আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ ফ্রাইডে স্পেশাল ]

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। রমজানের সিয়ামের সাথে সাথে হৃদয়ের চঞ্চলতা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। কারন আর মাত্র কয়দিন পরই দারুণ উৎসবে মেতে উঠবো সবাই, ঈদের আনন্দে মেতে উঠার নিমিত্তে হয়তো ইতিমধ্যে সবাই শপিং করে ফেলেছেন। আসলে ঈদের আনন্দের চেয়ে শপিং এর আনন্দটাই একটু বেশী হয়ে থাকে। যদিও এখন ঈদের শপিং এর আনন্দটা যতটা না বেশী তার বেশী হয়ে থাকে শপিং সেন্টার এ গিয়ে নানা ঢং করে সেলফি তোলার বিষয়টি, হি হি হি। না না না আমি কাউকে অপমান করার জন্য বলিনি, এতো সাহস সেই আমার।

আসলে সব সত্য কথা সব সময় বলতে নেই, এটা মুরব্বীরা বলেছিলেন। তবে আমি তাদের সাথে একমত হতে পারিনি শুরুতে, শুরুতে বলতে যখন অবিবাহিত ছিলাম। তখন সাহস বোধহয় একটু বেশী ছিলো, হুট করে সব বলে ফেলতে পারতাম। তারপর বিয়ে করা এবং ইতিহাসের পাতায় নতুন এক অধ্যায়ের সংযোজন হওয়া, সব কিছু উলট পালট হয়ে গেছে। এখন আমিও মুরব্বীদের দলে চলে গেছি এবং স্বীকার করে নিয়েছে সব সত্যি কথা সব সময়ে বলতে নেই হি হি হি। যা বলছিলাম, নানা রকম স্টাইলে যেভাবে শপিং সেন্টারগুলোতে সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায়, তাতে মনে হয় না কেউ শুধুমাত্র শপিং করার জন্য সেখানে গিয়েছেন।

person-5375746_1280.jpg

শুধুই কি সেলফি তুলেই সবাই ক্ষান্ত হয়? একদম না, এরপর কালবৈশাখীর দারুণ এক ঝুড় উঠে ফেবু ভাইয়ের পাতায় হি হি হি। কে কত সুন্দর না থুক্কু ঢং করে সেলফি তুলেছে আর কে কত দামী পোষাক নিয়ে বাড়িতে ফিরেছে, ঈদ এর আগ পর্যন্ত চলতে থাকে তার প্রতিযোগিতা। পরিচিতজনদের মাঝ হতে কে কে রিএ্যাক্ট করেছে আর কোন কোন ভাবি মন্তব্য করেছেন সেটা নিয়েও বাড়িতে বসে যায় হট টকশো, এই হলো আমাদের আধুনিক আর উন্নত মানসিকতার ঈদ শপিং কালচার। কিন্তু আদতে কি আমরা এমনটা ছিলাম? আমাদের অতীত ঈদ শপিংগুলো কি এমন ছিলো?

না, একদমই আমাদের অতীত ঈদ শপিংগুলো এমন ছিলো না, সেখানে ছিলো মানবতা এবং সাধ্যের ভিতর পরিবারের জন্য কিছু করার চেষ্টা। কোন শপিং সেন্টার হতে কেনাকাটা করা হলো? কোন পোষাকটা কত টাকা নিলো? কোন শপিং সেন্টার এ গিয়ে সেলফি তুলেছি? এসবের কোন বালাই ছিলো না। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়ি কর্তা নিজের সময় ও সুযোগ মতো সেগুলো করে ফেলতেন। বাড়ির লক্ষী বউরা সেটা নিয়েই যেমন খুশি থাকতেন, ঠিক তেমনি বাড়ির ছেলে-মেয়েরাও সেটাকে সানন্দ চিত্তে গ্রহণ করতেন। আমি কোন দিনও বাবাকে জিজ্ঞেস করিনি পোষাক কোথা হতে কিনে আনা হয়েছে কিংবা কত টাকা নিয়েছে।

কারণ তখন আমাদের মাঝে ভালোবাসা ছিলো এবং ঈদ এর প্রকৃত আনন্দ ছিলো। আমরা নতুন জামা পেলেই খুশি হয়ে যেতাম আর নতুন জামা মানেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করার দারুণ সুযোগ। তখন আমাদের একটাই চাওয়া ছিলো আর সেটা ছিলো ঈদে নতুন জামা চাই। আমাদের ভাবনাগুলো ছিলো এমন, নতুন জামা ছাড়া ঈদ উদযাপন হয় নাকি? সময়ের সাথে সাথে আজ পাল্টে গেছে সব, শুধু নতুন জামা নয় বরং সেলফি ছাড়া শপিং হয় না আর ফেুবতে ঝড় তোলা ছাড়া ঈদ উদযাপন হয় না।

Image Taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

কথা গুলো মিথ্যা বলেননি।আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন মা-বাবার দেয়া নতুন পোশাক পেয়েই খুশী হয়ে যেতাম।আর এখন চলে দামের বাহার।কে কতো টাকা দামের পোশাক,জুতা কিনেছে তার শোঅফ করা ছাড়া আর কিছুই মনে হয়না তাদের।এরা দামের উপরেই চলে।তাইতো সত্যিকারের ঈদ আনন্দ থেকে এরা বঞ্চিত হয়।আর গরীব-দুঃখীদের হকের কথা আর নাই বা বললাম।অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 2 months ago 

ধুর আমি কি মিথ্যা বলতে পারি নাকি হি হি হি। আমাদের সময়টায় প্রকৃত আনন্দ ছিলো এখন সেটা একদমই নেই ।