ছোট গল্পঃ রানীর সংসার (পর্ব-০৩) || by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ - ১৯শে মাঘ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রবিবার | শীতকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



1000108845.png

Canva দিয়ে তৈরি



রানীর বিয়ের জন্য ঘটকের কাছে রানীর ছোট ভাবি যখন মিথ্যে অপবাদ দিয়েছিল তখন তাদের পরিবারের সবাই এই মিথ্যা অপবাদের কথা জেনে যায়। রানীর ভাই রানীর ছোট ভাবির কাছে জিজ্ঞেস করে আমার বোনের ব্যাপারে এমন জঘন্যতম কথা বলার পরে তোমার কি এখনো মনে হয় আমি তোমাকে এই বাড়িতে রাখবো। অন্যদিকে রানীর ছোট ভাবি এই কথা শুনে চুপচাপ থাকে আর কান্না করতে থাকে। রানীর ভাই বলতে থাকে আমি এই বউ রাখবো না যে আমাদের পরিবারের ভালো চায়না আমাদের পরিবারের মানুষের ভালো চায়না সে আমাদের সাথে থাকতে পারবে না। রানীর ছোট ভাই তার মাকে বলছিল ওই মানুষটাকে আমাদের বাড়ি থেকে চলে যেতে বল যে আমাদের কারো ভালো চায় না। এমন কথা শুনে রানী তার ভাইকে বলল ভাবি হয়তো ভুল করেছে তাই বলে কি তুমি ভাবিকে এসব কথা বলবে?? রানীর ছোট ভাবি তখন চিন্তা করল যার ক্ষতি করার চেষ্টা করছিলাম সেই আজকে আমার পক্ষ নিয়ে কথা বলছে।

রানীর ছোট ভাবি চিৎকার করে কান্না করতে করতে এসে রানীকে জড়িয়ে ধরল আর বলতে থাকলো বোন আমি ভুল করেছি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। তার কথার বিপরীতে আর আমি তার ভাবিকে বলল আপনি আমার গুরুজন আপনি আমার কাছে এভাবে ক্ষমা চাইতে পারেন না। রানীর কথাবার্তায় রানীর বাবা গর্ব করে তার পরিবারের সবার কাছে বলছিল আমার মেয়ে লাখে একজন। ভালোবাসা দিয়ে আমি আমার মেয়েকে বড় করেছি আজকে আমি আমার মেয়েকে ভালোবাসা দেওয়ার প্রতিদান পেয়েছি। আমার মেয়ের বড় ঘরে বিয়ে হবে তার সুখের সংসার হবে এমনটা বলে রানীর বাবা নিজে নিজেই কান্না করছিল। ধীরে ধীরে রানীর অনুরোধে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়।



1000109726.jpg

Source



আবার ঘটক নতুন করে বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে আসে এর মধ্যে উচ্চ লেখাপড়া একটা ছেলের সাথে রানীর বিয়ের কথাবার্তা চলতে থাকে। উভয় পক্ষ থেকেই আগ্রহ জানায় তাই ছেলেপক্ষ রানীর বাড়িতে রানীকে দেখতে আসে। ছেলে পক্ষ যখন রাণীর বাড়িতে আসে তখন রানীর বাড়ির পরিবেশ দেখে বেশ পছন্দ হয়। একে অপরের প্রতি ভালবাসা সবাই একসাথে থাকা, দুই ভাইয়ের সুসম্পর্ক সেই সাথে দুই ভাবির সুসম্পর্ক দেখে ছেলে পক্ষের সবাই বুঝতে পারে এটা নিঃসন্দেহে একটা সুখী পরিবার। ছেলেপক্ষ তাদের সুন্দর পরিবেশ দেখে আর রানীর ব্যবহার রানীর চেহারা দেখে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যায়। যখন রানীর বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হবে তখন ছেলেপক্ষ রানির বাবার কাছে কিছু আবদার করে বসে। মূলত আদিম যুগে বিয়ের ক্ষেত্রে যৌতুকের প্রথা চালু ছিল। ধনী হোক গরিব হোক মেয়ে বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সবাইকে যৌতুক দিতে হতো। যতই রানী অনেক সুন্দর হোক না কেন রানের পরিবার অনেক ভালো হোক না কেন তাদেরকে যৌতুক দিতেই হবে। রানীর বাবার কথা তার একটা মেয়ে ছেলেপক্ষ যত টাকা যৌতুক চাইবে সে দিতে রাজি। কিন্তু রানী শিক্ষিত একটি মেয়ে সে কখনোই যৌতুকের মাধ্যমে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে রাজি নয়। প্রথম অবস্থায় দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে বেশ কিছু টাকার বিনিময়ে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয়।



1000110905.jpg

Source



রানীর যখন বিয়ের সময় হয়ে আসে বিয়ের দিন তারিখ সবকিছু পাকা করা হয় তখন রানী তার বাবাকে বলে সে এই বিয়েতে রাজি নয়। রানীর বাবা অনেকটা আশ্চর্য হয়ে যায় এবং রানীকে জিজ্ঞেস করে কেন মা তুমি এই বিয়েতে অসম্মতি প্রকাশ করছো কেন?? রানীর বাবার এই কথার উত্তরে রানী উত্তর দেয় আমি কি তোমাদের কাছে বোঝা হয়ে গিয়েছি?? তোমরা কেন টাকার বিনিময় আমাকে অন্য বাড়িতে বিক্রি করার চেষ্টা করছো?? রানীর বাবা এই কথা শোনার পর পুরোপুরি চুপচাপ হয়ে যায়। রানীর বাবা কি উত্তর দিবে সেটা আর ভেবে পাচ্ছে না। রানী তখন তার বাবাকে বলে জানি তোমার কাছে এই প্রশ্নের কোন উত্তর নেই তবে আমি জানি তোমরা আমার ভালো চাও তবে হ্যাঁ ভালো চাও বলে টাকার বিনিময়ে আমাকে বিক্রি করে দিও না এই কথা বলে আর আমি তার ঘরে চলে যায়।

রানীর বাবা রানীর এই কথা শুনে চিন্তিত হয়ে যায় আসলে সে এখন কি করবে। হঠাৎ সে সিদ্ধান্ত নেয় প্রাণীর বাবা গিয়ে ছেলে পক্ষের সাথে কথা বলবে। যে ছেলের সাথে রানীর বিয়ের কথা হচ্ছিল সে অনেক বড় চাকরি করে। অনেক লেখাপড়া শিখেছে তাই রানের বাবা সিদ্ধান্ত নেয় সরাসরি ছেলের সাথে কথা বলবে। চিঠির মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে রানীর যে ছেলের সাথে বিয়ের কথা হয়েছিল সেই ছেলের সাথে রানির বাবা দেখা করতে যায়। রানীর বাবা সবকিছু ছেলের কাছে খুলে বলে। রানী বলেছিল টাকার বিনিময়ে তার মেয়েকে অন্য বাড়িতে পাঠিয়ে দিবে এই কথাটাও ছেলেটির কাছে বলল। রানীর বাবার মুখে এই কথাগুলো শোনার পর ছেলেটি বুঝতে পারল আসলে রানীর মন-মানসিকতা অন্যরকম তখন ছেলেটি সিদ্ধান্ত নিলে সে রানীকেই বিয়ে করবে।

(..........চলবে)



🔚সমাপ্তি🔚


এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


IMG-20211015-WA0027.jpg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  
 last month 

1000110926.jpg

1000110923.jpg

1000110925.jpg

1000110924.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

রানীর চিন্তাভাবনা আসলে যথার্থ সুশিক্ষিত মানুষের চিন্তাভাবনা। এমন চিন্তাভাবনা দেখে বেশ ভালো লাগলো। তবে সচরাচর এমন চিন্তাভাবনার লোকেরা বাড়ির অন্যদের কাছে হেয় হয় বা উলটা কথা শুনে। রানীর বাবা সেক্ষেত্রে একদম আলাদা।