লাইফস্টাইল পোস্ট || শপিংমল প্রজেক্টে ইফতার পার্টি করার অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি লাইফস্টাইল পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। গত শনিবার অর্থাৎ ১৫ই মার্চ আমাদের শপিং মল প্রজেক্টে ইফতার পার্টি ছিলো এবং আজকে সেই অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। প্রায় প্রতি বছর রমজান মাসে বিভিন্ন জায়গায় আমরা বেশ কয়েক দিন ইফতার পার্টির আয়োজন করে থাকি। তবে এই বছর প্রচন্ড ব্যস্ততার কারণে শুধুমাত্র ২ দিন ইফতার পার্টির আয়োজন করতে পেরেছি। গত শুক্রবার অর্থাৎ ১৪ই মার্চ এক বন্ধুর বাসায় ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলাম। যদিও ছবি তোলা হয়নি বিধায়,আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়নি। তাই পরের দিন শপিংমল প্রজেক্টে যে ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলাম,সেটার ফটোগ্রাফি ক্যাপচার করেছিলাম।
কোলাজ মেকার অ্যাপ দিয়ে কোলাজ করা হয়েছে
যাইহোক আমরা মোট ২৫০ জন মানুষের আয়োজন করেছিলাম। সম্পূর্ণ আয়োজন করার জন্য আমাদের বাজেট ছিলো ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। শপিংমল প্রজেক্টের কমিটি সদস্য ১০ জন ছিলাম সম্পূর্ণ আয়োজনের দায়িত্বে। তো আমাদের প্ল্যান ছিলো আমরা বাবুর্চি এনে, শপিংমল প্রজেক্টে খাসির তেহারি করবো। তাছাড়া জোহর নামাজের পরপরই ১০ জন হাফেজ শপিংমল প্রজেক্টে গিয়ে, কোরআন তেলাওয়াত শুরু করবে এবং কোরআন খতম করবে। তো প্ল্যান অনুযায়ী আমরা সবকিছুই ঠিক করে রাখলাম। শনিবার সকালে ২ জন গিয়ে ৪০ কেজি খাসির মাংস কিনলো ৪৮,০০০ টাকা দিয়ে। অর্থাৎ প্রতি কেজি খাসির মাংস ১২০০ টাকা। ১০৫০ টাকা কেজি খাসির মাংস পেয়েছিলাম,কিন্তু সেগুলো পানিতে ভিজিয়ে ওজন বাড়ানো হয়। তাই ভালো মানের ৪০ কেজি খাসির মাংস কিনেছিলাম।
তারপর পোলার চাল সহ বিভিন্ন ধরনের মসলা থেকে শুরু করে সবকিছু কিনে ফেললাম। বাবুর্চি এবং হেল্পার বেলা ১২টার আগেই রান্নার আয়োজন করা শুরু করেছিল। তাছাড়া জোহর নামাজের পরপরই ১০ জন হাফেজ একটি শপে বসে,কোরআন তেলাওয়াত করা শুরু করে এবং এক দেড় ঘন্টার মধ্যেই তারা কোরআন খতম করে ফেলে। তারপর তাদের ১০ জনকে ৫,০০০ টাকা দিয়ে দিলাম। অপরদিকে ডেকোরেটর এর লোকজন চেয়ার টেবিল রেডি করে ফেললো। যাতে করে সবাই বসে ইফতার করতে পারে। বাবুর্চি ৩টা ডেগের মধ্যে খাসির তেহারি রান্না করেছিল। প্রতিটি ডেগের মধ্যে ২৫ কেজি করে পোলাও চাল এবং খাসির মাংস দেওয়া হয়েছিল। আমরা মোট ৪০ কেজি খাসির মাংস এবং ৩৫ কেজি পোলাও চাল কিনেছিলাম।
তাছাড়া স্বাস্থ্যকর পানীয় লাবান কিনেছিলাম ২৫০ পিস। তাছাড়া শসা, লেবু এবং খেজুরের জন্য ছোট ওয়ান টাইম বক্স এবং খাসির তেহারির জন্য বড় ওয়ান টাইম বক্স কিনেছিলাম। তাছাড়া সবার জন্য ৫০০ মি.লি. মাম পানির বোতল কিনেছিলাম। তো রান্না শেষ করার পর বাবুর্চি এবং তার হেল্পার মিলে বক্সের মধ্যে খাসির তেহারি দিয়ে রেডি করলো এবং ছোট বক্সের মধ্যে লেবু,শসা এবং খেজুর দেওয়া হলো। তারপর আমরা আছরের নামাজ আদায় করে,সবার সামনে ইফতারের আইটেম গুলো পৌঁছে দিলাম। অর্থাৎ খাসির তেহারি এক বক্সে এবং লেবু,শসা ও খেজুর এক বক্সে এবং লাবান ও মাম পানি দিলাম সবাইকে। উপস্থিতি বেশ ভালোই ছিলো। তবে ২৫০ মানুষের আয়োজন করা হলেও,সর্বমোট ২২০ জনের মতো মানুষ এসেছিল সেদিন।
তো কিছুক্ষণ শপিং মল প্রজেক্ট সম্পর্কে আলোচনা করে, তারপর কোরআন তেলাওয়াত করলেন মাওলানা সাহেব। তারপর মাগরিবের আজান দেওয়ার পর আমরা সবাই একসাথে ইফতার করা শুরু করলাম। আসলে সবাই মিলে ইফতার করার মজাই আলাদা। তাছাড়া খাসির তেহারির স্বাদ ছিলো এককথায় দুর্দান্ত। আসলে আমরা চাইলে রেস্টুরেন্ট থেকে তেহারির অর্ডার দিতে পারতাম। কিন্তু বাবুর্চি দিয়ে শপিংমল প্রজেক্টে রান্না করানোর কারণে তৃপ্তি সহকারে খাবার খেতে পেরেছিলাম। তারপর আমরা মাগরিবের নামাজ আদায় করে বাসায় চলে গিয়েছিলাম। সবাই মিলে ইফতার পার্টি করে বেশ ভালো লেগেছিল। আর এই অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | লাইফস্টাইল |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S24 Ultra |
তারিখ | ২০.৩.২০২৫ |
লোকেশন | চিটাগাং রোড,নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
ডেইলি টাস্ক প্রুফ:
X-promotion
শপিংমল প্রজেক্টে খুব সুন্দর ভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন করেছেন দেখে ভালো লাগলো। এর আগেও একদিন আয়োজন করেছিলেন। উপস্থিতি বেশ ভালোই ছিল। খুব সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার ছিল আয়োজনে। ভালো লাগলো সুন্দর মুহূর্ত গুলো দেখে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
হ্যাঁ আপু পরপর ২ দিন ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলাম। এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
শপিংমল প্রজেক্টে ২৫০ জন মানুষের আয়োজনে বেশ বড়সড়ো ইফতার পার্টি করেছেন দেখছি। বেশ বড় এমাউন্ট নির্ধারণ করেছিলেন। সবাই মিলে খাওয়া দাওয়ার মধ্যেও একটা মজা আছে। রমজান মাসে তো এরকম ইফতার পার্টি হতেই থাকে। বেশ ভালো লাগে কিন্তু। অনেক কিছুই আয়োজন করেছিলেন দেখছি। ইফতার পার্টির চমৎকার মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করে নিয়েছেন পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া।
আপনি ঠিকই বলেছেন আপু,মোটামুটি বড় আয়োজন করেছিলাম সেদিন। যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।