লাইফ কেয়ার ব্লাড ব্যাংকে একদিন।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকের ব্লগটি এক দিকে খুশি আবার অন্য দিকে বেদনার। যারা এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন, তারাই বিষয়টা ভালো ভাবে অনুধাবন করতে পারবেন।
গত ১৫ই মার্চ আমার ছোট বোনের গলায় থাইরয়েডের সার্জারি হয়েছিল। এই বিষয়ে দুটি ব্লগ শেয়ার করেছিলাম। তবে সেই দুটি ব্লগে একটি বিষয় আমি হাইড রেখেছিলাম। আজকে সেই বিষয়টা নিয়েই ব্লগ লিখতেছি। যদি ব্লগটি ভালো ভাবে পড়েন তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে কোন একদিন কাজে লাগতে পারে। কারন জীবনে অভিজ্ঞতার শেষ নেই, শিক্ষার কোন সময় নেই। জীবনের প্রতিটা ধাপ একটি করে শিক্ষা দেয়।
আমাদের ফেমিলিতে বা আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে বড় ধররের কোন সার্জারি আমি দেখি নাই। যার ফলে এই বিষয় গুলোর ব্যাপারে আমার তেমন কোন ধারনা নেই। গত দুই সাপ্তাহ ছোট বোনকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে অনেকটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ টেস্ট শান্তিনগর ম্যালিয়াস হাসপাতালে করালেও সার্জারিটা করিয়েছিলাম মগবাজার ইস্কাটন রোডের তাকওয়া হাসপাতালে। হাসপাতালটি মোটামুটি অনেক বড় আর নামডাক ভালোই আছে।
আমার বোনের সার্জারি শুরু হয় দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে। শেষে হয় ২টা দশ মিনিটে। সার্জারি শেষ করে আমাদের হাতে একটা স্যাম্পল দেয় যেটা ধানমন্ডির আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেস হাসপাতাল থেকে পরিক্ষা করে আনতে বলে। আড়াইটার সময় আমার বোনকে ওটি থেকে বের করে। আমি আমার বোনকে দেখে বোনের জামাইকে নিয়ে স্যাম্পল টেস্ট করতে চলে গেলাম ধানমন্ডি।
রমজানে দুপুর দুইটার পর থেকে ঢাকা শহরে প্রচুর জ্যাম পড়ছে। ঐদিন আমার ইস্কাটন রোড থেকে দেড় ঘন্টা সময় লেগেছে ধানমন্ডি যেতে। তারপরেও গ্রীন রোড থেকে বাকিটা হেঁটে গেছি। যায়হোক স্যাম্পল দিয়ে আসতে আসতে প্রায় ছয়টা বেজে গেছিলো। এসে দেখি আমার বোনকে বেডে ট্রান্সফার করা হয়েছে। তবে প্রচুর ব্লাডিং হচ্ছে। তারা নষ্ট ব্লাড বের হওযার জন্য একটি পাইপের সাহায্যে একটি বক্স দিয়েছে। তবে সেটা দিয়ে অস্বাভাবিক ব্লাড যাচ্ছিল।
আমি এসে এই অবস্থা দেখে দ্রুত ডাক্তার নার্সকে ডাকলাম। তারা আবার সাথে সাথে সার্জারি ডাক্তারকে ফোন দিলো। তিনি আবার ওটিতে নিয়ে যেতে আদেশ দিলেন। আবার আমার বোনকে ওটিতে নিয়ে যাওয়া হলো। তখন আমাদের সবার ভিতরে চিন্তা টেনশন, কি খেকে কি হচ্ছে। ডাক্তার এসে ব্যান্ডেজ খুলে লুজ কানেকশন ঠিক করলো। তবে ততক্ষণে অনেক ব্লাড বের হয়ে গেছে। তখন ডাক্তার বললো ইমারজেন্সি এক ব্যাগ ব্লাড লাগবে। বোনের ব্লাড গ্রুপ সকাল বেলা টেস্ট করা হয়ছিল, এ পজেটিভ। তখন ইফতারের সময় সবাই ইফতার নিয়ে ব্যস্ত। তারপরেও অনেক জাগায় ফ্রেন্ড সার্কেল আত্মীয়-স্বজনের কাছে ফোন দেওয়া হলো। ইমারজেন্সি এ পজেটিভ ব্লাড পাওয়া যাচ্ছিলো না। অবশেষে ব্লাড ব্যাংকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ঐদিন আর আমার ইফতার করা হয়নি। টেনশনে ইফতারের কথা ভুলেই গেছিলাম।
একটি স্বেচ্ছা রক্তদান কেন্দ্রের নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করলাম। তাদের কাছে এ-পজেটিভ নির্ধারিত সেলের ব্লাড নেই। তারপর যোগাযোগ করলাম লাইফ কেয়ার ব্লাড ব্যাংকে। যেটা মগবাজার মোড় থেকে পাঁচ মিনিটের দূরুত্ব ছিল। আমি আর আমার বোনের জামাই গেলাম লাইফ কেয়ারে। গিয়ে দেখি তারা ঐদিন পার্টি করে ইফতার করছে। আমরা সেখানে গিয়ে বিশ মিনিট অপেক্ষা করলাম। তারপর একজন ক্যাশ কাউন্টারে আসলো। আমরা গিয়ে এ পজেটিভ রক্ত চাইলাম। তারা বললো ১ ঘন্টা লেইট হবে। আমরা নিরুপায় হয়ে বসে রইলাম। এক ব্যাগ ব্লাডের দাম নিলো ২৫০০ টাকা। সাধারনত ১৮০০/২০০০ টাকা রাখে। তবে তারা একটু বেশি চাইলো। ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে দেখলাম অনেক মানুষ অর্থের জন্য ব্লাড বিক্রয় করে। আবার আমাদের মত যাদের ব্লাড প্রয়োজন তারা ব্লাড কিনে আনে। সেটা আবার ভিন্ন একটা জগৎ।
আমরা ৭.৩০ মিনিটের দিকে ব্লাড নিয়ে তাকওয়া হাসপাতালে উপস্থিত হলাম। তারপর বোনের শরীরে ব্লাড দেওয়া শুরু হলো। রাত বারোটা পর্যন্ত ব্লাড চললো। ব্লাড দেওয়ার পরে বোনকে কিছু টা সুস্থ দেখলাম। ১২ টার পরে বোনকে স্যুপ খাইয়ে, লাজফার্মা থেকে ঔষুধ এনে খাইয়ে তারপর রাত দুটোর সময় হাসপাতাল থেকে বের হয়েছিলাম। বাসায় এসে সাড়ে তিনটার সময় সেহরি খেয়ে ঘুমিয়েছিলাম। আটটার সময় ঘুম থেকে উঠে নয়টা থেকে আবার অফিস। এটাই বাস্তব জীবনের চিত্র।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রিয়েলমি সি-৫৩ |
স্কিন শর্ট | @joniprins |
তারিখ | ১৫.০৩-২০২৫ |
সময় | রাত ৭.৩০ মিনিট |
স্থান | মগবাজার মোড়,ঢাকা |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
https://x.com/ArianKh29670721/status/1904061549691670908?t=n09bdSY-eci2ZlAKGL8WWQ&s=19
https://x.com/ArianKh29670721/status/1904058626391838733?t=PISMecD4iPlm8jKnvZclgA&s=19