কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রকাশিতব্য বই - কেল্লা নিজামতের পথে।
বইমেলায় প্রকাশিতব্য বই - কেল্লা নিজামতের পথে
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
এই বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রকাশ হতে চলেছে আমার এমন একটি বই যার কাজ আমি বহুদিন ধরে করে চলেছি। আজ এই ব্লগের মাধ্যমে আপনাদের সামনে আনতে চাইছি সেই বইটিরই বিবরণ। যে কাজ নিয়ে আমি বিগত এক বছর ব্যস্ত সেই কাজের চূড়ান্ত রূপ প্রকাশ হতে চলেছে বইমেলায়। স্থানীয় ইতিহাস নিয়ে কাজ করা আমার নেশা। আর ঠিক সেভাবেই পরপর বাংলার বিভিন্ন জায়গা নিয়ে আমার গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। কলকাতা শহর, হুগলি জেলা নিয়ে কাজ করবার পর এই বছর আমার বিষয় মুর্শিদাবাদ ও বাংলার নবাবী মসনদ। এই বিষয়টা নিয়ে বহুদিন ধরেই আমার আগ্রহ। তাই কাজে হাত দিয়েছিলাম বছরখানেক আগে। সেই কাজের চূড়ান্ত রূপ বই হিসাবে প্রকাশ হতে চলেছে এই বছর। তাই কয়েক দিন ধরে ব্যস্ত ছিলাম এই বইটির প্রুফ রিডিং এর কাজে। আজ আপনাদের সামনে সেই অভিজ্ঞতারই কিছু কথা শোনাতে চাই।
মুর্শিদাবাদ বিষয়ক ইতিহাস আমায় টেনে রাখে বরাবর। তাই সেই বিষয়ে কাজ করে যে বইটি প্রকাশ করতে চলেছি তার নাম হল 'কেল্লা নিজামতের পথে'। কেল্লা নিজামত অর্থে নবাবদের থাকবার প্রাসাদ এবং আশপাশের জায়গা। সেই জায়গাটি ভীষণ জমকালো এবং ঝলমলে হতো। মুর্শিদাবাদে ভাগীরথীর তীরে এই কেল্লা নিজামতের কিছু ভগ্নাবশেষ আজও রয়েছে। আমি সেইসব ভগ্নাবশেষ এবং হারিয়ে যাওয়া প্রাসাদ নিয়ে এই বইটি লিখেছি। আপনারাও যদি কখনো পড়েন, আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
এই বইটির প্রুফ রিডিং নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি শেষ দুটো দিন। বই লেখবার পর ছাপার অক্ষরে বিশেষ কিছু ভুল থেকে যায়। সেই ভুলগুলোকে সনাক্তকরণ করে সঠিকভাবে আবার পাণ্ডুলিপি প্রকাশকের হাতে তুলে দেওয়াকে প্রুফ রিডিং বলা হয়। যে কাজটি প্রাথমিকভাবে প্রকাশক করে ফেলেছে একবার, এবং আমি তার দ্বিতীয়বারের কার্যসম্পাদন করছি। কাজটি করবার সময় চোখ খোলা রাখতে হয় বিশেষভাবে। কারণ বহু লেখার মধ্যে ভুলটি খুঁজে বার করা যথেষ্ট কঠিন একটি কাজ। এবং দ্বিতীয়বার রিডিং করবার সময়ে আমি সম্পূর্ণ পান্ডুলিপিতে প্রায় কুড়ি থেকে পঁচিশটা ভুল বার করতে পেরেছি। ভীষণভাবে চেষ্টা করেছি বইটিকে কোন ভুল ছাপার হাত থেকে দূরে রাখতে। কারণ কোন বইতে বানান ভুল আমার একেবারেই পছন্দ হয় না। একটি বইয়ের ভ্যালু বা মূল্য শুধুমাত্র পয়সা দ্বারা নির্ধারিত হয় না। সেই বইয়ের সম্পূর্ণ উপস্থাপনা এক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই বইটিতে যেভাবে মুর্শিদাবাদের ইতিহাস পর্ব হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, তা আশা করি আমার পাঠকদের ভীষণভাবে আকর্ষণ করতে পারবে। কারণ একটি বইয়ের কাছে তার প্রধান গুরুত্ব হল গল্পের গতিশীলতা এবং তার সার্বিক উপস্থাপনা। আমি চেষ্টা করেছি এই দুটি বিষয়ে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার। বাকিটা আমার পাঠকদের বলবার অপেক্ষায় রইলো।
এই বইয়ের প্রুফ কারেকশন করতে গিয়ে সম্পূর্ণ বইটি আমার আরেকবার পড়া হয়ে গেল। এরমধ্যে প্রকাশক আমার হাতে তুলে দিয়েছে বইটির প্রচ্ছদ। আমার তো প্রচ্ছদ বেশ পছন্দ হয়েছে। মুর্শিদাবাদের নববীয়ানার সাথে খাপ খাইয়ে প্রকাশক প্রচ্ছদটি তৈরি করেছে। আর সম্পূর্ণ বইতে সেই নবাবীয়ানাটাই ছড়িয়ে রাখতে চেষ্টা করেছি আগাগোড়া। কারণ একটি ইতিহাসের গল্প সম্বলিত বইতে যদি সেই সময়কালটা তুলে নিয়ে না আসা যায় তবে আর বইয়ের সার্থকতা কোথায়। সবকিছু করে আমার তরফ থেকে যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে ফেললাম। এবার শুধু অপেক্ষা। কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় কবে প্রকাশ পায় আমার 'কেল্লা নিজামতের পথে'। এখন শুধু এটুকুই দেখার।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Daily tasks-
https://x.com/KausikChak1234/status/1879241810155094370?t=7CuRw_kGFsRQPxvoaOlhCg&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার থেকে এই বইটার কথা শুনেছিলাম। স্টোরি প্লট শোনার পর থেকে পড়ার জন্য একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি প্রচ্ছদ টা বেশ সুন্দর। আশাকরি বইমেলায় এটা পাঠকদের দৃষ্টিতে পড়বে। বইটা বাংলাদেশে পেলে কিনতাম। আপনার জন্য শুভকামনা ভাই।।
আপনার জন্য বইটি পরে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে ভাই। বিষয়টি আমার মাথায় আছে। আপনার মত বইপ্রেমী মানুষ যে কোন লেখক এর কাছেই প্রাপ্তি। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকলেন বলে অনেক ধন্যবাদ।