এক গরমের রাতে হসপিটাল থেকে বাড়ি ফেরা
হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা অনেক অনেক ভাল রয়েছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি একটি রাতে হসপিটাল থেকে বাড়ি ফিরতে ট্রাফিক জ্যামের সম্মুখীন হওয়ার বিষয়বস্তু উপস্থাপন করার জন্য। চলুন তাহলে মূল বিষয়ে যায়।
আপনি যখন শহরে থাকবেন। গ্রামের অসুস্থ গেস্ট আপনার ওপর নির্ভর করবে একটু সহযোগিতা পাওয়ার আশা। গ্রামের নিম্নমানের চিকিৎসা অনেক সময় বিপদ এনে দেয়। ভালো ট্রিটমেন্টের জন্য গ্রাম থেকে শহরে ছুটে আসেন। আবার অনেক সময় অনেক ডাক্তার ভালো চিকিৎসার জন্য ঢাকা শহরে পাঠিয়ে দেন। এমনটাই হয়েছিল আমার সেজো আন্টির ক্ষেত্রে। উনার একটি অপারেশন এর জন্য মেহেরপুর থেকে ঢাকাতে পাঠানো হয়। আন্টি এসে আমাদের বাসায় উপস্থিত হয়েছিলেন। আমার আম্মু আন্টিকে দেখাশোনা করতেন। একদিন অফিস ছেড়ে বাসায় না ফিরে হসপিটালে যেতে হল। উপস্থিত হয়ে দেখলাম আন্টিকে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কিন্তু সিরিয়াল মোতাবেক ডাক্তার দেখতে অনেক দেরি হয়ে যায়। তখন অনেকটা রাত হয়ে গেছে। হসপিটাল টা ছিল ঢাকা গ্রীন রোডের দিকে। হসপিটালের নামটা এই মুহূর্তে স্মরণে নেই। যাই হোক তখন সেখান থেকে সাভারে আমাদের বাসায় ফিরতে হবে। এদিকে রাস্তায় যখন তখন ট্রাফিক জ্যাম হতে থাকে। বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম অসুস্থ আন্টিকে নিয়ে কিভাবে বাসায় ফিরব।
আমি আমার কাজিন আর আম্মু ভেবে দেখলাম এই মুহূর্তে যদি বাসার দিকে রওনা দেই, ট্রাফিক জ্যামের জন্য বাসায় পৌছাতে আমাদের রাত এগারোটা বেজে যেতে পারে। সেখানে বিশমাইল হাইওয়ে থেকে অনেকটা গ্রামের দিকে আমাদের বাসা। এত রাতে পেশেন্ট নিয়ে চলাটা বেশ কঠিন। নিজেকে সামলানোটা বিরক্তি কর সেই জায়গায় অসুস্থ গেস্ট। কি করবো ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মাথায় আসলো আমাদের মামার প্রাইভেট গাড়ি রয়েছে। মামাকে ফোন দেই। যদি কোন বুদ্ধি বের হয় আরকি। তাৎক্ষণিকভাবে মামার কাছে ফোন দেওয়া হল। এরপর মামা বলল তোমরা কিছুটা সময় ওয়েট করতে থাকো, আমি আমার গাড়ি পাঠিয়ে দিব। ডাক্তার দেখানো হয়ে গেছে। কেন যে বুদ্ধিটা একটু আগে আসলো না। ইতোমধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পার হয়ে গেছে সেখানে। অপেক্ষা করতে থাকলাম। এরপর খেয়াল করে দেখলাম মামা যোগাযোগ করে গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। এরপর গাড়িটা এসে জায়গা মত উপস্থিত হলো। এরপর আমরা সবাই মামার প্রাইভেট গাড়িতে উঠে পড়লাম। সময়টা প্রচন্ড ভ্যাপসা গরম। গাড়ির মধ্যে উঠে পড়ে অনেক শান্তি পেয়েছিলাম। গাড়িতে এসি রয়েছে তাই।
ধীরে ধীরে আমাদের গাড়ি এগিয়ে যেতে থাকলো। ধানমন্ডির ৩২,২৭ বিভিন্ন জায়গাতে শুধু জ্যামের সম্মুখীন হতে থাকলাম। লক্ষ্য করে দেখলাম বাসে যদি রওনা দিয়ে বাসায় পৌঁছানোর চেষ্টা করতাম আমরা তাহলে প্রচণ্ড গরমে আমার আন্টির অবস্থা শেষ হয়ে যেত। জায়গায় জায়গায় তিন মিনিট পাঁচ মিনিট সাত মিনিট দাঁড়াতে হয়েছিল আমাদের গাড়িটার। সে জায়গাতে বাসে কতক্ষণ দাঁড়াতে হয়। গাড়ির ডাইভার টা বেশি দক্ষ সুযোগের সুযোগে জ্যামের মধ্য দিয়ে বের হয়ে চলে আসতে থাকলো। ঢাকা শহরে ছিনতাই এর ঘটনা অতি স্বাভাবিক। রাত হলে ছিনতাই এর চক্ররা বের হয়ে পড়ে ট্রাফিক জ্যামের মধ্যে। গাড়ি চালক ভাইটা বারবার করে আমাদের দেখাতে থাকলো ছিনতাইকারী শ্রেণীর মানুষগুলোকে। এরপর গাড়ির গ্লাস বন্ধ করে রাখল। কারণ চিন্তায় কারীরা রাতে গাড়ির মধ্যে হাত দিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এই বিষয়টা আমি অনেক আগে থেকেই জানি কারণ দীর্ঘদিন তো ঢাকাতে অবস্থান করছি আবার চলাচল করেছি। বিষয়টা সম্পর্কে আমার কাজিন কে অবগত করা হচ্ছিল আর কি। আমি শুধু ভাবছিলাম কখন বাসায় পৌঁছাব আর সারাদিনের ক্লান্তি শরীরটা একটু গোসল করার মধ্য দিয়ে প্রশান্তি এনে ঘুম দিব। এসি গাড়িতে বেশ ঘুম পাচ্ছিল। বারবার ঘুমিয়ে যাওয়ার মত ভাবছিলাম আমি। তবে সেই সুযোগে সুযোগে ফটোগ্রাফি করছিলাম আর গল্প করছিলাম যেন ঘুমটাকে থামিয়ে রাখতে পারি।
দীর্ঘ গাড়ির মধ্যে ছিনতাই এর ভয়ে গ্লাস লাগিয়ে রাখায় হঠাৎ খেয়াল করে দেখছিলাম আন্টি অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। কারণ বাইরের আবহাওয়ার বাতাস আর গ্লাসবন্দি গাড়ির এসির বাতাসের পার্থক্য রয়েছে। হঠাৎ আন্টি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। মাঝে মাঝে গ্লাস খুলতে হল। আমরা চেষ্টা করেছিলাম আন্টি যেন ঔষধ আর খাবার খেয়ে একটু ঘুমাতে পারে। অসুস্থ মানুষ জানে অশান্তি থাকলে সত্যিই ঘুম হয় না। আর ক্লান্ত মানুষ একটু বুঝতে পারলেই ঘুম চলে আসে। এই বিষয়টা আমি বারবার ফিল করছিলাম গাড়ির মধ্যে। দোয়া করছিলাম যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। অসুস্থ মানুষ দেখতে খুবই কষ্ট লাগে। এভাবেই আমরা গাড়ির মধ্যে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিলাম আর আন্টির অসুস্থতা অনুভব করছিলাম সে রাতে। গ্লাস বন্ধ করে এসির বাতাস আমাদের ভালো লাগলেও অসুস্থ আন্টির ভালো লাগছিল না। তার জন্য প্রয়োজন ছিল প্রাকৃতিক পরিবেশের শীতল হাওয়া। কিন্তু বাইরে ছিল প্রচণ্ড গরম আর ছিনতাই এর ভয়। সত্যি জীবনটা কত অদ্ভুত। কত রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের সকলের।
ক্যাটাগরি | লাইফ স্টাইল |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei mobile |
আমার ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর |
বর্তমান অবস্থান | ঢাকা সাভার |
ফটোগ্রাফার | @helal-uddin |
ধর্ম | ইসলাম |
দেশ | বাংলাদেশ |
পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি মোঃ হেলাল উদ্দিন। আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুরে। আমার বর্তমান ঠিকানা,ঢাকা সাভার বিশ-মাইল। আমি একজন বিবাহিত ব্যক্তি। কর্মজীবনে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী।
আমার আজকের টাস্ক
যতটা বুঝতে পারলাম আমার শাশুড়ি আম্মার অসুস্থতার মুহূর্তের বিষয় উত্থাপন করেছেন। আপনাদের কাছে আমরা সবাই কৃতজ্ঞ। আপনারা অনেক সহযোগিতা করেছেন আমাদের। এজন্যই তো আম্মা আজকে সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে অবস্থান করছেন। আমি যখন কুষ্টিয়াতে ভাইয়ার বাসায় থেকে লেখাপড়া করতাম, তখন গ্রামের অনেক মানুষ আমার এবং ভাইয়ার আশা করে কুষ্টিয়াতে উপস্থিত হতো এবং আমাদের সহযোগিতা পাওয়ার চেষ্টা করত। আমরা যতদূর পারতাম সহযোগিতা করতাম। এটা মানবতা, এটাই মানুষের সহযোগিতার হাত।
ফেলে আসা কঠিন মুহূর্তে স্মৃতিগুলো স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ভাই। বিপদ মানুষের বলে কয়ে আসেনা। দোয়া করবেন আর কখনো যেন এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয় আমাদের কারো।