রাগ নিয়ন্ত্রণের একটি সহজ উপায়।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আজ - ৭ই, ফাল্গুন, ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ | রবিবার | বসন্তকাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

আজ আমি আপনাদের সাথে রাগ নিয়ন্ত্রণের সহজ উপায় শেয়ার করব।




angry-gb53b45a50_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

ইতিমধ্যে কমিউনিটির অনেকেই অনেকবার এই টপিকটি নিয়ে আলোচনা করে ফেলেছে। তবুও আমি একটু ভিন্নভাবে আপনাদের সাথে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব । যদিও সকলের টপিকটি এক হতে পারে কিন্তু আলোচনাটি সকালে যে যার ব্যক্তিগত মতামত আলোকে তুলে ধরে। সবার আলোচনাতেই রয়েছে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যতা । আপনার এতক্ষনে হয়তো বুঝতে পেরেছেন আমি কি নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। আমরা তো সকলেই জানি রাগের পরিণাম কি হতে পারে। এটি আমাদের জীবনে কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারে।

তো কথা না বাড়িয়ে চলুন আমি আমার আলোচনা শুরু করি। আমার আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে রাগ এবং নিয়ন্ত্রণের একটি সহজ উপায়। আর এই রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায়টি আমি আপনাদেরকে আমি একটা গল্পের মাধ্যমে শেয়ার করব।

তো চলুন গল্পটি শুরু করি-

এক ভদ্র মহিলা তার প্রচন্ড রাগ। সে ছোটবেলা থেকেই এমন রাগি। আর দিনদিন তার এমন রাগ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোন কিছুতেই সে তার রাগ কমাতে পারছে না। ছোটখাটো সাধারণ যেকোনো ঘটনার কারণেই সে খুব তাড়াতাড়ি রেগে যায়। আর সে মহিলাটি যখন রেগে যায় খুব বাজে বাজে ভাষা ব্যবহার দিতে থাকে সকলকে। তার পরিবার আত্মীয়-স্বজন ছেলে মেয়ে সন্তান এমনকি পাড়া-প্রতিবেশি সকলেই তার এমন রাগ এর জন্য খুবই বিরক্ত। এবং তার এমন রাগের জন্য কেউ তাকে পছন্দ করত না । সে মহিলাটি প্রতিবার রেগে যাই আর মাথা ঠান্ডা হওয়ার পর সে খুবই লজ্জিত বোধ করে তার রাগের মাথায় আজেবাজে সব কথা বলার কারনে। সে সব সময় চায় রাগের উপর যেন তার যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে।


woman-g93f3d1b31_1920.png
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

এরপর একদিন একজন লোক সে এই মহিলাটি এমন রাগ দেখে বলে যে আমার কাছে রাগ কমানোর একটি ওষুধ আছে। সে ওষুধটি আপনি ব্যবহার করলে আপনারা রাগ নিশ্চয়ই কমে যাবে। আমার এই ঔষধটি অনেকে ব্যবহার করেছে এবং তাদের কাজে এসেছে। তো মহিলাটি এই কথা শুনে খুশিতে আটখানা। সে বললো আপনার কাছে যে ঔষধটি আছে সেটা আমাকে দেন। তো লোকটি মহিলাটিকে ঔষধটি দিল আর এর ব্যবহার নিয়ম বলল। লোকটি বলল যে, আপনি যখন রেগে যাবেন তখনই এই ওষুধের এক চামচ মুখের মধ্যে রেখে দিবেন। আর কোনো কথা বলবেন না চুপচাপ থাকবে। যদি আপনি ওই সময় কথা বলেন তাহলে এই ঔষধ আর কাজ করবেনা। লোকটির একথা শুনে ঐ মহিলাটি যখন রেগে যেত তখন ঔষধটি মুখে দিত এবং চুপ থাকত কোন কথা বলতো না। এমন করতে করতে মহিলাটি লক্ষ্য করে যে তার রাগ আগে থেকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এবং সে আগের মতো রেগে গেলে আর আজেবাজে সব কথা বলেনা এবং নিজেকে ঠিক রাখতে পারে। এতদিন পর সে মহিলাটি তার রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরে খুবই খুশি।

মহিলাটি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ওই লোকটির কাছে যায় যে লোকটি তাকে রাগ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ দিয়েছিল। ওই লোকটি মহিলাটির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ দেখে হাসছে আর বলছে, আপনাকে আমি রাগ নিয়ন্ত্রণের যে ঔষধ দিয়েছি ওইটি আসলে কোন ঔষধ ছিলনা ওইটি হচ্ছে সাধারন পানি। এইকথা শুনে মহিলাটি বলল, এটি যদি সাধারন পানি হয় তাহলে এটির মাধ্যমে কিভাবে আমার রাগ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। আমি তো এখন আর আগের মতো রেগে যায় না, এবং রেগে গেল আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। তখন ওই লোকটি বলে এটি আমার ওষুধের কারণে নয় বরং এটি সম্ভব হয়েছে আপনার চুপ থাকার কারণে। আপনি আগে যখন রেগে যেতেন তখন আপনি অতিরিক্ত কথা বলতেন যার ফলে আরো বেশি রেগে যেতেন এবং নিজের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলতেন।


bulldog-g359bc6424_1280.png
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

এই পানিটি মুখে দেওয়ার ফলে আপনি রাগের সময় আর কথা বলতেন না চুপ থাকতেন। আর রাগের সময় চুপ থাকতে-থাকতে এখন রেগে গেলে চুপ থাকাটা এটি এখন আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে যার ফলে আস্তে আস্তে রাগ নিয়ন্ত্রণের চলে এসেছে।

তো বন্ধুরা আমরা এই গল্পটির থেকে একটি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি যে রেগে গেলে চুপ থাকা। কেননা রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ করা কেবল চুপ থাকলেই সম্ভব। কেননা আমরা রেগে গেলে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি এবং মুখ দিয়ে সব আজেবাজে কথাই বের করি। আর এসব আজেবাজে কথার কারণে ঝগড়া বেড়ে যায় এবং ঘটনা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যায় । আর রাগের সময় যখন আমরা নিজেকে চুপ রাখতে পারব তখনই আমরা নিজেদের রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে যাব।

রাগ আমাদের জীবনে কখনোই খারাপ কিছু ছাড়া ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না। রাগ আমাদের জীবনকে ধ্বংস করে ফেলে। ২/৩ মিনিটের রাগের জন্য আমরা আমার এমন সব কাজ করে ফেলি যার জন্য আমাদের পরবর্তীতে আফসোস করতে হয়। এমনকি রাগের সময় আমরা এমন সব কথা বলে দেই যার জন্য আমাদের পরবর্তীতে অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। রেগে গেলে আমাদের মাথা ঠিক থাকেনা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে তখন আমরা কি করি বা কি বলি তা নিজেও জানি না। তাই ওই ওষুধের মতো রাগের সময় আমরা যদি চুপ থাকি তাহলে খুব তাড়াতাড়ি রাগ ঠান্ডা হয়ে যাবে এবং ঝগড়াঝাঁটি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।


emoticon-g804115636_1920.png
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

তাই চলুন আমরা সকলেই, রাগের সময় নিজেকে শান্ত রেখে কিছুক্ষণ চুপ থাকার অভ্যাসটা গড়ে তুলি। কেননা আমি আগেই বলেছি চুপ থাকাটাই হচ্ছে রাগ নিয়ন্ত্রণের মূল ওষুধ। যখন আমরা রাগের সময় চুপ থাকাটা শিখে যাবে তখন নিজের উপর রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। অনিয়ন্ত্রিত রাগ আমাদের জীবনে অনেক বড় বিপদ আনতে পারে।

রাগ নিয়ে তো আমরা অনেকে অনেক কিছু আলোচনা করে ফেলেছে তবুও ভিন্নভাবে আমার কছু ব্যক্তিগত মতামত আপনার সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি । আশা করছি আমার আজকের আলোচনাটি আপনাদের ভাল লেগেছে।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

আরিফ ভাই খুব সুন্দর একটি টপিক বেছে নিয়েছেন আজকের পোস্ট এর জন্য। আপনি যে গল্পের মাধ্যমে উদাহরণটি দিলেন বাস্তবে আমার মনে হয় কাজটি এতটা সহজ নয়। বেশিরভাগ মানুষই রেগে গেলে তার বুদ্ধি-বিবেচনা হারিয়ে ফেলে আর পরবর্তীতে যখন রাগ কমে যায় তখন তার জন্য আফসোস করতে থাকে। বুদ্ধিমান ব্যক্তি তারাই যারা রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য

 3 years ago 

যদি ও কাজটি সহজ নয় কিন্তু আমরা চেষ্টা করে দেখতে পারি।

 3 years ago 

ভাই আজকে আপনার গল্পটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। গল্পটি একদম বাস্তবতার সাথে মিল রয়েছে। কারণ আমরা সমাজের অনেকেই রাগারাগি করি। বিশেষ করে কোনো ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আমরা অনেক রেগে যায় এবং আজেবাজে কথা বলি। আর এই আজেবাজে কথাগুলো রাগের কারণে বলি কিন্তু পরবর্তীতে লজ্জাবোধ করি। আর আপনি যে সুন্দর গল্পের মাধ্যমে আমাদের বুঝিয়ে দিলেন আসলেই আমরা যদি রাগের সময় চুপ করে থাকি। তাহলে আমাদের মুখ দিয়ে আজেবাজে কোন কথা বের হবে না। আর আজেবাজে কথা যখন বের হবে না তখন আমাদের রাগ নিয়ন্ত্রণে আসবে। খুবই সুন্দর ভাবে গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। সত্যিই অসাধারণ। আসলে আমরা যদি রাগের সময় চুপচাপ থাকি তাহলে আমাদের রাগ নিয়ন্ত্রণে আসবে। এটি আমাদের জন্য খুবই শিক্ষণীয় গল্প। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনাদের ভালো লাগাতেই আমার সার্থকতা ।

 3 years ago 

বাহ সুন্দর ছিল গল্পটি এবং দারুণ মোটিভ ছিল গল্পটির। আসলে রাগ এমন একটা জিনিস যেটা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়, আর রাগ আসে মূলত শয়তানের পক্ষ থেকে। আর রাগ কমানোর জন্য এই একটা জিনিসই যথেষ্ট ওই মুহূর্তে কথা কম বলা। খুব ভাল ছিল ভাই একদম উপকারী একটি পোস্ট।

 3 years ago 

ভাইয়া,আপনার আজকের এই পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনি খুব সুন্দর করে রাগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কিছু কথা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে রাগ মানুষকে অনেক দিক দিয়ে দূর্বল করে দেয়,আর এটি যে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেই সুফল পায়।আজকের এই মোটিবেশনাল একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

তো বন্ধুরা আমরা এই গল্পটির থেকে একটি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি যে রেগে গেলে চুপ থাকা। কেননা রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ করা কেবল চুপ থাকলেই সম্ভব।

ভাইয়া আপনি অসাধারণ কিছু কথা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে রাগ আমাদের মাঝে খুবই খারাপ একটা অভ্যাস। আমরা যদি আমাদের রাগকে সংযত করতে না পারি তাহলে প্রতিটি পদক্ষেপে অপমানিত হতে হবে। আপনি এই ছোট্ট একটি গল্পের মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা তুলে ধরেছেন। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে অবশ্যই চুপ থাকাই উত্তম। অনেক শিক্ষনীয় একটি পোষ্ট সকলের মাঝে শেয়ার করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।

 3 years ago 

ভাইয়া আমি যখন আপনার লেখা পড়ছিলাম তখন আমার একটি কথাই মনে হয়েছিল বারবার রাগ মানুষকে সব সময় ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। আসলে আমাদের সবসময় উচিত রাগ সংযত রাখা। আমরা যদি নিজের রাগ সংযত রাখতে পারি তবেই ভালো থাকতে পারবো। আপনি একটি রাগী মহিলার উদাহরণ দিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা তুলে ধরেছেন ভাইয়া। আসলে আমাদের বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপটে আমরা বিভিন্ন ভাবে রাগান্বিত হই। সেই সময় আমরা নিজের অজান্তেই অনেক আজেবাজে কথা বলে ফেলি যা পরবর্তীতে আমাদের লজ্জাকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়। আমরা যখন রাগান্বিত হই তখন যদি চুপ থাকি তাহলে আমার মনে হয় সেই পরিস্থিতি থেকে খুব সহজেই বেরিয়ে আসতে পারবো। খুবই শিক্ষণীয় একটি পোস্ট তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া। এই পোস্টটি আমাদের সকলের জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভাইয়া আপনাকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 3 years ago 

ভাইয়া রাগ তো রাগ,,,, রাগের সময় কি শান্ত থাকা যায় যায়???? কিন্তু এটাই হচ্ছে রাগ নিয়ন্ত্রণের টিপস। আমি রাগ করি না কিন্তু যখন রাগ করি তখন খুব খারাপ হয়। তবে এটাও আজ থেকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া এতো সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য।

 3 years ago 

যথার্থ বলেছেন ভাই । চুপ থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ । রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন ।

 3 years ago 

রাগ কমানোর দারুন একটি গল্প শেয়ার করেছেন ভাইয়া।রাগ কমানোর পদ্ধতি দারুন ।আসলে রাগ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। রাগের সময় নেওয়ার সিদ্ধান্ত কখনোই ভালো হয়না। রাগের সময় ভুল করার সম্ভাবনা বেশি থাকে ।আর যারা রাগ করে তাদের জন্য আপনার আজকের পোস্ট কাজে দিতে পারে ।আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

রাগ কমবেশি প্রত্যেকেরই থাকে। তবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করাটা আসলে অনেক কঠিন একটা বিষয়। কেননা এই রাগের কারণে অনেকে স্ট্রোক করে ।আর মানুষের সবচাইতে ক্ষতি করে এই রাগটি। রাগ কন্ট্রোল করার জন্য আসলে আপনি অনেক সুন্দর উপায় তুলে ধরেছেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ,এবং ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনা করব।