বইমেলায় সময় কাটানোর মধ্য দিয়ে দারুন কিছু মুহূর্ত যাপন
বইমেলায় সময় কাটানোর মধ্য দিয়ে দারুন কিছু মুহূর্ত যাপন
আজ চলে গিয়েছিলাম বারাসাতে তিন দিনের বইমেলায় তাদের আমন্ত্রণ রক্ষা করবার উদ্দেশ্যে। এই বইমেলা আমার বিশেষভাবে ভালো লাগে। কারণ কয়েকটি ক্ষুদ্র সংস্থা দ্বারা পরিচালিত এই বইমেলাটি প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় বারাসাতের নতুন পুকুর ময়দানে। বিশেষ করে কয়েকজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত পরিশ্রমে এবং ইচ্ছেয় এই বইমেলাটি প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়। এটি একটি লিটল ম্যাগাজিন বুক ফেয়ার হিসেবে পরিচিত। বইমেলা আসলে সমাজের একটি বিশেষ দর্পণ। আমরা বিশ্বাস করি বইমেলা মানুষ এবং সমাজকে শিক্ষিত করতে এক বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই এই যে জেলায় জেলায় বইমেলার আয়োজন, এই আয়োজনগুলি ভীষণ সদর্থক হিসেবেই পরিগণিত হয়ে থাকে। প্রত্যেকটি জেলায় এবং তার বিভিন্ন শহরে এই ধরনের ছোট ছোট উদ্যোগগুলো মানুষের মধ্যে বিশেষ প্রভাব ফেলতে সাহায্য করে।
আজকে বারাসাতে বইমেলা উপলক্ষে বিভিন্ন বইয়ের স্টল তো ছিলই। আর তার সঙ্গে ছিল কবিতা পাঠ এবং সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। আয়োজকরা ভীষণ দক্ষ হাতে সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছেন। অনুষ্ঠানের বেশ কিছুদিন আগেই কর্তৃপক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারা আমাকে সেই অনুষ্ঠানে হাজির থেকে কবিতা পাঠ করতে আমন্ত্রণ জানান। সেই মতো আমি ঠিক করে রেখেছিলাম যে আজ আমন্ত্রণ রক্ষা করতে পৌঁছে যাব বারাসাতের সেই নতুন পুকুরের বইমেলা প্রাঙ্গণে। তাই বাড়ি থেকে যথা সময় বেরিয়ে আমার বাহনটিতে চড়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম সেখানে। পৌঁছে দেখলাম সুন্দর সব আয়োজন। এবং সমস্ত বইয়ের টেবিলের পাশাপাশি প্রচুর কবি সাহিত্যিক মানুষ পৌঁছে গিয়েছেন সেই মেলাতে। আমাকে যেমন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, ঠিক তেমনভাবেই অন্য কবি সাহিত্যিকদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মেলা কর্তৃপক্ষের তরফে। অনেকদিন পরে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে সময়টা বেশ ভালো কাটলো।
এই মেলায় আজ হাজির হওয়ার মূলত আমার উদ্দেশ্য ছিল কবিতা পাঠ। কিছুক্ষণ বসবার পর মেলা কর্তৃপক্ষের উপস্থাপিকা আমার নাম ধরে ডাকলেন মঞ্চে যাওয়ার জন্য। তারপর আমি মঞ্চে উঠে তিনখানি কবিতা পাঠ করলাম। তারপর নেমে এসে দর্শক আসনে বসলাম। কবিতা পাঠ হয়ে যাওয়ার পর সম্পূর্ণ বইমেলা চত্বরটি ঘুরে দেখলাম একবার। কয়েকটি প্রয়োজনীয় বই ক্রয় করবার পর কিছু সম্পাদক তাদের পত্রিকা আমার হাতে সৌজন্য সংখ্যা হিসেবে তুলে দেয়। সেই পত্রিকা গুলিতে আমার লেখা রয়েছে বলে সেগুলির সৌজন্য সংখ্যা পাওয়া আমার অধিকার। আর সেই মতো সৌজন্য সংখ্যা নিয়ে আমি আবার বইমেলা ঘুরতে শুরু করলাম। ছোট হলেও এই বইমেলা ভীষণ সুসজ্জিত এবং পরিকল্পিত। সবদিক থেকে ভীষণ সুন্দর এই আয়োজন বিশেষভাবে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সবকিছু মিলিয়ে দারুন সুন্দর একটি রবিবার কাটল। সব কাজ শেষ করে তারপর আবার যাত্রা শুরু করলাম বাড়ির দিকে।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily tasks-
শম্পাদির আয়োজিত এই বইমেলাটি ক্ষুদ্র হলেও বড় আনন্দের। এতো দূর থেকে দেখেই সুখ। আসলে বইমেলাগুলোতে গেলে নিজেদের কবিতা পাঠের পাশাপাশি আরও অনেক কাজ হয়ে যায় যেমন তুমি একটা সৌজন্য সংখ্যা পেয়ে গেলে।