"আমরা মানুষ তো? নাকি কেবল হাঁটাচলা করা একটা মানিব্যাগ?"
কখনও কখনও মনে হয়, আমরা মানুষ নই — শুধু একেকটা প্রাইস ট্যাগ হয়ে গেছি।যার দাম বেশি, তার সম্মানও বেশি। ছোটবেলায় শিখেছিলাম, মানুষের আসল পরিচয় তার মন আর চিন্তাভাবনায় থাকে। কিন্তু বড় হতে হতে বুঝলাম — এই সমাজে মন নয়, পকেট কথা বলে।মানুষের দৃষ্টি এখন অনুভূতির উপর নয়, আপনার ব্র্যান্ডের জামাকাপড় আর গাড়ির উপর থাকে।

Source
সমাজের অদৃশ্য তরাজু আজ যদি আপনার কাছে বড় পদমর্যাদা বা মোটা ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স থাকে, তাহলে আপনাকে মাথায় তুলে রাখা হবে। না হলে আপনি শুধুই ভিড়ের একজন হয়ে থাকবেন, যাকে কেউ চিনবেই না।
সমাজ যেন এক অদৃশ্য তরাজু বানিয়ে ফেলেছে — যেখানে সম্পর্ক, পরিচয় আর আত্মার দাম টাকা দিয়ে মাপা হয়।
“কত আয় করে?” — এই প্রশ্ন এখন আর দক্ষতা নয়, মানুষের ‘মূল্য’ জানিয়ে দেয়।
টাকা কি সব কিছু?একবার ভাবুন — যদি আপনার সব কিছু থাকে, কিন্তু আপনি শান্তিতে ঘুমোতে না পারেন, তাহলে কি আপনি সত্যি ধনী?একজন চাষি, যে সারাদিন মাঠে খেটে ফেরে, আর মাটির উপরই শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে — সে কি আপনার চেয়ে বেশি তৃপ্ত নয়?আসল সুখ সেই তৃপ্তিতে — যা এক সাধারণ রুটিও দিতে পারে — যেটা কোটি টাকার ভোজও দিতে পারে না।
অনুভবের আসল ধনটাকার প্রয়োজন কেউ অস্বীকার করছে না, কিন্তু জীবনকে শুধুই টাকা উপার্জনের লক্ষ্য বানিয়ে ফেলা — এটাই সবচেয়ে বড় ভুল।আমরা এই পৃথিবীতে শুধু উপার্জনের জন্য আসিনি — এসেছি বাঁচতে, বুঝতে এবং একে অপরের সাথে জুড়তে।এক মায়ের মমতা, এক বন্ধুর হাসি, কিংবা এক শিশুর নিষ্পাপ মুখ — এগুলো অমূল্য।
এই ধন বাজারে বিক্রি হয় না, কিন্তু এদের মধ্যেই জীবনের আসল ধন লুকিয়ে থাকে।
পরিবর্তন আপনার দ্বারাই শুরু হতে পারে আমাদের এমন এক সমাজ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে কাউকে তার আয় দিয়ে নয় — তার মানবতা আর বোধ দিয়ে মাপা হবে।যেখানে একজন শিক্ষককে একজন নেতার চেয়েও বেশি সম্মান দেওয়া হবে, একজন শিল্পীকে ব্যবসায়ীর চেয়ে কম ভাবা হবে না।ভাবুন — আপনি কি আপনার সন্তানদের শেখাতে চান যে সম্মান শুধু টাকাতেই মেলে?নাকি আপনি এমন এক ভাবনা দিতে চান, যা এক এমন সমাজ গড়ে তুলবে — যেটা চলে হৃদয়ের উপর ভিত্তি করে, পকেটের নয়।