শৈশবের স্মৃতিতে: "ছানার জিলিপি"

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago

নমস্কার

কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।যাইহোক আজ চলে আসলাম আমি @green015 যথা নিয়মে আপনাদের মাঝে নতুন একটি শৈশবের গল্প শেয়ার করতে।

শৈশবের স্মৃতিতে: "ছানার জিলিপি"

IMG_20250215_020657.jpg
(কোলাজমেকার দিয়ে তৈরি)

আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।আবার কিছু মিষ্টি স্মৃতি ফিরে পেতে চাই বারেবারে।কিন্তু সেটা ফিরে পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে আর সেটার স্থান শুধুই স্মৃতির পাতাতেই হয়ে থাকে।তেমনি একটি শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট গল্পখানি।তো চলুন শুরু করা যাক--

সপ্তাহে একদিন হাট বার।সেটাও আবার মঙ্গলবার,গ্রামের মধ্যে ঐটুকুই যেটা শহরে নিয়মে বাঁধা।তাছাড়া এ সে যেমন -তেমন হাট নয়,একেবারেই দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ী, মহাজন সবাই অংশ নিতে আসে এই বাজারে।বাজারটি এই একদিন এতটাই জমজমাট হয়ে থাকে যে বহুদূরের গ্রামের মানুষও সেখানে বাজার করতে আসে আবার কিছু বিক্রির প্রয়োজন হলে ওই একটি দিনেরও অপেক্ষা করে।এই দিনটি যেন বহু গ্রামের মানুষের এক মিলনমেলাও বলা চলে।সেসময়ে দূরের মানুষগুলো ভ্যান কিংবা নৌকায় করে যাতায়াত করতো, সবাই সবার নিকট আত্মীয়ের খোঁজ নিতো।যদিও বর্তমানে বাজারের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে বাজার বসেছে।ফলে সেই বাজারের মান অনেকাংশে কমে গিয়েছে।যেটা কিনা একসময় মানুষের যোগাযোগ কিংবা যুগলের এক অন্যতম স্থান ছিল।।

যাইহোক এই বাজারেই বসতি দোকান ছিল আমার বাবার।গামছা ও লুঙ্গির ব্যবসা, যেহেতু এখানে বড় বড় ব্যবসায়ী ও মহাজন বাইরে থেকে আসতো তাই বাবা এখান থেকেও পাইকারি দরে মাল কিনে খুচরো বিক্রি করতেন।আবার কোনো নির্দিষ্ট সময়ে বাইরে থেকে মাল কিনে এনেও বিক্রি করতেন।তাই বাইরের ওইসব মানুষ আমার বাবার বেশ পরিচিত আর তারা সবাই আমার বাবাকে খুবই ভালোবাসেন।

আমার বাবা সকালে গিয়েই আগে ফ্রেশ সবজি বাজার করে রেখে দিতেন।সকালে দাম বেশি দিয়ে হলেও বেশ টাটকা সবজি কিনতেই তিনি বেশি পছন্দ করতেন, তার উপরে দোকানের মাঝে সময় পাওয়া খুবই মুশকিল যে।যাইহোক সেই বাজারের ব্যাগ ছোটবেলায় যখনই আমার মা কিংবা দাদা আনতে যেতেন আমিও যেতাম তাদের সঙ্গে মাঝে মাঝেই।আর গিয়ে বাবার দোকানে বসতেই আশেপাশের সবাই আমাকে বেশ যত্ন করতো।তো ওই সময়ে এক কাকু ছিলেন যে কিনা সুপুরির ব্যবসা করতে আসতেন বাইরে থেকে।কিন্তু তিনি আমার বাবাকে খুবই পছন্দ করতেন,যখনই আমি যেতাম আমাদের দোকানে।ওই কাকুটি রীতিমতো আমাকে পাথরকোলা করে তুলে নিয়ে বসিয়ে দিতেন দূরে থাকা মিষ্টির দোকানে।তারপর ছানার জিলিপি খাইয়ে তবেই আবার কোলে নিয়ে পৌঁছে দিতেন বাবার দোকানে।এতটাই স্নেহ করতেন, যেটা এখন বড় হয়ে বেশ মিস করি।

ইচ্ছে করে বার বার সেই শৈশবে ফিরে যাই কিন্তু সেটা কবেই হারিয়ে ফেলেছি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে---😢.মনে হয় যেন এইতো সেদিন,,চোখের সামনে জ্বল জ্বল করছে দিনগুলো।তাছাড়া আমরা এখন অনেকটাই দূরে চলে এসেছি, এতটাই দূরত্বে যে সময়-যোগাযোগ-পথ-বয়স-কাজ সবকিছুই পাল্টে গিয়েছে।পরিচিত মুখগুলো বড্ড বেশি অপরিচিতদের তালিকায় যেন ভেসে উঠেছে,শুধু স্মৃতিটুকুই বেঁচে রয়েছে হৃদয়তটে।।


আশা করি আমার আজকের লেখা শৈশবের গল্পটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি বর্ধমান ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি,ইতিহাস বিষয় নিয়ে।বর্তমানে আমি ওখানেই অধ্যয়নরত আছি।এখানে বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।এছাড়া আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।

Sort:  
 3 days ago 

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 days ago 

টাস্ক প্রুফ:

GridArt_20250215_055340178.jpg

 6 days ago 

শৈশবের স্মৃতিগুলো বড়ই মধুময় আর শৈশবে হারিয়ে যেতে সবারই ইচ্ছে করে । কতনা মধুর স্মৃতি আমাদের জীবনে জড়িয়ে আছে। সময় বয়স কাল সবকিছুই পাল্টে গেছে আমাদের। ছোটবেলার ভালোবাসা গুলো সেই সময় বোঝা যেত না এখন বড় হয়ে সেই ভালোবাসা গুলো আমরা বুঝতে পারি কতটা ভালোবাসা ছিল।শৈশবের স্মৃতির পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপু।

 6 days ago 

ঠিক বলেছেন আপু, বড় হলেই আমরা অনুভব করতে পারি।ধন্যবাদ আপনাকে ও।

 5 days ago 

শৈশবের স্মৃতি ভোলা মুসকিল। মেসোমশাই দোকান করতেন এবং সকাল সকাল টাটকা সবজি কিনে রাখতেন জেনে ভালো লাগলো।কাকুটি আপনাকে প্রচন্ড ভালোবাসতেন আর সেজন্য কোলে করে মিষ্টির দোকানে নিয়ে গিয়ে তারপর দোকানে পৌছে দিতেন কি মিষ্টি শৈশবের স্মৃতিচারণ করেছেন দিদি বেশ ভালো লাগলো স্মৃতিচারণ মূলক পোস্ট টি।

 5 days ago 

হ্যাঁ দিদি,আমার বাবা টানা 24 বছর এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নিজস্ব বসতি দোকান ছিল আমাদের।