হঠাৎ এক প্রাপ্তি। শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রছাত্রীদের উদযাপন।
হঠাৎ পাওয়া শিক্ষক দিবসের প্রাপ্তি
নির্দিষ্ট শিক্ষক দিবসের পরে শিক্ষক দিবস উদযাপনের এক আনন্দই আলাদা। ছাত্ররা যখন এসে হঠাৎ করে সেই দিনটি পেরিয়ে গেলেও তার উদযাপন করে তখন এক অন্যরকম অনুভূতি ভর করে মনে। শিক্ষক দিবস পেরিয়ে গেছে সেই ৫ই সেপ্টেম্বর। কিন্তু তারপরেও চলছে আমার ছাত্রদের দ্বারা শিক্ষক দিবস উদযাপন। স্কুল থেকে শুরু করে বাড়ি, সব জায়গাতেই ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন উপহার প্রদান এবং বিভিন্ন রকম খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমে পালন করেছে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। আজ সর্বশেষ পাওয়া শিক্ষক দিবসের উপহারের কথা বলব। একটি ছাত্রদের দল হঠাৎ করেই শিক্ষক দিবস উদযাপন করল কিছুদিন আগে। আমি বিষয়টি সম্বন্ধে অবগত ছিলাম না। আমি যথারীতি তাদের পড়াতে গেছি সময় মত। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম সেখানে দরজা বন্ধ। তারা আমায় জানালো যে একটু পরে আমি ঘরে প্রবেশ করতে পারব। সেদিন যেন আমি তাদের শিক্ষক হয়েও তাদের অনুমতি মতো ঘরে প্রবেশ করার ছাড়পত্র পেলাম। শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত চলে আমার এমন যাপন। কখনো তাদের সঙ্গে মেতে থাকি তাদের গল্পে আবার কখনো তাদের বয়সে পৌঁছে গিয়ে চেষ্টা করি তাদের যাত্রাপথের শরিক হতে।
শিক্ষক জীবনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো অনেক সময় অনেক কিছু বুঝেও নীরব থাকতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে। ঠিক যেমন সেদিন আমি সবকিছু বুঝেও কিছুটা না জানার অভিনয় করতে শুরু করলাম। তারপর আমার অনুমতি এলো তাদের ঘরে প্রবেশ করার। ঘরে ঢোকার পরে আমি তো অবাক। আমি আসবার আগেই তারা আয়োজন করে ফেলেছে শিক্ষক দিবস উদযাপনের। আয়োজনে রয়েছে বেশ বড় একটি কেক এবং বেশ কিছু উপহার। তারা আমাকে সম্পূর্ণ বিষয়টি একটি চমক দিতে চেয়েছে। আমার ওই চমক পেয়ে যে আনন্দের অনুভূতি জন্মেছিল তা আজ ব্লগে শেয়ার করছি আপনাদের সকলের সাথে।
তারা উপহার স্বরূপ একটি কেকের আয়োজন করেছিল। তার সাথে কয়েকটি পেন এবং একটি সুন্দর বুদ্ধদেবের মূর্তি তারা আমার হাতে তুলে দেয়। এই সব উপহার পেয়ে আমি আশ্চর্য হয়ে যাই। তাদের ভালোবাসা বরাবরই আমার কাছে সম্পদের মত। হয়তো প্রতিবছর এমন বিভিন্ন ছাত্রছাত্রীরা আসে এবং যথাসময়ে পাস করে চলে যায় আমার কাছ থেকে। কিন্তু তাও স্মৃতি হয়ে থাকে এইসব আয়োজন এবং তাদের ব্যবহারগুলো। প্রতিনিয়ত যে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা আমি তাদের কাছ থেকে পাই তা ভাষায় বোঝাবার নয়। তাই শিক্ষক দিবস হিসাবে তাদের বিভিন্ন রকম উদযাপন চলতে থাকে প্রায় দুই সপ্তাহব্যাপী। আর এই সেপ্টেম্বর মাসটি শিক্ষকদের জন্য যেন এক প্রাপ্তির মাস। আর ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে হঠাৎ করে এমন একটি প্রাপ্তি হয় সব মিলিয়ে খুব ভালো একটি অনুভূতি হল। আজ আপনাদের সঙ্গে আমার সেই অনুভূতির সবটুকুই শেয়ার করলাম। যদি ভালো লাগে নিশ্চয়ই মন্তব্য করে জানাবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(৫% বেনিফিশিয়ারি এবিবি স্কুলকে এবং ১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.