দিনের শেষে একটু কথাবার্তা বলি।। কথপোকথন পোস্ট।।

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

।। নমস্কার বন্ধুরা।।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত



বন্ধুরা, কেমন কাটল আজকের দিনটি? ভালো আছেন নিশ্চই। ঈশ্বরের আশির্বাদে আশাকরি সবার ভালোই কাটছে৷ আমারও বেশ ব্যস্ততাতেই কেটে গেছে। সকালে বাইরের কাজ অনেক ছিল, সেইগুলি মিটিয়ে বাড়ি ফিরতে ফিরতে দুপুর পেরিয়ে গেল। খিদে তে পেট চুঁই চুঁই অবস্থা। এদিকে বাড়িতে পা দেওয়ার পর বুঝেছি সকালের জলখাবার তো খাওয়াই হয়নি সাথে ব্রাশটাও করতে ভুলে গেছি। কি যাতা ব্যপার বলুন তো! তারপর আবার আজ লেভেল টু এর ভাইভা৷ সব কাজ সেরে একটু পড়লাম।

জানেন ছোটবেলায় যখন পরীক্ষার দিন আসত, আমি শুধু ঘুমোতাম। একটুও পড়তে ভালো লাগত না। খালি ভাবতাম একই পড়া কতবার পড়ব! এদিকে ওঠার জো নেই। মা এর বেত আর বাবার ডান্ডা কিছুই টিকে থাকত না৷ হে হে হে। আসলে আমি এমনিতেই ঘুম কাতুরে। অথচ আজ কিছু লিখতে পারিনি বলে মনটা কেমন ফস ফস করছে৷ কিছু না লিখলে কিভাবে চলে দিন বলুন? তাছাড়া যাই বলি না কেন ভগবান আমায় সমস্ত না পাওয়ার মধ্যে ওই লেখার সামান্য ক্ষমতাটুকুই দিয়েছেন। মানে আমি ওই টুকুই সামান্য পারি। তাই অবহেলা করতে একটুও ভালো লাগে না৷

আচ্ছা এসব গল্প তো চলতেই থাকবে, ফাঁক বুঝে জিজ্ঞেস করে নিই ভারত বাংলাদেশের ক্রিকেট কেমন উপভোগ করছেন? আপনারা উপভোগ করুন। আমি সেই ফাঁকে আমার কল্পনা থেকে খানিকটা কথপোকথন লিখে দিই। যাকে সাহিত্যের আঙ্গিকে পড়লে বসন্ত নেমে আসবে আজকের জাগ্রত দ্বারে৷ সাহিত্যের খাতিরে ধরে নিই কাল দোল। চলুন তবে, শুরু করি।

আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে...

— মন খারাপ?

— তবে এই গানটা গাইছ যে?

— আমারে যে জাগতে হবে...

— কেন?

— কাল দোল।

— সে তো তোমারও। কি করবে? ন্যাড়াপোড়া দেখতে পেলে? বলেছিলে 'আজ আমাদের ন্যাড়া পোড়া কাল আমাদের দোল'?

— হ্যাঁ দেখেছি তো।

— তবে যে বললে তোমার পশ্চিমে ন্যাড়াপোড়া হয় না!

— ন্যাড়াপোড়া মানে কি বলতো?

— কি? আগুন?

— হ্যাঁ৷ আগুন দেখতে কি আর কোথাও যেতে হয়? বন্ধ ঘরে নিজেকে খুললেই তো জ্বলে ওঠে। বিছানা, বালিশ, অনন্তের সুখ সাম্রাজ্যে কত কিই যে পুড়ে যায়, আমি শুধু নিজেকে দেখি, কপাল, চিবুক সব কেমন ঘন চকলেট রঙের হয়ে যায়৷

— কি হয়েছে? এভাবে বলছ কেন?

— চারপাশে বড্ড হাহাকার, এই নরম চাঁদ কেমন অসহ্য হয়ে উঠছে৷

— খুব মনে পড়ে?

— হ্যাঁ৷ আমাদের হাত ধরা ফুটপাত আজও কথা বলে। আমি শুনি। দ্রিমদ্রিম শব্দে ঝর্ণা নামছে, কেউ মাদল বাজাচ্ছে। অনবরত পাতাজন্মের শব্দ। অনবরত আমাদের শব্দ৷

— আমরা তো হারিয়ে যাইনি৷ প্রতিদিনই আমাদের নতুন জন্ম। নতুন বসন্ত৷ তোমার রবিই তো বলেছিলেন 'সখী ভালোবাসা কারে কয় সেকি কেবলই যাতনাময়'

— সেই। না দেখার দিনগুলো বড্ড শাদা জানো।

— কাল যাব?

— না থাক।

— তবে এতো কষ্ট পাও কেন?

— কষ্টের ভেতর অদ্ভুত প্রশান্তি আছে। মাঝ সমুদ্রের মতো ঘন নীল বা নীলচে সবুজ রঙ। দেখলেই বুঝি বেদনার দানাগুলো মজবুত হয়ে উঠছে৷

— এ কেমন পাগলামি!

— পাগলই বটে।

     আমারে যে জাগতে হবে,কী জানি সে আসবে কবে
             এই নিরালায়।
                    আমায় পড়ে তাহার মনে
                     বসন্তের এই মাতাল সমীরণে

তো বন্ধুরা কেমন লাগল ভুলবেন না৷ এই ছোট্ট কথপোকথনে নিজেদের খুঁজে দেখুন না, কিংবা উঠোনে পা রেখে, দেখবেন আবেগে ভরপুর এই পুরনো ক্ষতের চারপাশে অপরাজিতা কিংবা মাধবীলতায় ভরে আছে আজকের আলো। আপনারা উপভোগ করুন৷ আমি আসি।

টাটা!

~লেখক পরিচিতি~

1000162998.jpg

আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। তবে বর্তমানে বেশ কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ বর্তমানে ভারতবর্ষের পুনে তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা



কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।

🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾


Sort:  
 last year 

অজানা চাঁদের রূপ অসহ্য হয়ে উঠলে মাতাল হয় বসন্ত৷ ডুবস্নানে ভিজে যায় চিবুক৷ কষ্টের মধ্যে যে যাপন আছে, তার রূপের মাদকতা সীমানাহীন৷ ঢেউ তোলা সৈকতের কথাই যদি বলি, নিজেকে নিংড়ে নাও হে আদিগন্ত পুরুষ, চোখ ফেলো ফেনীল শাদা রূপে৷ অসাধারণ।

 last year 

কী সুন্দর প্রতিক্রিয়া জানালে। কবিদের প্রতিক্রিয়া বোধহয় এমনই হয়। ভালো থেকো৷