নাটক রিভিউ || মন দুয়ারী
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে মন দুয়ারী। এই নাটকটি ৩/৪ দিন আগে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে জিয়াউল ফারুক অপূর্ব এবং নাজনীন নিহা। এই নাটকটি একটি রোমান্টিক নাটক,তাই দেখতে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | মন দুয়ারী |
---|---|
রচনা | নাসির খান এবং জাকারিয়া শৌখিন |
পরিচালনা | জাকারিয়া শৌখিন |
অভিনয়ে | জিয়াউল ফারুক অপূর্ব,নাজনীন নিহা,দিলারা জামান এবং আরও অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ১৮ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫ |
দৈর্ঘ্য | ১ ঘন্টা ৩৬ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের নায়ক অপূর্ব আমেরিকাতে থাকে। অপূর্বর জন্ম মূলত আমেরিকাতে। অপূর্বর মা বাবা অপূর্বর দাদা দাদীকে রেখে, আমেরিকা চলে গিয়েছিল। তারপর থেকে অপূর্বর দাদা এবং দাদীর দেখাশোনা করতো তাদের আত্মীয় স্বজনরা। অর্থাৎ সবাই মিলে একসাথে থাকতো। অপূর্বর দাদা আগেই মারা যায়। তো অপূর্ব আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসে তার দাদীমাকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার জন্য। অপূর্ব এবং তার বাবার ইচ্ছে, অপূর্বর দাদীমা অর্থাৎ দিলারা জামান যাতে তার বাকি জীবনটা আমেরিকাতে কাটায়। নাটকের নায়িকা নিহা হচ্ছে অপূর্বর কাজিন। নিহা অপূর্বর দাদীমাকে ভীষণ ভালোবাসে। তাই নিহা এবং সেই বাসার আরও দুই পিচ্চি যখন জানতে পারলো, অপূর্ব তার দাদীমাকে আমেরিকা নিয়ে যাবে,তখন তারা প্ল্যান করা শুরু করলো, যেভাবেই হোক অপূর্বকে এই বাসা থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে। কারণ তারা দাদীমাকে ছাড়া থাকতে পারবে না। তো অপূর্ব বলেছে তাকে রিসিভ করতে এয়ারপোর্টে কাউকে পাঠানোর দরকার নেই। সে গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে একা একাই বাসায় যেতে পারবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তো অপূর্ব নদী পার হওয়ার আগেই নিহা এবং তাদের বাড়ির একজন কাজের লোক অপূর্বকে রিসিভ করতে যায়। তো গাড়িতে উঠার সময় নিহা অপূর্বর হাত ছেড়ে দেয় এবং অপূর্ব কপালে ব্যথা পায়। তারপর হসপিটালে গিয়ে কপালে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে বাসায় যায়। যদিও অপূর্ব ব্যথা পাওয়ার ঘটনা কাউকে বলে না। কারণ নিহা বলতে নিষেধ করে। যাইহোক অপূর্বকে দেখে বাসার সবাই খুব খুশি হয়। তবে নিহা এবং তার ছোট দুই কাজিন একদিন রাতে অপূর্বকে ভয় দেখায়। তারা তিনজন ভূত সেজে ভয় দেখায় এবং অপূর্ব সেই লেভেলের ভয় পেয়ে যায়। যদিও পরবর্তীতে তারা ধরা পড়ে যায়। ধরা পড়ার পর তারা বলে যে, দাদীমাকে আমরা কিছুতেই নিয়ে যেতে দিবো না। যাইহোক পরবর্তীতে একদিন গ্রামের সবাই অপূর্বকে দেখতে আসে এবং সবাই খুব খুশি হয়। তারপর পরবর্তীতে একদিন বাসার সবাই বসে অপূর্বর বাবার কথা আলোচনা করতে লাগলো। তখন সবাই অপূর্বর বাবাকে স্বার্থপর বলে। কিন্তু অপূর্ব সেটা মেনে নিতে পারে না। অপূর্ব বলে কেউ যদি নিজের উন্নতির জন্য বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যায়, তাহলে সেটাকে স্বার্থপর বলে না।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
কিন্তু নিহার বাবা বলে, কেউ মা বাবাকে রেখে নিজের ইচ্ছাতে এভাবে চলে গেলে সেটাকে স্বার্থপর বলা হয়। তো অপূর্ব কিছুটা তর্ক বির্তক করে এবং সেটা তার দাদীমা পছন্দ করে না। এক পর্যায়ে অপূর্ব বলে তাকে মনে হচ্ছে কেউ পছন্দ করছে না। তাই সে আমেরিকা চলে যাবে। তারপর সে সাথে সাথে বাসা থেকে বের হয়ে চলে যায়। কিন্তু রাস্তায় তাদের বাড়ির কাজের ছেলে অপূর্বকে যেতে নিষেধ করে এবং বলে যে অপূর্ব আসার পর থেকে তার দাদীমা এবং গ্রামের সবাই খুব খুশি হয়েছে। যদি সে চলে যায়, তাহলে সবাই খুব কষ্ট পাবে। বিশেষ করে তার দাদীমা ভীষণ কষ্ট পাবে। এসব ভেবে অপূর্ব বাসায় ফিরে আসে। তো অপূর্ব ফিরে আসায় সবাই বেশ খুশি হয়ে যায় এবং অপূর্বর দাদীমা নিহাকে বলে,অপূর্বকে পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে দেখাতে। অপূর্ব এবং নিহা প্রায়ই ঘুরতে বের হতো। অপূর্ব তো গ্রামের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় এবং নিহার সাথে সময় কাটাতে তার খুব ভালো লাগে। তবে মাঝেমধ্যে আমেরিকা থেকে অপূর্বর গার্লফ্রেন্ড সাফা কবির ফোন করতো এবং তারা শুধু ঝগড়া করতো।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
সাফা কবির অন্য ছেলের সাথে জড়িয়ে পড়েছে ঠিকই, কিন্তু অপূর্বর সাথে সেটা অস্বীকার করতো। যাইহোক অপূর্বর দাদীমা নিহা এবং অপূর্বর বিয়ের কথা চিন্তা ভাবনা করে। এদিকে নিহা তো অপূর্বকে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছে। অপূর্বও নিহার প্রতি দুর্বল হয়ে যায় কিন্তু সে ভাবে যে, আমেরিকাতে তার গার্লফ্রেন্ড,মা বাবা,জব,বাড়ি অর্থাৎ সবকিছু রয়েছে। তাই সে আমেরিকা ফিরে যেতে যায়। তো এটা যখন নিহা এবং অপূর্বর দাদীমা জানতে পারে, তখন তারা ভীষণ কষ্ট পায়। বিশেষ করে নিহা তো খুব কষ্ট পায়। সে ভাবে যে অপূর্বর সামনে আর কখনোই যাবে না। অপূর্ব যখন সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়,তখন রাস্তায় নিহা দাঁড়িয়ে থাকে। আসলে নিহা অপূর্বর চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছে না। নিহা অপূর্বকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অনেক কিছু বলার চেষ্টা করে। অর্থাৎ সে যে কতটা ভালোবাসে অপূর্বকে, সেটা বুঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু অপূর্ব বলে যে এসব বলে মায়া না বাড়াতে। কারণ তাকে ফিরে যেতে হবেই। যাইহোক এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
আসলে প্রতিটি ছেলে চায় নিজের উন্নতি করতে এবং এটা অবশ্যই ভালো একটা দিক। আর সেজন্য যদি পরিবার ছেড়ে দূরে গিয়েও থাকতে হয়,তবুও সেটা যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু প্রতিটি ছেলের উচিত মা বাবার দিকে খেয়াল রাখা। অপূর্বর মা বাবার উচিত ছিলো মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে এসে অপূর্বর দাদা দাদীর সাথে সময় কাটানো। কিন্তু তারা অভিমান করে কখনোই বাংলাদেশে আসেনি। তাই অপূর্ব যখন বাংলাদেশে এসেছিল তার দাদীমাকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার জন্য, তখন তার দাদীমাও আমেরিকা যেতে রাজি হয়নি। বরং তার দাদীমা চেয়েছিল অপূর্বকে বাংলাদেশে রেখে দিতে। আর সেজন্যই তিনি নিহার সাথে অপূর্বর বিয়ে ঠিক করে রাখে। তাছাড়া দাদীমা খুব চালাক। কারণ নিহার সাথে যাতে অপূর্বর ভালোবাসার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়, সেজন্য নিহাকে প্রায়ই বলতো অপূর্বকে নিয়ে ঘুরতে যেতে। এতে করে অপূর্ব নিহার প্রতি দুর্বল হয়ে যায়। অবশেষে অপূর্বর দাদীমার প্ল্যান সাকসেস হয়। কারণ অপূর্বও ভীষণ ভালোবেসে ফেলে নিহাকে। অপূর্ব ভাবে যে, নিহা তার মনের সব দরজা খুলে দিয়েছে। তাই নিহা হচ্ছে তার মন দুয়ারী। সবমিলিয়ে নাটকটি বেশ উপভোগ করেছি। অপূর্ব, নিহা এবং দিলারা জামান এককথায় দুর্দান্ত অভিনয় করেছে।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy S24 Ultra |
তারিখ | ২২.২.২০২৫ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
ডেইলি টাস্ক প্রুফ:
X-promotion
অপূর্ব এবং নাজনীন এর নাটকগুলি আসলে দারুণ হয়ে থাকে। আপনার সাথে আমিও সহমত প্রতিটি ছেলের উচিত মা-বাবার সাথে মিলে মিশে থাকা। কিন্তু অপূর্বর মা বাবা তার ব্যতিক্রম করেছিলো। কিন্তু অপূর্ব যখন তার দাদিমাকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে আসে তখনই তার দাদি অপূর্বকে বাংলাদেশের রেখে দিতে নাজনিন এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়াতে সাকসেস হয়। যাইহোক নাটকটির রিভিউ পড়ে খুবই ভালো লাগলো। সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবো ,ধন্যবাদ।
এই নাটকটি দেখে সত্যিই খুব ভালো লেগেছিল ভাই। এমন নাটক দেখতে যে কেউ পছন্দ করে। যাইহোক এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
অপূর্ব এবং নিহা দুজনকেই আমার অনেক ভালো লাগে। তাদের দুজনের নাটক গুলো খুবই সুন্দর হয়ে থাকে। আজকে আপনি তাদের খুব সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন। এ নাটকটা আমার এখনো পর্যন্ত দেখা হয়নি। কিন্তু নাটকের রিভিউটা অসম্ভব ভালো লেগেছে। সময় পেলে অবশ্যই নাটকটা আমি দেখব।
অপূর্ব এবং নিহার অভিনয় বেশ ভালোই লাগে। বিশেষ করে অপূর্ব সেরা। যাইহোক এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনি আজকে চমৎকার একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করেছেন।আমি যদিও তেমন একটা নাটক দেখি না, তবে সময় পেলেই অপুর্ব ভাইয়ের নাটক গুলো দেখি। আসলে নাটক রিভিউ পড়লে আমার মনে হয় আর নাটক দেখার প্রয়োজন হয় না। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে এতো সুন্দর একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
অপূর্বর নাটকগুলো আমারও দেখা হয়। এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
অপূর্ব এবং নিহা দুজনই দুর্দান্ত অভিনয় করেন, আর তাদের নাটকগুলো সবসময়ই মন ছুঁয়ে যায়। আজকে শেয়ার করা নাটকের রিভিউটা দারুণ লাগলো ।এখনো দেখা হয়নি, তবে আপনার অসাধারণ রিভিউ পড়ে নাটকটি দেখার আগ্রহ আরও বেড়ে গেল। সময় পেলেই অবশ্যই দেখবো। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আসলেই অপূর্ব এবং নিহা বেশ ভালো অভিনয় করে থাকে। এভাবে অনুপ্রাণিত করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই নাটকের কয়েকটি পাঠ আমি দেখেছি। সম্পূর্ণ নাটকটি আমার দেখা হয়নি। তবে দেখার ইচ্ছা আছে। এই নাটকের রোমান্টিক কাহিনী গুলো আমার কাছে দারুণ লেগেছে। আমেরিকায় যাওয়া থেকে আটকানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের পাগলামি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। বেশি মজার ছিল ভূত সেজে ভয় দেখানোর বিষয়টা। আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আজকে আপনার রিভিউ করে অনেকটা ক্লিয়ার হলাম। সময় পেলেই নাটকটি আমি অবশ্যই দেখবো।
ভূত সেজে ভয় দেখানোর সময় তো অপূর্ব সেই লেভেলের ভয় পেয়ে যায়। অপূর্ব ভেবেছিল সত্যি সত্যিই ভূত। এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।