“মানুষের মানসিক শান্তি, মানুষ নিজেই”
জীবনের সবচেয়ে বড় চাওয়া যদি কিছু হয়, তবে তা হলো মানসিক শান্তি। এই শান্তির খোঁজে মানুষ হাজারটা পথ বেছে নেয়। কেউ ধর্ম-কর্মে মগ্ন হয়, কেউ প্রকৃতির কোলে সময় কাটায়, কেউ আবার নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করে মানসিক শান্তি খুঁজে নেয়। তবে আসল সত্য হলো, এই মানসিক শান্তি বাইরের জগতে যতটা খোঁজা হয়, তার থেকেও বেশি নিজের ভেতরেই লুকিয়ে থাকে।
আজকালকের ব্যস্ত আর প্রতিযোগিতাময় জীবনে মানুষের মনে অশান্তি বাড়ছে। ছোটখাটো বিষয়েও রাগ, অভিমান, হিংসা আর দুঃখ কাজ করে। খুব সহজেই মন ভেঙে যায়। কারো কথায় কষ্ট লাগে, কারো আচরণে মন খারাপ হয়। আবার বড় বড় চাওয়া-পাওয়া না পূরণ হলে হতাশা কাজ করে। অথচ একটু থেমে, নিজের ভেতরের দিকে তাকালেই বোঝা যায় শান্তি আসলে বাইরের কোনো জিনিস নয়। এই শান্তি নিজের মাঝেই তৈরি করা যায়।প্রতিদিনের জীবনে আমরা অনেক কিছু চাই। ভালো চাকরি, টাকা-পয়সা, বড় বাড়ি, দামি গাড়ি, সামাজিক মর্যাদা এগুলোর পেছনে ছুটতে ছুটতে অনেক সময় বুঝতেই পারি না যে, এগুলো পাওয়ার পরও শান্তি আসছে না। নতুন ফোন কিনলে কিছুদিন ভালো লাগে, দামি জামা পরলে প্রশংসা শুনে খুশি হই, ভালো খাবার খেলে পেট ভরে। কিন্তু সত্যিকার মানসিক শান্তি আসে না। কেননা, বাইরের জিনিস দিয়ে স্থায়ী সুখ বা শান্তি মেলে না।
মানুষের অশান্তির বড় কারণ হচ্ছে নিজের মধ্যে অতৃপ্তি। মানুষ চাইলেই সব সময় খুশি থাকতে পারে। তবে সেটার জন্য দরকার নিজের মনকে বোঝা, নিজের ইচ্ছাগুলোকে সহজভাবে নেওয়া। ছোট ছোট ব্যাপারে আনন্দ খোঁজা। শিশুরা যেমন সামান্য খেলনাতেও আনন্দ খুঁজে নেয়, পাখির গান শুনে খুশি হয়, বৃষ্টিতে ভিজে মজা পায় বড়রা চাইলেই তেমনভাবে বাঁচতে পারে।আমাদের অনেক সময় মনে হয়, অমুকের মতো চাকরি পেলে শান্তি পাবো, অমুকের মতো গাড়ি কিনলে সুখ আসবে। অথচ যার গাড়ি আছে, তারও তো অনেক অশান্তি থাকে। তার আবার অন্য কোনো কিছু চাই। এভাবেই চাওয়া আর না-পাওয়ার দোলাচলে মানসিক শান্তি হারিয়ে যায়। এই দোলাচল থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমেই নিজের অবস্থান মেনে নিতে হবে। বুঝতে হবে জীবন এমনিতেই একটা উপহার। প্রতিটি দিনই নতুন। জীবনে যা আছে, তা নিয়েই খুশি থাকতে শিখতে হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মনের ভেতরের কথাগুলো বলা। আমাদের সমাজে অনেকেই নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করে না। কষ্ট চেপে রাখে। এতে মনের মধ্যে ভার জমে। একসময় সেটা হতাশা আর বিষণ্ণতায় রূপ নেয়। তাই প্রয়োজনে কাছের বন্ধুর সঙ্গে, পরিবারের কারো সঙ্গে কিংবা ডায়েরির পাতায় নিজের মনের কথা বলা জরুরি। এতে মন হালকা হয়।আরও একটি সহজ উপায় হলো প্রকৃতির কাছে যাওয়া। কখনো নদীর ধারে বসে থাকা, আকাশ দেখা, পাখির ডাকে কান দেওয়া কিংবা বৃষ্টির শব্দ শোনা এগুলো মনে প্রশান্তি আনে। বিজ্ঞানও বলে, প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকলে মন ভালো থাকে।সবচেয়ে বড় কথা হলো, নিজেকে ভালোবাসা। নিজের ভুলকে ক্ষমা করা, নিজের সফলতাকে স্বীকৃতি দেওয়া, নিজের ছোট ছোট আনন্দের মুহূর্তগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া। যতদিন না নিজের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা যাবে, ততদিন বাইরের কোনো কিছুর মাধ্যমে শান্তি পাওয়া সম্ভব নয়।
এই জীবনে সুখ-দুঃখ দুটোই আসবে। কিন্তু মানসিক শান্তি এমন একটা জিনিস, যা নিজের ভেতর থেকেই সৃষ্টি করা যায়। বাইরের জগতে যত পরিবর্তনই আসুক, নিজের মন যদি শান্ত থাকে, তবে সবকিছুই সহজ লাগে। সেই শান্তির জন্য অন্যের দিকে না তাকিয়ে, আগে নিজেকে নিয়ে ভাবা দরকার। কারণ, নিজের মানসিক শান্তির দায়িত্ব একমাত্র নিজেরই।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
X-Promotion
🎉 Congratulations!
Your post has been manually upvoted by the SteemX Team! 🚀
SteemX is a modern, user-friendly and powerful platform built for the Steem ecosystem.
🔗 Visit us: www.steemx.org
✅ Support our work — Vote for our witness: bountyking5
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily Tasks
Comment Link:-
https://x.com/mohamad786FA/status/1934140607926255848?t=I6_7Pq070cDA7PpSbpQ2jg&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1934140898713247998?t=2U3lh3Umsi2zcXRp4NQjQw&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1934141094356451361?t=fimDNRLqNmq0EzY_1N6nSQ&s=19
https://x.com/SarzilAl/status/1934136970932072687?t=HvO7QF0Bx_r4c-J9MVZGAQ&s=19
https://x.com/mohamad786FA/status/1934141309058699743?t=GB5hCNyrEyPIcFTvhggXtA&s=19
Ss
অসাধারণ একটি লেখনী, মনের গভীর থেকে উঠে এসেছে প্রতিটি কথা। মানসিক শান্তির বাস্তব চিত্র খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। নিজের মধ্যে শান্তি খোঁজার বিষয়টি সত্যিই চিন্তাশীল বার্তা। লেখার ভাষা সহজ, বোধগম্য ও মরমি , পড়ে ভালো লাগলো। ছোট ছোট আনন্দেই যে শান্তি, তা আপনি দারুণভাবে বোঝাতে পেরেছেন। প্রকৃতির সঙ্গে মানসিক শান্তির সংযোগটি খুবই হৃদয়গ্রাহী। এমন প্রাঞ্জল ও অর্থবোধক লেখা আরও চাই ভবিষ্যতে ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া আপনার কথাগুলোর সাথে সহমত পোষণ করছি। আসলে আমরা যদি নিজেরা নিজেকে মানসিক শান্তি না দেই তাহলে কখনোই ভালো থাকতে পারবো না।