গল্প: "কলঙ্কিনি রুবী"
নমস্কার
কলঙ্কিনি রুবী:
গ্রামের এক বাড়ির ছোট্ট কোণে রুবীদের বসতি।রুবীর বাবা খুবই গরিব তাই নিজস্ব ভিটেমাটি নেই।একজন তার বাড়িতে থাকার জন্য ঠাঁই দিয়েছে,তো কোনরকমে ঘর বেঁধে সেখানেই আস্তানা গেড়েছে রুবীর পরিবার।রুবীর বাবা ও মা বেশ অসুস্থ তা সত্ত্বেও তারা সংসার চালায়।রুবীরা ছিল দুই বোন ও একটি ভাই।ভাই বিয়ে করে বউ -বাচ্চা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতেই থাকে,মাঝে মাঝেই এখানেও আসে।রুবীর দিদি বিয়ে না করেই নাট্যদলে যোগ দিয়েছে।অর্থাৎ নাটক কিংবা যাত্রারদলেই তিনি তার সময় অতিবাহিত করতে চান।
ওই গ্রামের মানুষের সবথেকে বড় জীবিকার স্থান হচ্ছে নদী।রুবীর বাবা ও মা দিনরাত তাই নদীতেই পরে থাকতো সংসার চালানোর আশায়।গ্রামের শেষ দিকে বড় বাড়ির ছেলে বাবু।বাবুর সঙ্গে এই রুবীর বেশ ভাব জমে,রুবি কিন্তু দেখতে অনেকটাই নাইজেরিয়ান মেয়েদের মতোই।আর বাবু ফর্সা ও সুন্দর দেখতে।কিন্তু তাদের ঘনিষ্ঠতা এতটাই বাড়তে থাকে যে,রুবী অবিবাহিত অবস্থায় গর্ভবতী হয়ে যায়।কিন্তু বাবু বড় ঘরের ছেলে তাই তারা কিছু বলতেও পারছে না।রুবীর গাঁয়ে এখন বড় কলঙ্কের দাগ লেগেছে।
অন্যদিকে রুবীর দাদার একটি মাত্র শালা ছিল, রুবী সম্পন্ন দায় সেই সরল ছেলের উপর চাপায়।তখন সমাজ তাদের বিয়ে দিয়ে দেয়, রুবীর কলঙ্ক ঘুচে যায়। যাইহোক এভাবে দিন যেতে থাকে,তারপর একদিন রুবী জমজ মেয়ে সন্তান প্রসব করে।জন্মের কয়েকদিন পর তার একটি মেয়ে মারা যায়।লোকমুখে জানা যায়,, অভাবের সংসারে একটি বাচ্চাকে নাকি নুন খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।অন্য বাচ্চাটিও তাই বেশ অসুস্থ থাকে, তা সত্ত্বেও ধীরে ধীরে সে বেড়ে উঠতে থাকে।রুবী কিন্তু তার বাপের বাড়িতেই থাকে সবসময়, রুবীর মেয়ে পূজা সমাজের সকলের সঙ্গেই বড় হতে লাগলো।
একসময় রুবীর বাবা-মা চিন্তা করলেন তারা স্থান পরিবর্তন করে অন্য স্থানে যাবেন।রুবীদের কিছু পোষ্য প্রাণী ছিল সেগুলো বিক্রি করে এবং খুবই কম দামে তারা তাদের ঘরের জিনিস বিক্রি করে পাড়ি দিলেন অন্য স্থানে।কিছুদিন কাটানোর পর আর ঘোরাঘুরি করার পর রুবীর বাবার জমানো টাকা শেষ হয়ে যায়।তখন রুবীর বাবা, মা ও তার মেয়ে পূজা ফিরে আসে সেই আগের জায়গাতে।কিন্তু এইবার সেই লোক তার বাড়ির উপর আর থাকতে দেয়নি রুবীর বাবা-মাকে।তাই নদীর কিনারায় কোনোরকম ঘর বেঁধে তারা থাকতে লাগলো।
অন্যদিকে রুবী সেই স্থানে থেকে অন্যের বাড়ি কাজ খুঁজে নেয়।এভাবে রুবী যে টাকা পেত তার থেকে কিছু টাকা তার মেয়ের জন্য পাঠিয়ে দিতো বাড়িতে।তারপর রুবী একদিন হঠাৎ বিয়ে করে একটি ছেলেকে।ছেলেটি একা ভাই ,নিজস্ব বাড়িঘর রয়েছে।এইবারও কিন্তু রুবী বেশ ভালো একটি কমবয়সী ফর্সা ছেলেকে পটিয়ে নিয়ে বিয়ে করলো।এখানেও তার একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নিলো।ছেলেটি একটু বোকা টাইপের,তবে বেশ পরিশ্রমি।রোজ কাজ করে,তাই এখন পুরো সংসারটি রুবীর দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে।এভাবেই কলঙ্কিনি রুবী নতুন জায়গায়, নতুন জীবন শুরু করলো।।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | গল্প |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।
টাস্ক প্রুফ:
0.00 SBD,
0.00 STEEM,
0.00 SP
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুব সুন্দর ভাবে আপনি আজকের এই গল্পটা লিখেছেন। আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো দিদি, আপনার লেখা আজকের গল্পটা পড়তে। নতুন জায়গায় এসে রুবী নতুন করে জীবন শুরু করেছে এটা দেখে ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ জানাই দিদি, গল্পটা এত সুন্দর করে লিখে সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলে এটা বাস্তবধর্মী একটি গল্প আপু,তাই এতটা ভালো লেগেছে আপনার।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার লেখা কলঙ্কিনী রুবী কবিতাটা অনেক সুন্দর হয়েছে। আর আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে পুরো গল্পটা পড়তে। অবশেষে দেখলাম রুবী নিজের নতুন জীবন শুরু করেছে নতুন জায়গাতে গিয়ে । আর তার দ্বারা তার সংসার পরিচালিত হচ্ছে জেনে ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এটা সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য।
কবিতা কোথায় পেলেন ভাইয়া!!!