হার্টে ফুটো থাকা এক রুগিনীর গল্প

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago
হ্যালো! আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভাল আছেন। আমার পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। হাজির হলাম চেম্বার কথনের আরেকটা পোস্ট নিয়ে। আজকে আমরা শুনব হার্টে ফুটো নিয়ে জীবন কাটানো এক রুগিনীর গল্প। মুল গল্পটা ছোট। মুল গল্পে যাওয়ার আগে চলুন প্রানীবিজ্ঞানের কিছু জ্ঞান আবার ঝালাই করে নেই।

steem.jpg

আমাদের হার্টের প্রকোষ্ঠ চারটা। এট্রিয়াম ২ টা এবং ভেন্ট্রিকল দুইটা। দুইটা এট্রিয়ামের মাঝে থাকে একটা পর্দা। একই ভাবে দুইটা ভেন্ট্রিকলের মাঝেও থাকে আরেকটা পর্দা। মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় এট্রিয়ামদ্বয়ের মধ্যবর্তী পর্দায় একটি ছিদ্র থাকে। ঐ ছিদ্রটা ঐ সময় থাকাটাই আবশ্যকীয়। জন্মের পরে স্বাভাবিক ভাবেই এই পর্দা বন্ধ হয়ে যায়। সেটা বন্ধ না হলেই সমস্যা শুরু হয়। ভেন্ট্রিকলদ্বয়ের মধ্যবর্তী পর্দাতে কখনই ছিদ্র থাকে না। ওখানে কোন ছিদ্র থাকা মানেই সমস্যা; সেটা জন্মের আগেই হোক বা পরে।

পর্দায় থাকে এই ছিদ্র এর সাইজ এবং লোকেশান অনুযায়ী বাচ্ছার লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে জন্মের পর। কিছু ক্ষেত্রে ছোট ছিদ্র নিয়ে অনেকেই এডাল্ট লাইফেও পদার্পণ করে। কিছু সীমাবদ্ধতা নিয়ে তাদের চলতে হয়। বর্তমান সময়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগুলো যথার্ত চিকিৎসা আছে। অপারেশান এর মাধ্যমে এই ছিদ্র বন্ধ করা যায়। কিন্তু অনেকেই অবহেলা করে এটাকে বিলম্বিত করে। আজকের মুল গল্পের রুগিনীও সেরকমই একজন।

উনার বয়স ছিল ৩১ বছর। দুই সন্তানের মা অলরেডি। আমার কাছে এসেছিলেন দীর্ঘদিনের জ্বর নিয়ে। কথা প্রসংগে জানতে পারলাম হার্টের জন্যে একটা ওষুধ খান লম্বা সময় ধরে। কি ওষুধ? ইন্ডেভার ১০। উনারা ঠিকমত বলতে পারছিলেন না কি সমস্যা হার্টে। বুকে স্টেথসকোপ লাগিয়ে বুঝলাম যে অস্বাভাবিক একটা শব্দ পাওয়া যাচ্ছে যেটা হার্টে কোন ফুটো থাকলে সাধারনত পাওয়া যায়। পরে উনারা বললেন যে হার্টের ডাক্তাররা অনেক আগেই অপারেশান করতে বলেছিলেন। উনার রাজি হন নাই।

পালস অক্সিমিটার দিয়ে দেখা গেল যে উনার রক্তের অক্সিজেন এর মাত্রা কম। ৮৮-৯০%। কারণ হচ্ছে উনার হার্টে এসে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড যুক্ত রক্তের সাথে মিশ্রিত হয়ে যাচ্ছে। এজন্যে শরীরের সমস্ত কোষ এবং টিস্যু সার্বক্ষনিক কম অক্সিজেন সাপ্লাই পাচ্ছে। উনার স্বামী জানালেন যে, রুগিনীর একটু বেশী শারীরিক পরিশ্রম করলেই হাপিয়ে উঠেন। কাজ করতে পারেন না। কারণ, ভারী কাজ করার সময় শরীরে অক্সিজেন এর ডিমান্ড বেড়ে যায়। উনার শরীর কাংখিত অক্সিজেন পায় না বিধায় হাপিয়ে ওঠেন।

হার্টের অপারেশান টা করে ফেলার তাগাদা দিয়ে এবং জ্বরের চিকিতসা দিয়ে বিদায় করলাম উনাদের। আশা করি উনার সঠিক সিদ্ধান্তই নিবেন।

আজকে এ পর্যন্তই। কেমন লাগলো আজকে লেখাটি তা অবশ্যই জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে। ভাল থাকুন সবাই।

ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা নিরন্তর
ডা হাফিজ
Discord: hafiz34#3722
X: @hafiz2k21
ওমান
২৭ই নভেম্বর, ২০২৪

Sort:  
 4 days ago 

অবশ্য করনীয় কাজের প্রুফঃ

CMC

cmc.jpg

X

x.jpg

DEX

dex.jpg