সবাইকে জানাই বাংলাদেশের ৫৫ তম স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।।

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। ফ্যামিলির মেম্বার তিনজনের মধ্যে দুইজনই অসুস্থ। অসুস্থতা যেন কিছু ছাড়ছে না। কিছুদিন পরে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার প্রোগ্রাম রয়েছে। বাড়িতে যাওয়ার আগে আগে সবাইকে যেন সৃষ্টিকর্তা সুস্থতা দান করেন, সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।

আজকে বিশ্ব ইতিহাসের মর্মান্তিক একটি দিন। আজ ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের ৫৫ তম স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতের বেলা পাক হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের নিরস্ত্র,নিরীহ, ঘুমন্ত সাধারণ মানুষের উপর এক বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। এ দিনটি ইতিহাসের পাতায় কালো দিন হিসেবে লেখা রয়েছে। এই দিনটির কথা স্মরণ হলে হাজার হাজার মানুষের চোখের কোণে মনের অজান্তে পানি চলে আসে।

আমাদের তখন জন্ম হয়নি। দাদা দাদির কাছে শুনেছি আমার আব্বার বয়স নাকি তখন পাঁচ থেকে ছয় বছর ছিল। ঐদিন আমার কাকা জন্মগ্রহণ করেছিল। ইতিহাস পড়ে জানতে পারি ২৬ শে মার্চ দিনের বেলা যখন সবাই শুনতে পায় ঢাকার রাস্তা মানুষের রক্তে লাল হয়ে গেছে, এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মানুষের লাশ। মানুষ দিকবিদিক ছোটা ছুটি করতে ছিল। যে যেভাবে পারে ঢাকা শহর ত্যাগ করেছিল। যাকে যেখানে পাওয়া যাচ্ছিল তাকে সেখানেই গুলি করা হত্যা করা হচ্ছিল। মানুষের রক্তের চাইতে তাদের কাছে মাটির দাম বেশি হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাস সংরক্ষিত রয়েছে।

দাদার মুখ থেকে শুনেছি, যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন পরে দাদা বাবাকে কোলে নিয়ে আর দাদি চাচাকে কোলে নিয়ে গ্রাম ছেড়েছিল। আমাদের গ্রামটি কুমিল্লা সিলেট হাইওয়ে রোডের পাশে হওয়ার কারণে খুব সহজেই পাকিস্তানি মিলিটারিরা আমাদের গ্রামে প্রবেশ করতে পেরেছিল। আমাদের গ্রামের পশ্চিম পাশে ছিল বিশাল বড় ফসলের মাঠ। কিন্তু যখন যুদ্ধ হয়েছিল তখন নাকি বন্যা ছিল। ফসলের মাঠে তখন প্রচুর পানি ছিল। দাদার শ্বশুর বাড়ি ছিল আমাদের গ্রামের পশ্চিম দিকে শিকারপুর গ্রামে। আমাদের গ্রামের পরে পশ্চিম দিকে বিশাল বড় ফসলের মাঠের মাঝখান দিয়ে ছোট একটি নদী ছিল, এই নদী ২ গ্রামকে পৃথক করেছিল। দাদা অন্য গ্রাম দিয়ে ঘুরে তিনি শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিল। মিলিটারিরা পানিকে খুবই ভয় পেতো।৷ যার ফলে নদী বা চর এলাকার মানুষ কিছুটা নিরাপদ ছিল।

দাদা দাদি, বাবা ও চাচা তিনির শ্বশুরবাড়িতে রেখে তিনি আবার আমাদের গ্রামে ফিরে এসেছিল। তবে আমার দাদা যুদ্ধে যাইনি, যুদ্ধের সময় নিজের বাড়ি আর শ্বশুর বাড়ি এ দুই জায়গাতেই ছিল। বই-পুস্তক থেকে যতটুকু যুদ্ধের কাহিনী পড়েছি, দাদার মুখে তার থেকে বেশি যুদ্ধের ঘটনা শুনেছি। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা। বিশ্বের বুকে জন্ম হয়েছে একটি স্বাধীন দেশ, বিশ্বের মানচিত্র নতুনভাবে অঙ্কিত হয়েছে, আমরা পেয়েছি নতুন পতাকা ,বাক স্বাধীনতা। আজকের দীর্ঘ ৫৫ বছর পরে সেই বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি, তাদের প্রতি সালাম।

তারা যদি নিজের মাতৃভূমি রক্ষার জন্য বীরের মতো ঝাঁপিয়ে না পড়তো, তাহলে হয়তো আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। ঐদিন সব শ্রেণীর মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজের মাতৃভূমি রক্ষার জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, নিজেদের জীবন বাজি ধরেছিল। যার যা কিছু ছিল তা নিয়েই শত্রুর মোকাবেলা করেছি। আমরা হলাম সেই বীরের জাতি, আমরা কোন সময় অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবো না।

আজকে মহান স্বাধীনতার ৫৫ বছর পেরিয়েও বাংলাদেশ পুরোপুরি স্বাধীন হয়নি। যারা রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিল তাদের রক্তের সাথে বেইমানি করা হচ্ছে, দেশের রন্ধে রন্ধ্রে দুর্নীতি গ্রাস করেছে, দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার হচ্ছে, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের দুর্নীতি পুরোপুরিভাবে বন্ধ না হবে, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরিপূর্ণতা লাভ করবে না। আজকে ৫৫ তম স্বাধীনতা দিবসের স্লোগান -দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ আমাদের সবার অঙ্গীকার।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।