নাটক রিভিউ || চলো হারিয়ে যাই
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে চলো হারিয়ে যাই। এই নাটকটি সপ্তাহ দুয়েক আগে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে তৌসিফ মাহবুব এবং তানজিম সাইয়ারা তটিনী। এই নাটকটি একটি বাস্তব সম্মত নাটক,তাই দেখতে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | চলো হারিয়ে যাই |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | হাসিব হোসাইন রাখি |
অভিনয়ে | তৌসিফ মাহবুব, তানজিম সাইয়ারা তটিনী,আবুল হায়াত,দিলারা জামান এবং আরো অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ৩রা জুলাই ২০২৫ |
দৈর্ঘ্য | ১ ঘন্টা ২৮ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের নায়িকা তটিনী হচ্ছে আর জে এবং নায়ক তৌসিফ একটি অফিসে জব করে। তটিনীর শো শুনতে তৌসিফ ভীষণ পছন্দ করে। এমনকি তৌসিফ অফিসের কাজ করার সময়ও,তটিনীর শো শুনতো। তো একদিন তৌসিফের অফিসের বস এটা নিয়ে তার সাথে রাগারাগি করে এবং এক পর্যায়ে তৌসিফ চাকরিটা ছেড়ে দেয়। তটিনী তার কাজটাকে খুব ভালোবাসে এবং সে কঠোর পরিশ্রম করে। এই ব্যাপারটা তটিনীর অফিসের সবাই কমবেশি জানে। তাই সবাই ভেবেছিল তটিনী সেরা এমপ্লয়ি নির্বাচিত হবে। কিন্তু তটিনীর অফিসের বস তার গার্লফ্রেন্ডকে অফিসের সেরা এমপ্লয়ি নির্বাচিত করে। এতে করে তটিনী প্রচন্ড কষ্ট পায় এবং সে বাসায় গিয়ে মুড অফ করে বসে থাকে। তটিনীর বান্ধবী যে ছেলের সাথে প্রেম করে,তার সাথে নাকি তার ব্রেক আপ হয়ে যাবে এবং সেজন্য তারা ট্যুরে যাবে। তো তটিনীর বান্ধবী তটিনীকেও তাদের সাথে যাওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট করে, কিন্তু তটিনী রাজি হয় না।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তবে তটিনী তার অফিসের বসের উপর জেদ করে শেষ পর্যন্ত ট্যুরে যেতে রাজি হয়। তারপর তটিনীর বান্ধবী আরও একটি টিকেট ম্যানেজ করতে বলে তৌসিফকে, কিন্তু তৌসিফ তটিনীর জন্য ট্রেনের টিকেট ম্যানেজ করতে পারে না। মূলত তৌসিফ সেই ট্যুরের সবকিছু অ্যারেঞ্জ করে। তৌসিফ মোট ছয়টি ট্রেনের টিকেট ম্যানেজ করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটা শেয়ার করে। তটিনীকে ছাড়াই ৬ জন সিলেক্ট হয়ে যায় এবং তারা ছয়জন ট্রেন স্টেশনে হাজির হয়। এদিকে তটিনীও ট্রেন স্টেশনে হাজির হয় এবং শেষ পর্যন্ত তারা ৭ জন একসাথে ট্যুরে যায়। তারা রাতে কক্সবাজারে পৌঁছে যায় এবং তাঁবুর মধ্যে রাতে থাকে। যদিও তাঁবু ছিলো ৬টা,তাই তৌসিফ অন্য জায়গায় গিয়ে রাতে ঘুমায়। ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার যাওয়ার সময়ই,তটিনী বারবার এটা সেটা বলে তৌসিফকে রাগান্বিত করার চেষ্টা করে। তবে তৌসিফ সেটা ভালোভাবে হ্যান্ডেল করে। তো ট্যুরে গিয়েও তটিনী এমনটা করে থাকে তৌসিফের সাথে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তারা সেখানে গিয়ে দারুণ সময় কাটাতে থাকে। তো সবাই একসাথে আড্ডা দেওয়ার সময়, একে অপরের ব্যাপারে অনেক কথা জানতে চায়। প্রথমে তৌসিফ তার নিজের কথা বলে এবং সে কথা বলার মাঝে,তটিনীর কয়েকটি ডায়ালগ বলে। অর্থাৎ তটিনী যখন শো করে,তখন সেই কথাগুলো বলে। আর তটিনীকে সে না দেখেই ভালোবেসে ফেলে। তো তৌসিফের কথা শুনে, তটিনী এবং তটিনীর বান্ধবী সেটা বুঝে ফেলে। কিন্তু তবুও তটিনী বলে না, সে হচ্ছে সেই আর জে। আর তৌসিফ তো জানতো-ই না তটিনী যে সেই আর জে। যাইহোক সেখানে কথাবার্তা বলার সময়, তটিনীর বান্ধবী এবং তার বয়ফ্রেন্ড একে অপরের ভুল বুঝতে পারে। তারপর তারা দু'জন এক হয়ে যায়,অর্থাৎ তারা তাদের সম্পর্ক কন্টিনিউ করবে। আবুল হায়াত এবং দিলারা জামানের কাছ থেকে যখন জানতে চাওয়া হলো,তারা কেনো এই ট্যুরে আসছে। তখন তারা সবকিছু শেয়ার করলো।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
আসলে তাদের দুই ছেলে এবং এক মেয়ে আছে, কিন্তু তারা কেউ তাদের সাথে থাকে না। দুই ছেলে দেশে থাকে ঠিকই, কিন্তু নিজের পরিবার নিয়ে আলাদা থাকে। অর্থাৎ তারা দু'জন একেবারে একাকী জীবনযাপন করে। একটি ছেলে তাদের সাথে যায় এবং সে সারাক্ষণ চুপচাপ থাকে। তো তার কাছ থেকে জানতে পারে,সে এতিমখানায় বড় হয়েছে এবং সে ক্যান্সারে আক্রান্ত। এটা শুনে সবার মন খারাপ হয়ে যায়। যাইহোক পরবর্তীতে তটিনী এটা সেটা জিজ্ঞেস করে পরীক্ষা করে তৌসিফকে। সে তৌসিফকে বলে,আপনার ভালোবাসার মানুষ যদি দেখতে সুন্দর না হয়,তাহলে কি করবেন এবং এই জাতীয় আরও কিছু প্রশ্ন করে। অর্থাৎ তটিনী যাচাই করছে, সে সত্যি সত্যিই তাকে না দেখে ভালোবাসে কিনা। যাইহোক এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
আসলে আমাদের যখন প্রচন্ড মন খারাপ থাকে কিংবা আমরা কোনো ব্যাপার নিয়ে হতাশায় ভুগে থাকি,তখন কিন্তু আমাদের দূরে কোথাও ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করে। কারণ দূরে কোথাও ঘুরতে গেলে,আমাদের মনটা কিছুটা হলেও শান্ত হয়। এই নাটকেও এমনটা দেখা গিয়েছে। তৌসিফ রাগ করে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে বলে ঘুরতে গিয়েছে। তটিনী অফিসের বসের সাথে রাগ করে ট্যুরে গিয়েছে। তটিনীর বান্ধবী এবং তার বয়ফ্রেন্ডের সম্পর্ক খারাপ হয়ে গিয়েছিল বলে,তাদের মন খারাপ ছিলো এবং সেজন্য তারা ঘুরতে গিয়েছিল। তাছাড়া আবুল হায়াত এবং দিলারা জামানের ছেলে মেয়েদের কারণে তাদের মন খারাপ ছিলো বলে তারা ঘুরতে গিয়েছে। তাছাড়া এতিম একটি ছেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং তার মন প্রচন্ড খারাপ বলে সে ঘুরতে গিয়েছে। তো সেখানে গিয়ে কারো সমস্যার সমাধান হয়েছে এবং কেউ কেউ সাময়িকভাবে কিছুটা হলেও শান্তি পেয়েছে। তাই মাঝেমধ্যে সবারই একটু ঘুরাঘুরি করা উচিত। যাইহোক তৌসিফ এবং তটিনীর অভিনয় সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করেছি।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S24 Ultra |
তারিখ | ১৮.৭.২০২৫ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
ডেইলি টাস্ক স্ক্রিনশট এবং লিংক:
https://x.com/mohin3242127/status/1946074382851543075?t=U3-a9-XjOdf6xsm6v2qHJQ&s=19
https://x.com/mohin3242127/status/1946075081916178454?t=bROsMNaY_joJNbxlaTD0sw&s=19
X-promotion
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
তটিনী আমার খুবই পছন্দের অভিনয়শিল্পী। আর উনার নাটক গুলো দেখতে ভালো লাগে। এই নাটকটি দেখা হয়নি। সময় পেলে দেখব ভাই। খুবই ভালো লাগলো নাটক রিভিউ পড়ে।
তটিনীর অভিনয় কিন্তু আসলেই খুব সুন্দর হয়। যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বাংলাদেশের নাটকগুলো আমাকে খুবই মুগ্ধ করে। ভীষণ ভালো লাগে এবং ভীষণ পছন্দ হয় বাংলাদেশের নাটক গুলো। আমি প্রায় সময়ই এই নাটকগুলো দেখে থাকি। আজকের নাটকটি ও বেশ সুন্দর। নাটকের এই নায়ক নায়িকার অভিনয় আমার ভীষণ পছন্দ হয়। ধন্যবাদ এই নাটকের সুন্দর দিয়েছেন আপনি।
আপনি বাংলাদেশের নাটক দেখে থাকেন, জেনে খুব ভালো লাগলো দাদা। নাটকের রিভিউ পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি আজকে আমার খুবই পছন্দের নায়ক নায়িকার নাটকের রিভিউ করেছেন। তারা দুজনে কিন্তু সব সময় তাদের নাটকে অনেক সুন্দর অভিনয় করে থাকে। আপনি আজকে যে নাটকটার রিভিউ করেছেন, এই নাটকের কাহিনীটা দারুন ছিল। আমি তো ভাবছি সময় পেলে এই নাটকটা দেখব।
এই নাটকের কাহিনী আসলেই খুব সুন্দর। যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
পুরো কাহিনীটাকে সংক্ষেপে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য প্রথমে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন এই সুন্দর নাটকটির রিভিউ। এই নায়ক নায়িকা আমার অনেক পছন্দের। তাদের অভিনয় আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। অনেক আগে থেকেই আমি তাদের নাটক দেখি। তাদের দুজনের অভিনয় অনেক সুন্দর হয়।
এই নায়ক নায়িকার অভিনয় আমার কাছেও খুব ভালো লাগে। এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার শেয়ার করা আজকের এই নাটকের নাম দেখে মনে হচ্ছে যে নাটকটি অনেক সুন্দর হবে৷ আর আজকে যেভাবে আপনি এত চমৎকারভাবে এই নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তা দেখে আরো অনেক বেশি ভালো লাগছে৷ একই সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করার মধ্য দিয়ে আপনার কাছ থেকে যেভাবে সুন্দর একটি নাটক সম্পর্কে জানতে পারলাম৷ আমি অবশ্যই এই নাটকটি সময় পেলে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব৷
হ্যাঁ, সময় পেলে নাটকটি দেখতে পারেন। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।