"ওরা তিন জন" নাটক রিভিউ 🌼

13-08-2022

২৯ শ্রাবণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


শুভ সকাল 🌼। আশা করি ভালো আছেন সবাই। তো চলে এলাম সকাল সকাল একটি নাটক রিভিউ আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। নাটকের রিভিউটি রাতেই লিখেছিলাম কিন্তু কারেন্ট চলে যাওয়ায় আর পোস্ট করা হয়নি। যায়হোক, আজকে যে নাটকটি শেয়ার করবো তার নাম হচ্ছে ওরা তিন জন। মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত নাটকটি ভিন্ন গল্পের আঙ্গিকে নির্মিত। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

Screenshot_2022-08-12-18-27-07-39.jpg

ছবিঃইউটিউব থেকে নেয়া স্ক্রিনশট



নাটকের কিছু তথ্য


নামওরা তিনজন ।
রচনা ও পরিচালনামিজানুর রহমান আরিয়ান ।
গল্পআশফাকুজ্জামান
চিত্রনাট্যসোহাইল রহমান ।
অভিনয়েখাইরুল বাশার, সাফা কবির, তাসনুভা ফারিন, শামীমা নাজনীন, সাবিহা জামান, মুনমুন আহমেদ সহ আরও অনেকে ।
দৈর্ঘ্য৪১ মিনিট ১১ সেকেন্ড
আবহ সংগীতআপেল মাহমুদ এমিল ।
মুক্তির তারিখ৫ই আগস্ট , ২০২২ ইং
ধরনসামাজিক, ড্রামা
ভাষাবাংলা।
দেশবাংলাদেশ


চরিত্রেঃ


আশিকঃ
খাইরুল বাশার।
তিথিঃ
সাফা কবির ।
বর্নাঃ
তাসনুভা তিশা।





কাহিনী সারসংক্ষেপ


Screenshot_2022-08-13-08-16-20-85.jpg

শুরুতে দেখা যায় পরীক্ষায় লিখছে তিন বন্ধু। আশিক আর তার দুই বান্ধবী। একজনের নাম তিথি। আরেকজনের নাম বর্ণা। দুজন সুন্দরী রমণীর মাঝে আশিক হলো তাদের ভালো বন্ধু। সারাদিনই যারা মজা মাস্তিতে মেতে থাকে। কিন্তু আশিকের একটাই কষ্ট। কোনো মেয়ের সাথে প্রেম করতে পারেনা। তার কারণ অবশ্য তিথি আর বর্ণা। আশিককে কোনো মেয়ের সাথেই প্রেম করতে দেয়না। আশিক অবশ্য একটা মেয়েকে বেশ কিছুদিন ধরে ফলো করে। মেয়েটির নাম শারমিন। এক ব্যাচ জুনিয়র। আশিক একদিন মেয়েটির সাথে দেখা করে। শারমিনকে বলে বাসা পর্যন্ত আগায় দিবে আশিক। ঠিক তখন আশিকের ফোনে ফোন আসে। বর্ণা ফোন দিয়ে বলে তিথি মাথা ঘুরিয়ে পরে গেছে। আশিক শারমিনকে কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে আসে। আশিক বর্ণাকে ফোন দেয় কিন্তু ফোন তখন বন্ধ। আশিক খুব চিন্তায় পরে যায়। এদিকে বর্ণা আর তিথি দুজন মিলে শারমিনকে তাদের কাছে ডেকে আনে। এসে শারমিনকে বলে যে আশিকের সাথে তার কি সম্পর্ক? শারমিন প্রথমে চিনতে পারেনি কোন ছেলের কথা বললো। তারপর বর্ণা বলে যে আশিকের কথা বলছে। শারমিনকে বলে আশিকের বাচ্চা আছে। গ্রামে রুখসানা নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। শহরে এসে সে এখন মেয়েদের মন নিয়ে খেলা করছে। শারমিন এটা শুনে অবাক হয়ে যায়। ভুলভাল বুঝিয়ে শারমিনকে বলে যেন আশিকের সাথে যেন আর কথা না বলে।

Screenshot_2022-08-13-08-18-01-67.jpg

সন্ধ্যায় আশিকের সাথে দেখা হয় বর্ণা আর তিথির। আশিক তিথিকে দেখে অবাক। কিছুক্ষণ আগেই বলছিল তিথি মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেছে। এখন সে সুস্থ্য। বেশ কিছু রেসিপির কথা বলে খাওয়াতে আশিককে। আশিক তখন বাসায় কাজ আছে বলে সেখান থেকে চলে আসে। আশিক তার পরদিন ক্যাম্পাসে এসে প্লেন করে। লিমন ভাইয়ের কাছে আশিক গিয়ে বলে যে বর্ণা তার কথা বলে সবসময়। লাল শার্টে লিমন ভাইকে নাকি সুন্দর দেখায়। এটা শুনে তো লিমম ভাই খুব খুশি। আশিক সকাল থেকে কিছু খাইনি। লিমন ভাইকে বলে সকাল থেকে খাওয়া হয়নি এজন্য পেটে গ্যাস হচ্ছে। লিমন ভাই তখন আশিককে নিয়ে যায় খাওয়াতে। আশিক বলে লিমন ভাইকে যেন লাল শার্ট পড়ে দেখা করে বর্ণার সাথে। এদিকে আশিক আবার কিছুক্ষণ পর তমাল ভাইয়ের কাছে যায়। তমাল ভাইকে গিয়ে বলে যে তিথি নাকি সবসময় তার কথা বলে। তমাল ভাইকে নাকি লাল শার্ট পড়ে অনেক হ্যন্ডসাম লাগবে। এটা শুনে তমাল ভাই খুব খুশি হয়ে যায়। আশিক তখন তমাল ভাইকে বলে যে একটা ঘড়ি লাগবে। তমাল ভাইও তাকে ঘড়ি কিনে দিতে রাজি হয়। পরদিন যখন তিথি আর বর্ণা কলেজে আসে তখন লাল শার্ট পড়ে লিমন ভাই আর তমাল ভাই সামনে আসে। এটা দেখেই বুঝতে পারে এটা নিশ্চয় আশিকের কারসাজি।

Screenshot_2022-08-13-08-21-05-82.jpg

এদিকে ভার্সিটি কিছুদিনের জন্য বন্ধ দেয়। তিনজন মিলে তিথির বাসায় বেড়াতে যায়। বেড়াতে গিয়ে পড়ে যায় বিপদে। তিথির মা তিথির বিয়ে ঠিক করেছে। আজ তিথিকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে। কিন্তু তিথির বিয়েতে কোনো মত নেই। আশি চায় তিথির বিয়েটা হয়ে যাক। বর্ণার মাথায় তখন প্লেন আসে। ছেলেপক্ষ যখন দেখতে আসে তখন তিথি আর বর্ণা একইভাবে সাজে। ছেলেপক্ষের মা বাবা দেখেই অবাক হয়ে যায়। বর্ণা তখন বলে বিয়ে করতে হলে তাদের দুজনকে করতে হবে। কারণ তারা দুজন কাউকে ছাড়া কেউ থাকতে পারবেনা। ছেলে পক্ষের মা বাবা এটা কোনো ভাবেই মেনে নিবে না। কিন্তু ছেলে দুই মেয়েকেই বিয়ে করতে রাজি হাহাহা। যাক বিয়েটা ভেঙে গেল।

Screenshot_2022-08-13-08-22-05-45.jpg

বিজি টাইম স্পেন্ড করার জন্য তিথি আর বর্ণা প্লেন করে আশিকের জন্য একটা মেয়ে খুঁজে। মেয়েটির নাম মুনিয়া। অনেকদিন ধরেই তার সাথে কথা হয়। কিন্তু কখনো দেখা হয়নি। মুনিয়া অবশ্য আশিককে ক্যাম্পাসে দেখেছিল। আজ আশিক মুনিয়ার সাথে দেখা করতে যাবে। এমন সময় তিথি ফোন দেয়। আশিক তখন তিথিকে বলে তার পেট খারাপ, বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। তিথিও রাজি হয়, ক্যাম্পাসে না আসতে বলে। আশিক তখন রেস্টুরেন্ট এ যায়। গিয়ে দেখে তিথি আর বর্ণা সেখানে। এতোদিন যে মুনিয়ার সাথে টাইম স্পেন্ড করার জন্য কথা বলেছে এটা আশিক জানতে পারে। কিন্তু তাদের বান্ধবীদের জন্য সারপ্রাইজ আছে। কিছুক্ষণ পরেই ফারিয়া আসে। আর ফারিয়া হলো আশিকের ডিয়ার লাভ। এটা দেখে তিথি আর বর্ণা অবাক হয়ে যায়। একসাথে দুইটা কিভাবে কন্টিনিউ করলো তারা বুঝতে পারলো না। আশিক তখন বলে ফারিয়ার সাথে এখন কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ট করতে এখন চলে যেতে। তিথি আর বর্ণা চলে যাওয়ার পর তারা রেস্টুরেন্ট এ বসে আড্ডা দেয়। আসলে ফারিয়া তার গার্লফ্রেন্ড না। তার কাজিন হয়। আশিক বুঝতে পেরেছিল এমন কিছু একটা হবে। এজন্য ফারিয়াকে আগে থেকেই সবকিছু বলে রাখে।

Screenshot_2022-08-13-08-23-08-66.jpg

তাদের বন্ধুত্বের খুনসুটি ভালোই চলতেছিল। একদিন তিথি আর বর্ণা রেস্টুরেন্ট এ বসে কফি খাচ্ছিল। ঠিক তখন একটি অচেনা লোক তিথিকে দেখে তার ভালো লেগে যায়। তিথি কখন ভার্সিটিতে যায় সব খেয়াল রাখে।। আশিক একদিন তিথিকে তার বাসার দিকে হেটেঁ হেটেঁ যাচ্ছিল। ঠিক এমন সময় একটি ছেলে এসে তিথির ফোন নাম্বার চেয়ে বসে। আশিক তখন ছেলেটিকে বলে ফোন নাম্বার মানে? অচেনা একটা ছেলেকে ফোন দিবে কেন। ছেলেটি সেখান থেকে চলে গিয়ে তার বসকে বলে যে নাম্বার দেয়নি। ছেলেটি ভাবে যে আশিক তিথির বয়ফ্রেন্ড। রাতে আশিককে ফোন দিয়ে বলে যে তার অনেক টেনশন হচ্ছে। কিছু যদি করে বসে। পরদিন সকালে আশিক যখন বাসা থেকে বের হয়ে ভার্সিটির দিকে যাচ্ছিল ঠিক তখন কিছু বখাটে ছেলে এসে আশিককে অনেক মারধর করে। একসম আশিকের অবস্থা আশংকা জনক হয়ে পড়ে। দ্রুত নিয়ে যাওয়া হশ হসপিটালে। তিথি আর বর্ণা হসপিটালে নিয়ে যায় আশিককে। ডাক্তার তখন অপারেশন করতে নিয়ে যায় আশিককে। বনপেপারে সাইন করতে বলে বর্ণাকে আর কিছু টাকা জমা দিতে বলে। অপারেশন শেষ হলে ডাক্তার বলে আশংকা এখনও সংকটাপন্ন। উপরওয়ালার উপর ভরসা করতে বলে। হসপিটালেই দিন পার করতে থাকে বর্ণা ও তিথি। ঠিক দুদিন পরে আশিকে জ্ঞান ফেরে। আর এটা শুনে বর্ণা বর তিথি বেশ খুশি। আর হসপিটালে তিথি আর বর্ণা মিলেই সেবা করতে থাকে। আশিক অনেকটা সুস্থ্য হয়ে যায়। আর সেখানেই নাটকটি সমাপ্ত হয়।


শিক্ষণীয় দিক


নাটকটি আমাদের জন্য শিক্ষণীয় বলায় যায়। বন্ধুত্ব আসলে রক্তের সম্পর্ক নয় তবে কখনো কখনো এটা রক্তের সম্পর্কের চেয়েও আপন হয়। এমন বন্ধু পাওয়া আসলেই ভাগ্যের ব্যাপার। যার এমন বন্ধু সে নিংসন্দেহে ভাগ্যবান লোক। আশিক,তিথি আর বর্ণার বন্ধুত্ব যেন তারই প্রমাণ। বেচেঁ থাকুক বন্ধুত্ব চিরকাল।


ব্যক্তিগত মতামত


ব্যক্তিগতভাবে নাটকটি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। বর্তমান সময়ে প্রেম ভালোবাসা থেকে বেরিয়ে ভিন্ন গল্পের একটি নাটক দেখতে পেলাম। পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান বরাবই নতুন নতুন গল্পের নাটক উপহার দিয়ে যাচ্ছে।

ব্যক্তিগত রেটিং


৯.৫/১০


নাটকটির লিংক


সবগুলো ছবির স্ক্রিনশট এখান থেকে নেয়া


আশা করি নাটকটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। নাটকটি দেখে না থাকলে লিংকে প্রবেশ করে দেখতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ নাটকের রিভিউটি পড়ার জন্য। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।



10% beneficiary for @shyfox❤️



ধন্যবাদ

WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  
 2 years ago 
 2 years ago 

অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আপনি আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন। যদিও এই নাটকটি এর আগে কখনো দেখা হয়নি। তবে আপনার রিভিউ দেখে মনে হচ্ছে দেখা লাগবে। ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন সবসময়।

 2 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া চমৎকার একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য । আপনার জন্য শুভকামনা রইল

 2 years ago 

আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দেওয়ার জন্য।

 2 years ago 

আপনি বরাবরই আমাদের মাঝে নাটক রিভিউ শেয়ার করে থাকেন আপনার নাটকের রিভিউ গুলো আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে আপনার মাধ্যমে আমি অনেকগুলো নাটক প্রায় দেখে ফেলেছি। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে সংক্ষিপ্ত করে নাটকটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনাদের সাথে মাঝে মাঝে নাটক শেয়ার করা হয়। ভালো লাগলো যে আপনি নাটক দেখেন আসলে । ধন্যবাদ ভাই আপনাকে চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য ।

 2 years ago 

নাটক দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে অবসর সময়ে আমি অনেক ধরনের হাসির নাটক দেখি। আজ আপনি ওরা তিনজন নামের যে নাটকটি রিভিউ শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে এটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো সময় করে দেখে নেব।

 2 years ago 

জি আপু নাটকটা দেখলে উপভোগ করতে পারবেন। আপনাকে ধন্যবাদ আপু