গল্প রাইটিং:-" চাপা কান্না "II written by @maksudakawsarII

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন সৃষ্টিকর্তার রহমতে । আমিও আছি আপনাদের দোয়ার বরকতে জীবন নিয়ে ভালোই। তবে কেন জানি আজকাল ব্যস্ততাগুলো আমায় দারুন প্যারা দিচেছ। প্যারা দিচ্ছে জীবন আর সময় দুটোই। কিন্তু আমি তো ব্যস্ততা চাই না। চাই একটু শান্তি আর প্রশান্তি। চাই একটু স্বাধীনতা। যাই হোক এসব কথা বলে শুধু শুধু সময় নষ্ট করে লাভ নেই। তাই চলে যাই আজ আপনাদের জন্য আমার লেখা সুন্দর গল্পে। যা কিনা বাস্তব জীবেন থেকে সংগ্রহ করা।

প্রতিদিনই চেষ্টা করি আমি আপনাদের মাঝে সুন্দর করে কিছু লিখে উপহার দেওয়ার জন্য। চাই চারদিকের বাস্তব কিছু ঘটনাকে গল্পে রূপ দিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে। যাতে করে আমার লেখার যাদুতে আপনারা মুগ্ধ হতে পারেন। যদিও সময় করে উঠতে পারি না। যদিও নিজের ক্রেয়েটিভিটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরার সময় হয় না। তবুও চেষ্টা করলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আশা করি প্রতিদিনের মত করে আমার আজকের জেনারেল গল্পটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

ai-generated-8775052_1280.png

Source

মৌমিতা রূপে গুনে অনন্যা একজন রমনী। তার রূপের জালে মুগ্ধ হয়নি এমন যুবক এলাকায় খুঁজে মনে হয় না যে একজনও পাওয়া যাবে। কলেজের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে সবেমাত্র।এরই মধ্যে মৌমিতার বড় বোনের বিয়ে হয়ে যায়। মৌমিতার বাবা না থাকায় তাদের পরিবারের দায়িত্ব তার বড় বোনকেই পালন করতে হয়। কারন মৌমিতার যে কোন বোন নেই। যাই হোক বোনের বিয়ের পর মৌমিতার তার মা আর মেজ বোন মৌমিতার বড় বোনের কাছেই থাকে। আর এতে কিন্তু মৌমিতার দুলাভাই এর কোন আপত্তিও ছিল না। বেশ ভালোই যাচ্ছিলো মৌমিতার জীবন।

এদিকে মৌমিতার বোনের বিয়ের পর তার শ্বশুড়বাড়ীর লোকজন মৌমিতাদের বাসায় প্রায় বেড়াতে আসে। যার মধ্যে মৌমিতার বোনের একটি দেবরও ছিল। যে কিনা দেখতে বেশ সুন্দর। আর এই আসা যাওয়ার মাঝে মৌমিতার বোনের দেবরের সাথে মৌমিতার বেশ ভাবও জমে উঠে। ও ছেলেটর নাম কিন্তু রাজু। দেখতে শুনতে বেশ সুন্দর হলেও পড়াশুনায় একদম গন্ড মুর্খ। বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে জীবনের সময়টাই পার করে দিয়েছে। তবে দেখে বোঝারও উপায় নেই যে সে ব কলম। যাই হোক এই রাজুর আসা যাওয়ার ফলে মৌমিতার সাথে এমন সঙ্খতা গড়ে উঠে যে রাজু মৌমিতার প্রেমেই পড়ে যায়।

মৌমিতা কিন্তু খুন অক্ষরেও জানতে পারেনি যে রাজু ব কলম। কারন রাজু নিজেকে একজন গ্র্যাজুযেট বলে দাবী করে। এদিকে রাজুর ব্যবহার দেখে মৌমিতাও তার প্রেমে জড়িয়ে পরে। বেশ জমে উঠেছিল তাদের মাঝের প্রেমের সম্পর্ক। এক সময় রাজু মৌমিতা কে বিয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। কিন্তু মৌমিতার বোন এবং বোনের জামাই কোন ভাবেই রাজুর সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয় না। কারন মৌমিতার বোনের জামাই জানে যে রাজু একজন বদ মেজাজী মানুষ। তার সাথে বিয়ে হলে মৌমিতার জীবনটাই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু কি আর করার রাজুর জন্য মৌমিতাও বেশ মরিয়া হয়ে পড়ে। অবশেষে দুই পরিবারের সম্মতিতেই তাদের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর বেশ কিছু বছর বেশ ভালোই কেটে যাচিছলো। কিন্তু এরই মধ্যে মৌমিতার দু তিনটি বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। আর ঐ দিকে রাজুরও আসল রূপ বেড়িয়ে আস্তে শুরু করে। রাজু কথায় কথায় রেগে যায়। কাজ কাম করতে চায় না। মৌমিতার বোনের উপর চাপ প্রয়োগ করে রাজুকে প্রতিষ্ঠিত করে দিতে। সব মিলিয়ে রাজুর জীবন এখন দূর্বিসহ। কিন্তু কি করবে রাজু? কাউকে কিছু বলতেও পারে না সইতেও পারে না। শুধু নিজে নিজে বুকের ভিতর কষ্ট জমা রেখে কেঁদে ফিরে। কেমন করে মৌমিতা তার স্বামীর এমন ব্যবহার পরিবারের কাছে বলবে। মৌমিতা যে রাজু কে বেশ ভালোবাসে।

যাই হোক মৌমিতা তার এক বান্ধবীর সহায়তায় একজন ভালো গাইনী ডাক্তারের সরানাপন্ন হন। এবং এক সময় সেই ডাক্তারের আন্ডারে থেকে কনসিভও করেন। দিনের পর দিন কেটে গেল। দেখতে দেখতে মৌমিতার গর্ভের সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার সময় হয়ে যায়। মৌমিতা ডাক্তার তাকে বেশ তাড়াতাড়ি সিজার করার জন্য পরামর্শ দেন। কিন্তু ডাক্তারের খরচ বাবদ যে টাকা পড়বে তা যোগাড় করা মৌমিতার জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে। কে দেবে মৌমিতা কে এত টাকা। বেশ ভেবে চিন্তে মৌমিতা এবং তার বোন একটি ছোট ক্লিনিকে মৌমিতার সিজার করার সিদ্ধান্ত নেয়। যেখানে বেশ কম টাকায় মৌমিতার সিজার হয়ে যাবে।

কিন্তু কে জানতো এমন সিদ্ধান্তই মৌমিতার জীবনে অন্ধকার বয়ে আনবে। মৌমিতা যখন ক্লিনিকে ভর্তি হলো তখন তার প্রেসার বেড়ে গেল। হঠাৎ মৌমিতার অবস্থা খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু তখন সে ক্লিনিক হতে মৌমিতা কে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করে দিলো। এদিকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর মৌমিতা একটি মৃত বাচ্চা প্রসব করলো। এবং জীবন মৃত্যূর সন্ধিক্ষনে মৌমিতার জীবন। আর মৌমিতার এমন অবস্থা দেখে রাজু যেন পাগল প্রায়। কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না। অবশেষে সবার দোয়ায় মৌমিতা নতুন জীবন ফিরে পেল।

কিন্তু তাতে কি? মৌমিতা যখন তার নতুন জীবন নিয়ে ফিরে আসলো তখন কিন্তু রাজু তার সেই পুরানো অভ্যাসে আবার ফিরে গেল। আর মৌমিতার জীবন এমন এক মানুষের সাথেই বাধাঁ হযে গেল দিনের পর দিন। আজও মৌমিতা কাঁদে তার কষ্টগুলো কে বুকে নিয়ে। আজও মৌমিতা কাঁদে তার ব্যাথা গুলো কে মনে করে। নীরবে আর নিশ্চপে। কেউ দেখে না মৌমিতার সেই চাপা কান্না।

জানিনা কেমন লাগলো আমার আজকের গল্পটি। আশা করি আপনাদের সবার কাছেই আমার গল্পটি বেশ ভালো লেগেছে। ভালো থাকবেন।

আমার পরিচিতি

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।


3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeF5StuMqDPqgYjRhUxqFbXTvH2r2mDgNbWweA4YGBo825oLh4oqEqeynn5EZL11LdCrppngkM (1).gif

VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

1000206266.png

1000206267.png

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️