প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। এই পোস্টের টপিক হচ্ছে,টাকা পয়সা কিছু কিছু মানুষকে অহংকারী করে তোলে। আসলে টাকা পয়সা এমন একটা জিনিস, যেটা সবারই দরকার। কারণ টাকা ছাড়া পৃথিবীতে চলা যায় না। বিশেষ করে পুরুষ মানুষকে তো টাকা ইনকাম করতে হবেই। টাকা ইনকাম করার জন্য সবচেয়ে বেশি স্ট্রাগল করে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা। এরমধ্যে অনেকে প্রচুর টাকার মালিক হয়ে যায় এবং তখন তাদের অনেকের মধ্যেই অহংকারী একটা ভাব চলে আসে। যাইহোক মূল কথায় ফেরা যাক, আমার পরিচিত এক লোক মিডল ইস্টে থাকেন এবং তার একজন রুমমেট রয়েছে।

দুজনের বাড়ি বাংলাদেশে একই এলাকায়। তো আমার পরিচিত সেই লোক আগে বিদেশে যায় এবং তার রুমমেট অনেক পরে যায় বিদেশে। আমার সেই পরিচিত লোকের নাম হচ্ছে রশিদ এবং তার রুমমেটের নাম হচ্ছে সালাম। তো সালাম যখন মিডল ইস্টে যায়, তখন সে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলায় পড়ে। তার থাকার জায়গা পর্যন্তও ছিলো না। এমনকি সে রাস্তায়ও রাত কাটিয়েছে। তো সালামের পরিবার ফোনের মাধ্যমে রশিদের সাথে যোগাযোগ করে এবং রশিদ সালামকে তার রুমে থাকতে দেয়। যেহেতু একই এলাকার মানুষ, তাই রশিদেরও মায়া লাগে সালামের জন্য। রশিদ পরবর্তীতে সালামকে চাকরির ব্যবস্থাও করে দেয়। তাছাড়া রশিদ প্রতিদিন রান্না করে এবং প্রয়োজনীয় সবকিছু কেনাকাটা করে। অর্থাৎ সালাম বেশ আরামেই থাকতো। তারা দুজন একই রুমে মোটামুটি ৫/৬ বছর ধরে থাকছে।

তো সালাম অনেকদিন চাকরি করার পর ভাবলো ব্যবসা করবে। পরবর্তীতে সে জামা কাপড়ের একটি দোকান দেয় এবং দোকান মোটামুটি ভালোই চলছিলো। এদিকে রশিদ যে রেস্টুরেন্টে জব করতো,সেই রেস্টুরেন্টের অবস্থা তেমন ভালো না। তো কথায় কথায় রশিদ যখন এসব কথা সালামের সাথে শেয়ার করলো,তখন সালাম রশিদকে বললো তার দোকানে চাকরি করতে। প্রথমে রশিদ রাজি হতে চায়নি, কিন্তু সালাম বেশ কয়েকবার বলাতে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু রশিদ যখন সালামের দোকানে চাকরি করা শুরু করলো,তখন সালামের মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখতে পায়। সে কথায় কথায় রশিদের ভুল ধরে এবং অনেক সময় রশিদকে ধমক দিয়েও কথা বলে। আসলে সালাম দোকান দেওয়ার পর থেকে বেশ ভালো টাকা ইনকাম করছে এবং সেজন্য তার মধ্যে অহংকার চলে এসেছে।

তাই রশিদ সারাদিন ভাবতে থাকে, যে সালামকে রাস্তা থেকে তুলে এনে নিজের রুমে থাকতে দিয়েছে এবং সব ব্যবস্থা করে দিয়েছে, সেই সালাম তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, এটা রশিদ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। আসলে রশিদ কখনো ভাবেনি,এতো উপকার করার পরেও সালাম তার সাথে এমন করতে পারে। তাই রশিদ সেই চাকরি ছেড়ে দেয়। অর্থাৎ সালামের দোকানে এখন আর সে যায় না। তো সেদিন কথাগুলো শুনে আমারই খুব খারাপ লাগলো। মানুষ এতোটা পরিবর্তন হয় কিভাবে। যাইহোক সালাম খুবই জঘন্য কাজ করেছে রশিদের সাথে। এটা তার মোটেই উচিত হয়নি। কারণ রশিদ যদি তার উপকার না করতো,হয়তোবা অনেক আগেই তাকে বাংলাদেশে চলে আসতে হতো। যাইহোক অহংকার করা মোটেই উচিত নয়। এতে করে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর নারাজ হয়ে যান। তাছাড়া বিপদের সময় কেউ উপকার করলে,সেটা সারাজীবন মনে রাখতে হয়। সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি।