উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে অনুষ্ঠিত আদিবাসী নৃত্যের ভিডিওগ্রাফি।
উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে অনুষ্ঠিত আদিবাসী নৃত্য
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
আজ আপনাদের সামনে একটি বিশেষ ভিডিও নিয়ে এলাম। বিগত বছর ডিসেম্বর মাসে আমি ঘুরতে গিয়েছিলাম উত্তরবঙ্গে। সেখানে বেশিরভাগ অঞ্চলই জঙ্গল এবং বন্য পশু দ্বারা আবৃত। উত্তরবঙ্গ বলতেই প্রথমে মাথায় আসে পাহাড় এবং জঙ্গল। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত জঙ্গলকে ডুয়ার্স অঞ্চল বলে অভিহিত করা হয়। সেই জায়গা ঘুরতে যাওয়ার জন্য ভীষণ উপযোগী। আমি গরুমারা অভয়ারণ্য এবং চাপড়ামারী অভয়ারণ্য গিয়েছিলাম। এই দুটি অরণ্যই যথেষ্ট ঘন এবং প্রচুর পরিমাণে বন্যপ্রাণ দ্বারা আবৃত। সেখানে মানুষ বলতে কিছু আদিবাসী সম্প্রদায় বাস করেন। তারা জঙ্গলের কাঠ কেটে বা মানুষদের মনোরঞ্জন করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিভিন্নভাবে সেই আদিবাসী সম্প্রদায়েরদের সাহায্য করে থাকেন। যেমন বিভিন্ন ধরনের হস্ত এবং কুটির শিল্প নির্মাণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনার মাধ্যমে যাতে তাদের দু পয়সা আয় হয় সেই দিকে সরকার বিশেষভাবে নজর দেন। তাই অভয়ারণ্যের মধ্যে প্রত্যহ বিকেল বেলা করে সেইসব আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা একটি সংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজন করেন। যে সকল পর্যটক জঙ্গল সাফারি করে বিকেলবেলা সেই অঞ্চলে আসেন তাঁরা এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপভোগ করতে পারেন। সেখানে বিভিন্ন ধরনের আদিবাসী গান এবং নৃত্যের মাধ্যমে পর্যটকদের মনোরঞ্জন করা হয়। সব থেকে অবাক লাগলো সেখানে উপস্থিত প্রত্যেক পর্যটকদের সেই আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা চা পরিবেশন করে খাওয়ালেন। এবং সঙ্গে দেখালেন সেখানকার বিখ্যাত কিছু নাচ এবং গান। সঙ্গে ধামসা মাদলের সুরে যেন সম্পূর্ণ সন্ধ্যাটাই বদলে গিয়েছিল। তখন সবে সূর্য অস্ত গেছে। ফলে চারিদিকে গোধূলির মাতাল করা অন্ধকার। আর তার মধ্যে সেই নৃত্য যেন আলাদাই এক অনুভূতির জন্ম দিয়েছিল।
![]() | ![]() |
---|
আজ একটি ভিডিওর মাধ্যমে আমি সেই আদিবাসী নৃত্যের কিছু ঝলক আপনাদের সামনে তুলে আনলাম। যে মানুষগুলো জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করে এবং দুবেলা ভাত জোগাড়ের জন্য রীতিমতো তীব্র পরিশ্রমের মাধ্যমে দিনযাপন করে তাদের ছবি আজ আপনাদের সামনে তুলে আনলাম। সম্পূর্ণ ভিডিওতে নৃত্যানুষ্ঠানটি আপনারা দেখতে পাবেন। অনুষ্ঠানটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে নিশ্চয় কমেন্টের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। উত্তরবঙ্গে এই ধরনের নাচ বহুল প্রচলিত। যেসব আদিবাসী সম্প্রদায় সেখানে বাস করেন তারা প্রত্যেকে মিলেমিশে এই ধরনের অনুষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন। প্রায় আধঘন্টার এই অনুষ্ঠানটি আমার বিশেষ ভাবে ভালো লেগেছিল। সেই অনুষ্ঠান শেষ হবার পর আমরা জঙ্গল সাফারির জিপে চড়ে পুনরায় হোটেলে ফিরে এসেছিলাম। আজ কিছুদিন পরে হলেও ইচ্ছে হলো সেই ভিডিও আপনাদেরকে দেখাই এবং সেই আনন্দের কিছু পরিমাণ ভাগ আপনাদের সঙ্গেও বাটোয়ারা করে নিই।
💐ভিডিওগ্রাফি💐
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1900840033416081895?t=R7Ct1_J-2NCLA2aryADiFA&s=19
Daily tasks-
এমন কিছু দেখার ভাগ্য আগে হয়নি। আদিবাসীদের নিজস্ব ঐতিহ্য থাকে এবং তারা সেটা মেনেই চলে। এই নাচও তার অংশ। দারুণ লাগল তাদের নৃত্য টা। চমৎকার ধারণ করেছেন ভিডিওগ্রাফি টা ভাই। সবমিলিয়ে চমৎকার ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।