এ বছর প্রথমবার তালের শাঁস খাওয়ার অনুভূতি।

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)
আস-সালামু আলাইকুম

প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাইবোন বন্ধুরা,

আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন আমি আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।

IMG_20240526_114459-01.jpeg

আজকে আমি আপনাদের মাঝে নিয়ে চলে আসলাম আরও একটি নতুন পোস্ট। এই সময়টাতে চারিদিকে অনেক রকম ফল দেখতে পাওয়া যায়। শীতকালে যেমন বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যায়,গরমকালে ঠিক তেমনি অনেক অনেক ফলমূল পাওয়া যায়। আর এই ফলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে তাল। যে ফলটা কাঁচা থাকলে সরাসরি খেয়ে স্বাদ নেওয়া যায়। আবার পেকে গেলে তালের রুটি, বড়া বানিয়ে খাওয়ার মাধ্যমেও ভিন্ন ধরনের স্বাদ নেওয়া যায়। আবার সবশেষে তালের আঁটিগুলোকে কিছুদিন সংগ্রহ করে রেখে দিয়ে এর মধ্যে থেকে ফোঁপরা পাওয়া যায়,যেটাও এনে দেয় ভিন্ন ধরনের স্বাদ। আমার কাছে তো কাঁচা তালের শাঁস,পাকা তালের বড়া রুটি, তালের আঁটির ফোঁপরা সবগুলো খেতেই বেশ ভালো লাগে। তবে কেন জানিনা সব থেকে তালের আঁটির ফোঁপরা গুলো খেতেই বেশি বেশি ভালো লাগে।

ছোটবেলায় এই ফোঁপরা খেয়েছি অনেক। ছোটবেলায় তালের আঁটি কাটতে বেশ কষ্ট হতো,কিন্তু তারপরেও চেষ্টা করতাম কোন রকমে এগুলোকে কেটে খাওয়ার জন্য। আর তালের শাঁস খাওয়া নিয়েও একটি মজার ঘটনা আছে। অতীতে এক সময় আমার নানিদের বাড়িতে একটি তাল গাছ ছিল। যতটুকু মনে আছে কোনো একদিন নানির বাড়িতে গিয়ে গাছে তাল দেখে খেতে ইচ্ছে করছিল। আমি তখন মোটামুটি গাছে উঠতে পারতাম,তাই বারবার চেষ্টা করছিলাম তাল গাছে উঠে তালপাড়ার জন্য। তবে বয়স কম হওয়ার কারণে যত চেষ্টাই করি না কেনো তাল গাছে ওটা আমার পক্ষে অসম্ভব ব্যাপার ছিলো। তো শেষে এক পর্যায়ে দেখলাম আমার এই তাল খাওয়ার ইচ্ছা দেখে আমার মামা একটা লোক নিয়ে এসে তাল পেড়ে দিয়েছিল এবং তারপর তাল খাওয়ার সুযোগ হয়েছিল।

তো যাই হোক আজকে আমি আপনাদের মাঝে এবছর প্রথম তালের শাঁস খাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করব। চলুন তাহলে মূল বিষয়ে আসা যাক। গত কয়েকদিন আগেই লক্ষ্য করেছিলাম মরকা বাজারের একটা জায়গায় তালের শাঁস বিক্রি করছে। তবে সব থেকে অবাক হয়েছিলাম ওই তাল বিক্রেতা একদম কড়া রোদের মধ্যে বসে তাল বিক্রি করছিল। প্রথম দিন যখন উনি তাল বিক্রয় করতে বসেছিলেন সেদিন তাল কেনা হয়েছিল না। তবে পরে যখন উনি আবারও সেই জায়গায় রোদের মধ্যে তাল বিক্রয় করতে বসেছিলেন,তখনই মূলত গিয়েছিলাম তালের শাঁস কেনার জন্য।

IMG_20240526_113824-01.jpeg

প্রথমে আমি যখন তাল কিনার জন্য যাচ্ছিলাম তখন তারিফ ভাই বলে দিয়েছিল তিনহালি তালের দাম ৫০ টাকা পড়বে। তো সেই অনুযায়ী আমি তাল বিক্রেতার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম তাল কত করে বিক্রি করছেন? তখন উনি আমাকে বলেছিল ২০ টাকা হালি অর্থাৎ এক পিস তালের শাঁস পাচঁ টাকা। আমি ওনাকে বললাম আমাকে যে বলা হলো তিন হালি তালের শাঁস পঞ্চাশ টাকা। তখন তাল বিক্রেতা আমার কথা শুনে একটু হেসে দিলেন এবং বললেন একজনকে এমনিতেই দিয়েছিলাম। তো আমি তখন ওনাকে একটু মজার ছলে বলেছিলাম আমাদেরকেও কি দেওয়া যাবে? দেখলাম উনি আর না করলেন না দিতে রাজি হয়ে গেলেন।

IMG_20240526_115421-01.jpeg

আমার আগে একজন তাল কিনতে এসেছিলো। তাই প্রথমে ওনাকে বিদায় করে দিলেন। এরপর আমাকে দেওয়ার জন্য তাল কেটে শাঁস বের করতে থাকলো। বেশ কিছুক্ষণ ধরে উনি তালের শাঁস গুলো বের করে দিয়েছিলেন এবং আমি আপন মনেই ওনার তাল কেটে দেখছিলাম। এক পর্যায়ে আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি এই রোদের মধ্যে কেন তাল বিক্রি করছেন। তখন উনি বলল আমাদের গা অনেক শক্ত এই সামান্য রোদে কিছুই হবে না। সকালবেলায় মাঠে নিজের কাজগুলো সেরে নিয়ে,তাল গাছে উঠে তাল পেরে, তারপর বাজারে নিয়ে এসেছি সেগুলোকে বিক্রি করার জন্য। তখন আমি বললাম শুধু শুধু কষ্ট করার কি দরকার। তো এর উত্তরে দেখলাম তিনি আর তেমন কিছুই বললেন না।

কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর উনি তালের শাঁস গুলো বের করে দিয়েছিলেন। যাইহোক এরপর ওনার বিল পেমেন্ট করে তালের শাঁস গুলো নিয়ে আসলাম। আমরা ছিলাম মোট তিনজন আর তালের শাঁস ছিল তিন হালি। তাই একেকজনের চারটা করে তালের শাঁস বরাদ্দ ছিল। এই বছর প্রথমবার তালের শাঁস খেলাম বেশ ভালোই লেগেছিল। আর ওই তাল ওয়ালা বেশ ভালো দেখেই দিয়েছিল।

তো প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির ভাই বোন বন্ধুরা, এই ছিল আমার আজকের পোস্ট। এবছর আপনাদের কি এখনো তালের শাঁস খাওয়ার সুযোগ হয়েছে? সেটা কমেন্টে জানাতে পারে। তো যাই হোক আজকের মত এটুকুই। আবারো খুব শীঘ্রই নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে ইনশা-আল্লাহ। ততক্ষণ সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের খেয়াল রাখবেন।

আল্লাহ হাফেজ
Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুব সুন্দর একটি অনুভূতি। আপনার আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এ বছরে প্রথমবার তালের শাঁস খাওয়ার অনুভূতি। আসলে ভাইয়া তালের শাঁস খেতে খুবই স্বাদ লাগে। গতকালকে আমিও এ বছরে প্রথম খেয়েছিলাম। সেই লেগেছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার এত সুন্দর একটি অনুভূতি আমাদের মাঝে খুব সুন্দরভাবে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

গতকালকে আপনিও এ বছর প্রথম তালের শাঁস খেয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই মন্তব্যটি করার জন্য।

 last year 

অনেক দিন অপেক্ষার পর সীজনের সময় প্রথম কিছু খাওয়ার অনুভূতি টা কিছুটা আলাদাই হয় বটে! আপনার মতোন আমারও ওই ফোপড়া টা খেতেই বেশ মজা লাগে৷ তবে শহরে থাকা হয় বিধায় অনেক বছরই আর খাওয়া হয় না ওই জিনিস! ৩ হালি তালের শঁাস ৫০ টাকায় কিনে ভালোই জিতেছেন কিন্তু ভাই!

 last year 

তাদের আঁটির ফোঁপরা খেতে আপনার ভালো লাগে জেনে ভালো লাগলো। তবে শহরে থাকলে এগুলো খাওয়াটা সুযোগ হয় না বললেই চলে।

 last year 

তালের ডাব দেখে তো লোভ লেগে গেল ভাই। খুবই চমৎকারভাবে আমি নিজেও কিছুদিন আগে খেয়েছিলাম। খুব সুস্বাদু লাগে আমার কাছে তালের ডাব। অনেক ভালো লাগলো।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যটি করার জন্য।

 last year 

তাল যখন কাঁচা থাকে তখন তালের শ্বাস খাওয়া যায়। পেঁকে গেলে আমরা নানা ধরনের খাবার বানিয়ে এর ভালো স্বাদ নিতে পারি।আমিও কিছুদিন আগে খেয়েছিলাম ভীষণ ভালো লাগছিল খেতে। এখন বেশিরভাগই একটু নরমাল। যেগুলা পানি বেশি থাকে ওগুলো খেতে আরো বেশি ভালো লাগে। আমাদের এ ধারে এক হালি ২৫ টাকায় বিক্রি করতেছে।আপনারা তিনজন মিলে বেশ সুন্দর একটি মুহূর্ত উদযাপন করেছেন। বেশ ভালই লাগলো।

 last year 

জি, ঠিক বলেছেন যেগুলোতে পানি বেশি থাকে সেগুলো খেতে বেশি ভালো লাগে। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্যটি করার জন্য।

 last year 

তালের শাঁস আমার খুবই পছন্দ। তবে এ বছর এখনো খাওয়া হয়নি। আপনি এ বছর প্রথম তালের শাঁস খাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। আমাদের এদিকে দামটা অনেক বেশি তবে আপনাদের এখানে দেখলাম কিছুটা কম রয়েছে। আপনাদের ওখানে একহালি ২০ টাকা আর আমাদের এখানে ৪০ টাকা। আপনার ছোটবেলার ঘটনাটা জেনেও ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপনাদের ওদিকে তো দেখছি দামে একেবারে দ্বিগুণ। এ বছর তালের শাঁস খাওয়ার এখনো সুযোগ পাননি তবে সুযোগ পেলে চেষ্টা করেন খাওয়ার জন্য। আর এমনিতে সিজনালী ফলগুলো সুযোগ পেলেই খাওয়া উচিত।

 last year 

সত্যি ভাইয়া আমাদের শৈশব স্মৃতি গুলো অনেক সুন্দর ছিল। আর এই খাবারগুলোর সাথে শৈশবের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।তালের শাঁস ছোটবেলায় অনেক খেতাম। তবে কেন জানি এখন আর খেতে ইচ্ছা করে না। আর আজকাল এগুলো বাজারে বিক্রি করতেও দেখা যায়।