন পর আপনার আর্ট পোস্ট দেখে বেশ খুশি হলাম। কি সুন্দর এঁকেছেন! মুগ্ধ হলাম আর্টটি দেখে।প্রতিটি কাজ খুব নিখুঁতভাবে করেছেন। বেকগ্রাইন্ড এ হলুদ রং ব্যবহার করায় আর্টটি আরও বেশি ফুটে উঠেছে। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপু। আপনারা সুন্দর বললে আবারও কিছু আঁকার ইচ্ছে প্রকাশ করি। ভালো লাগল আপনার মন্তব্যে।
https://x.com/neelamsama92551/status/1902314729198207372?s=19
একগুচ্ছ পদ্মফুল দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। খুবই সুন্দর একটি চিত্র অংকন করেছেন। এত সুন্দর ভাবে এই চিত্রটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাই৷ অনেকদিন পর রঙ তুলি ধরলাম। আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
বাহ আপু আপনি তো বেশ চমৎকার একটি আর্ট শেয়ার করেছেন। আপনার এত সুন্দর আর্ট দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। পদ্মফুল দেখতে একদম বাস্তবের মতো দেখাচ্ছে। ফাইনাল আউটপুট দেখে একদমই বোঝা যাচ্ছে না এটা আর্ট। আমি তো ভেবেছিলাম ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। আর্ট কালার কম্বিনেশন অসাধারণ হয়েছে। ধাপগুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনার আর্ট দেখেই বুঝতে পারছি অনেকটা সময় নিয়ে সম্পূর্ণ করেছেন। ধন্যবাদ আপু এত চমৎকার একটি আর্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু। অনেকটাই সময় লেগেছে। আসলে আমি তাড়াহুড়ো করে আর যাই করি ছবি আঁকা আমার দ্বারা হয় না৷ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করলেন এবং আমার পোস্টটি দেখলেন।
অনেকদিন পর আর্ট করতে বসেও এত পারফেক্ট আর্ট করেছেন। দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ব্যাকগ্রাউন্ডে হলুদ রংটা খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। ফুলগুলো বেশ চমৎকার ভাবে রং করেছেন। কচুরিপানার পাতা গুলো পারফেক্টলি আর্ট করেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা আর্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনারা সবাই বলছেন মানে সত্যিই ভালো হয়েছে। আমারও ভালো লেগেছিল। সত্যি বলতে কি সামনে থেকে আরও ভালো লাগছিল। ছবিতে তো সবটা একই আসে না৷ আর এগুলো আমি এডিট করিনি। এত্তো ধন্যবাদ জানাই আপু৷
একগুচ্ছ পদ্মফুলের এমন চমৎকার চিত্র অঙ্কন দেখে সত্যিই মুগ্ধ হলাম। দীর্ঘদিন পর আর্ট করেও এত নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। বিশেষ করে হলুদ ব্যাকগ্রাউন্ড ও কচুরিপানার পাতার শেডিং দারুণ লেগেছে। এত সুন্দর একটি চিত্রকর্ম শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
চেষ্টা করেছি আপু। আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব খুশি হলাম। ভালো থাকবেন। আর আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন৷
আপু, আপনার শেয়ার করা আর্টটি সত্যিই অসাধারণ হয়েছে। পদ্মফুলটি এত বাস্তবসম্মত লেগেছে যে প্রথমে মনে হয়েছিল এটি কোনো ফটোগ্রাফ। রঙের কম্বিনেশন দারুণ হয়েছে, আর প্রতিটি ধাপ এত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন যে বোঝাই যাচ্ছে, আপনি সময় ও মনোযোগ দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করেছেন। এমন সুন্দর একটি আর্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
সত্যিই এত সুন্দর হয়েছে! অনেক বেশি আপ্লুত হলাম আপনার মন্তব্য পড়ে। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অনেক অনেক ভালো থাকবেন।
আপনি তো অনেক সুন্দর আর্ট করেন আপু। একগুচ্ছ পদ্ম ফুল আর্ট করেছেন সত্যিই অনেক সুন্দর হয়েছে। ধাপে ধাপে অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করেছেন। ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
চেষ্টা করেছি আপু। আমার চেষ্টা যে আপনাদের ভাল লেগেছে তা জানতে পেরে খুবই আনন্দিত হলাম। ধন্যবাদ নেবেন।
অপূর্ব নিখুঁত আর্ট। দেখে মনে হচ্ছে বিলে ফোটা তারতাজা পদ্ন ফুল।অসাধারণ সুন্দর হয়েছে। ভারতের জাতীয় ফুল পদ্ম জেনে ভালো লাগলো। আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা।অনেক সময় নিয়ে ধৈর্যসহকারে পদ্মফুল আর্ট পদ্ধতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ তোমাকে।
অনেক ধন্যবাদ। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। আমার আঁকা যে তোমার ভালো লেগেছে তা জেনে খুশি হলাম।